আগরতলা, ১৫ জুলাই : জাতীর জন্য মধ্যস্ততা ৯০ দিনের বিশেষ প্রচার অভিযানের সূচনা হয়েছে। এই অভিযান ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। সুপ্রিম কোর্ট ও জাতীয় আইনসেবা কর্তৃপক্ষের এগজিকিউটিভ চেয়ারম্যান এবং মিডিয়েশন অ্যান্ড কনসিলিয়েশন প্রজেক্ট কমিটি (এমসিপিসি)র চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় এই প্রচার অভিযান শুরু হয়েছে। আজ সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানিয়েছেন রাজ্য আইনসেবা কর্তৃপক্ষ।
এদিন কর্তৃপক্ষ বলেন, বিশেষ এই প্রচার অভিযান দেশের অন্য রাজ্যগুলির সঙ্গে ত্রিপুরায়ও গত ১ জুলাই থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। বিশেষ অভিযানের অঙ্গ হিসেবে রাজ্য আইনসেবা কর্তৃপক্ষ সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট বিলি করছে। এছাড়া বিভিন্ন আইনি সচেতনতা কর্মসূচীর মাধ্যমে সাধারন নাগরিকদের মিডিয়েশন প্রসঙ্গে জানানো হচ্ছে।
বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির একটি স্বীকৃত পদ্ধতি হচ্ছে মধ্যস্থতা। কোনও বিরোধ-এর উভয়পক্ষদের তাদের পছন্দের মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে নিষ্পত্তির জন্য একই টেবিলে নিয়ে আসে। রাজ্যে প্রত্যেক জেলায় একটি করে মিডিয়েশন সেন্টার এবং ত্রিপুরা হাইকোর্ট সহ মোট ৯টি মিডিয়েশন সেন্টার রয়েছে। মিডিয়েশন অ্যান্ড কনসিলিয়েশন প্রজেক্ট কমিটি (এমসিপিসি) সহযোগিতায় ত্রিপুরা রাজ্য আইনসেবা কর্তৃপক্ষ বিচারক এবং আইনজীবী ছাড়াও আমাদের সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিদের মিডিয়েশন বা মধ্যস্থতার প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
এদিন তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠী, অবসরপ্রাপ্ত আমলা, সমাজকর্মী, তৃতীয় লিঙ্গ, সম্প্রদায়ের নেতা, শিক্ষক, চিকিৎসা পেশাদার, সাংবাদিক, ব্যবসায়িক সহযোগী, আশা এবং অঙ্গনওয়ারী কর্মী ইত্যাদির অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
জাতীর জন্য মধ্যস্থতা’ বিশেষ মধ্যস্থতা অভিযানে যে সব মামলা নিষ্পত্তির জন্য মাধ্যস্ততাকারীদের কাছে পাঠানো হচ্ছে। সেগুলো হল, দাম্পত্য সংক্রান্ত বিরোধ, দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ দাবী, গার্হস্থ্য হিংসতা সংক্রান্ত মামলা, চেক ডিজঅনার/বাউন্স, বাণিজ্যিক বিরোধ, চাকরি সংক্রান্ত বিষয়, অপরাধমূলক আপোষযোগ্য মামলা, ভোক্তা সংক্রান্ত বিরোধ, ঋণ আদায়, সম্পত্তি বিভাজন, উচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলা, ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত মামলা এবং অন্যান্য উপযুক্ত দেওয়ানি মামলা।
তাছাড়া, বিশেষ অভিযানের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি হল যে মধ্যস্ততাকারী ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তারাই কেবল মধ্যস্ততা করবেন, সপ্তাহের সাতদিনের মধ্যে মামলায় পক্ষ-বিপক্ষের সুবিধা অনুযায়ী তারিখ দেওয়া হবে। কোনও পক্ষ অনলাইনে হাজির হতে চাইলে তারও সুবিধা থাকবে। মধ্যস্ততা অফলাইন বা অনলাইন বা হাইব্রিড পদ্ধতিতে হতে পারে। বিশেষ অভিযানে রাজ্যের বিভিন্ন আদালতগুলি থেকে গত ৯ জুলাই পর্যন্ত পশ্চিম ত্রিপুরায় ৯৪ টি মামলা, উনকোটি জেলায় ৬৮ মামলা, উত্তর ত্রিপুরায় ১৮ টি মামলা, গোমতী জেলায় ১৯৩ মামলা, খোয়াই জেলায় ৬৮ টি মামলা, সিপাহিজলা জেলায় ৯৮ টি মামলা, ধলাই জেলায় ১০৪ টি মামলা এবং দক্ষিন ত্রিপুরায় ৩৫৩ টি মামলা মিডিয়েশন কেন্দ্রগুলিতে পাঠানো হয়েছে।

