আইজল/নয়াদিল্লি, ১২ জুলাই : মিজোরামে বিপুল বেআইনি অস্ত্র ও গোলাবারুদের মজুতের ঘটনায় পাঁচজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা । এই অস্ত্র চোরাচালান কাণ্ডের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের চট্টগ্রামভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট -এর হাতে অস্ত্র সরবরাহ করা। এনআইএ-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তদের নাম লালবিয়াকচুংগা ওরফে ডেভিড, লালথাওমচেউভা ওরফে থাওমা, মালসাওমা ওরফে মালসাওমা লনচেউ, রুয়াললিয়ানসাঙ্গা ওরফে সাঙ্গা এবং অলোক বিকাশ চাকমা। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩, অবৈধ কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন ১৯৬৭, আর্মস অ্যাক্ট ১৯৫৯ এবং বিদেশি আইন ১৯৪৬-এর অধীনে মামলা করা হয়েছে।
এই মামলাটি প্রথমে মিজোরাম পুলিশ ২০২৫ সালের ১৫ জানুয়ারি রেজিস্টার করে। পরে মার্চ মাসে তা তদন্তের জন্য এনআইএ-র হাতে তুলে দেওয়া হয়। তদন্তে উঠে আসে, মিজোরামের মামিত জেলার সাইথাহ গ্রামে একটি চক্র মজুত করেছিল ৬টি একে-৪৭ রাইফেল, ১৩টি ম্যাগাজিন এবং ১০,০৫০ রাউন্ড গুলি। এনআইএ জানিয়েছে, এই অস্ত্রগুলি বাংলাদেশের ইউপিডিএফ জঙ্গিদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল, যাতে তাদের সশস্ত্র কার্যকলাপ আরও শক্তিশালী হয়।
তদন্তে এও জানা গেছে, এই পাচারচক্র একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। অস্ত্র ও গোলাবারুদ ভারতের অভ্যন্তরে সংগৃহীত হয়ে মিজোরাম সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে পাচার হওয়ার কথা ছিল। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই চক্রে আরও ব্যক্তি ও সংগঠনের সংযোগ রয়েছে, যাদের শনাক্ত করতে তদন্ত চলছে। এনআইএ জানিয়েছে, তারা এই অপরাধচক্রের পরবর্তী স্তরের সদস্যদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে এবং সুরক্ষা সংস্থাগুলিকে সতর্ক রাখা হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, উত্তর-পূর্ব ভারতের সীমান্ত এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই অস্ত্র ও মাদক পাচারের করিডোর হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এবার সেই করিডোর জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এর ফলে ভারতের সীমান্তবর্তী নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করা দরকার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এনআইএ জানিয়েছে, এই মামলার তদন্ত এখনো চলছে এবং ভবিষ্যতে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ্যে আসতে পারে।

