আগরতলা, ২৪ জুলাই: স্মার্ট মিটার তথ্য প্রযুক্তি নির্ভরশীল একটি মিটার। এই মিটার নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। বর্ধিত বিদ্যুৎ বিলের সঙ্গে স্মার্ট মিটারের কোন সংযোগ নেই। স্মার্ট মিটার ব্যবহারের ফলে ভোক্তারা সঠিক সময়ে তাদের বিদ্যুতের ব্যবহার সম্পর্কে অবগত থাকতে পারবেন। যার ফলে অনেকাংশেই লাভবান হবেন গ্রাহকরা। আজ সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই দাবি করলেন বিদ্যুৎ নিগমের অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলীরা।
আজ আগরতলা প্রেসক্লাবে স্মার্ট মিটারের বিভিন্ন দিক নিয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মিলিত হয়েছেন বিদ্যুৎ নিগমের অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলীরা। তারা বলেন, গোটা রাজ্যে স্মার্ট মিটার নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। তাই সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে তারা এই বিভ্রান্তি দূর করতে স্মার্ট মিটারের বিভিন্ন দিক জনসমক্ষে তুলে ধরার জন্য চেষ্টা করছেন।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে প্রাক্তন প্রকৌশলীরা বলেন, স্মার্ট মিটার একটি প্রকৃত তথ্য প্রযুক্তির সম্পন্ন মিটার। এই মিটার নিয়ে কোন দুশ্চিন্তার কারণ নেই। কেননা এটি সঠিক সময়ে বিদ্যুতের ব্যবহার সম্পর্কে গ্রাহক এবং নিগম উভয়কে সচেতন করতে পারে। বর্তমান কিছুদিন ধরে স্মার্ট মিটার লাগানোর ফলে অধিক বিল আসার বিষয়ে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে তার পেছনে অন্য কারণ রয়েছে। মূলত ফুয়েল এন্ড পাওয়ার পারচেস কস্ট এডজাস্টমেন্ট (এফপিপিসিএ) এবং স্যান্ড্রি এই দুটি যোগ হয়ে যে বিদ্যুৎ বিলটি আসছে সেটি বর্ধিত বলে মনে হচ্ছে। এফটিপিসিএ অর্থাৎ ফুয়েল কস্ট বিদ্যুৎ নিগম নির্ধারণ করে না। ত্রিপুরা ইলেকট্রিসিটি রেগুলেটরি কমিশনটি এটি নির্ধারণ করে, যা নিগমকে মানতে হয়। অর্থাৎ এফপিপিসিএ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নিগমের কোন হাত নেই।
তিনি আরো বলেন, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে রাজ্যে ধাপে ধাপে স্মার্ট মিটার লাগানো শুরু হয়েছে। কিন্তু তখন থেকে কোন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়নি। কিন্তু বর্তমান জুলাই মাসে বিলটি বর্ধিত আসায় সাধারণ জনগণ বিভ্রান্তির সম্মুখীন হচ্ছেন। তারা মনে করছেন স্মার্ট মিটারের জন্যই এই বিল বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু স্মার্ট মিটারের সঙ্গে এই বর্ধিত বিদ্যুৎ বিলের কোন সংযোগ নেই। কেননা গত দুই মাসের এরিয়ার চার্জ স্যান্ড্রি এবং এফপিপিসিএ চার্জ মিলে জুলাই মাসের বিল কিছুটা বর্ধিত এসেছে। যার ফলে এই বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু এর সঙ্গে স্মার্ট মিটারের কোন সংযোগ নেই। আগের মিটারে যে বিদ্যুতের রিডিং দেখা যেত একই রকম রিডিং স্মার্টমিটারেও আসছে। তাই স্মার্ট মিটার একটি নিরাপদ তথ্য প্রযুক্তি সম্পন্ন উন্নত মিটার। এর বিরুদ্ধে জনসমক্ষে সচেতনতা গড়ে তোলা একান্তই প্রয়োজন বলে দাবি করেন প্রাক্তন প্রকৌশলীগন।
তারা আরো জানান, রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিলের অভিযোগ মেলেছে। এর পেছনে স্মার্ট মিটার দায়ী নয়, অন্য কোন কারণ রয়েছে। তাদের দাবি, যে সকল বিদ্যুৎ নিগমের কর্মীরা এই রিডিং সংগ্রহ করেছেন তারা কোন ভুল করে রিডিং তুলে নিয়ে গেছেন। যার ফলে বিদ্যুৎ বিলে বড় অংকের বিল এসেছে। এর জন্য স্থানীয় বিদ্যুৎ দপ্তরে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানানো হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেছেন তারা।
প্রাক্তন প্রকৌশলীদের দাবি, বিদ্যুৎ পরিষেবার উন্নতিকরণে স্মার্ট মিটার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সময়ের সাথে সাথে তথ্যপ্রযুক্তির সাথে নির্ভর করে গ্রাহক এবং নিগম উভয়ের সুবিধার্থে এই স্মার্ট মিটারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। স্মার্ট মিটার লাগানোর ফলে গ্রাহকরা তাদের বিদ্যুৎ খরচ সম্পর্কে প্রতিনিয়ত অবগত থাকতে পারবেন। পাশাপাশি কোন বিদ্যুৎ কর্মীর ভুলের কারণে বর্ধিত বিদ্যুৎ বিল আসার কোন সুযোগ থাকবে না।একই সময়ে ব্যবহারকৃত বিদ্যুৎ বিল গ্রাহক এবং নিগম উভয়ে লক্ষ্য করতে পারবেন। এছাড়াও কোন বিদ্যুৎ বিভ্রাট সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিলে নিগম অবগত হতে পারবেন। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই পরিষেবা পাওয়ার সুযোগ অনেকাংশে বেড়ে যাবে। তাই স্মার্ট মিটার ব্যবহারের জন্য সকল নাগরিককে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রাক্তন প্রকৌশলীগণ। এই মিটার ব্যবহারের ফলে বিদ্যুৎ পরিষেবা আরো স্বচ্ছ হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তারা।
উল্লেখ্য এদিন অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুজিত বিশ্বাস, দিলীপ দাস, দেবব্রত লস্কর, সুদীপ কর সহ অন্যান্যরা।

