আগরতলা, ২৮ আগস্ট : সারা দেশে বিদ্যুৎ খাতে বিপুল ক্ষতি হচ্ছে। তাঁর প্রভাব ত্রিপুরাতেও পড়ছে। লোকসভায় সাংসদ বিপ্লব কুমার দেবের উত্থাপিত তারকাচিহ্ন বিহীন প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী শ্রীপাদ নায়েক দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও বন্টন সংক্রান্ত পরিসংখ্যান জানিয়েছেন। তিনি জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহে ৩.৫৫ শতাংশ এবং বণ্টনে ১৩.০৯ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বিদ্যুৎ একটি সমমনা বিষয়। সেই কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও বন্টনের দায়িত্ব মূলত সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার ও তাদের বিদ্যুৎ সংস্থার উপর ন্যস্ত। তিনি জানান, ভারত সরকার ২০২১ সালের জুলাই মাসে পুনর্গঠিত বিদ্যুৎ বিতরণ খাত প্রকল্প (আরডিএসএস) চালু করেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলিকে আর্থিক স্থিতিশীলতা ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পে ২.৮২ লক্ষ কোটি টাকার পরিকাঠামো উন্নয়নমূলক কাজ, বিশেষ করে স্মার্ট মিটার বসানো এবং বন্টন পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, ত্রিপুরা রাজ্যের ক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য ৫৯৮ কোটি টাকার কাজ অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া, স্মার্ট মিটার সংক্রান্ত ৩১৯ কোটি টাকার কাজ অনুমোদিত হয়েছে। তবে সার্বিক অগ্রগতির তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসকরণ প্রকল্পে অগ্রগতি মাত্র -৩০ শতাংশ এবং স্মার্ট মিটার প্রকল্পে -১১.৪ শতাংশ। অথচ ত্রিপুরায় ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসকরণ প্রকল্পে অগ্রগতি -৪৯ শতাংশ এবং স্মার্ট মিটার প্রকল্পে -২০ শতাংশ। প্রতিমন্ত্রীর মতে, এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে রাজ্যগুলির বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে দক্ষতা বৃদ্ধি হবে।
এই তথ্যের ভিত্তিতে বোঝা যাচ্ছে, বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় এখনো উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে, বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সমন্বয় এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি আনাই এখন সময়ের দাবি। এই পরিসংখ্যান থেকে আরও বোঝা যাচ্ছে ত্রিপুরায় বিদ্যুৎ বন্টন ব্যবস্থার আধুনিকীকরণে বড়সড় ব্যর্থতা দেখা দিয়েছে। ফলে, বিদ্যুৎ ক্ষতি কমানোর লক্ষ্যে ত্রিপুরা বিদ্যুৎ নিগম রাজ্যে বিদ্যুতের মাশুল বৃদ্ধি করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তাতে গ্রাহকদের উপর বাড়তি আর্থিক চাপ ফেলছে।

