সোনামুড়া, ২৩ জুন : সোনামুড়া এন.সি. নগরের প্রবাসী স্ত্রী রুবিনা আক্তারের উপর অ্যাসিড হামলার ঘটনায় এবার এক চাঞ্চল্যকর মোড় সামনে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে, একটি পুরনো অপহরণ মামলা ধামাচাপা দিতে ব্যর্থ হয়ে রুবিনা আক্তার এবং তার প্রেমিক ভাগ্নে হুমায়ুন কবির নিরপরাধ তিন ভাই সুমন মিয়া, রুবেল হোসেন এবং তাদের ছোট ভাইকে অ্যাসিড হামলার মতো একটি গুরুতর মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে বাঁশপুকুর বাজার থেকে স্কুলে যাওয়ার সময় অভিযুক্ত তিন ভাইয়ের মধ্যে ছোট ভাইয়ের নাবালিকা মেয়েকে রুবিনা আক্তার এবং হুমায়ুন কবির একটি গাড়িতে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
পারিবারিক সম্পর্কের সুবাদে রুবিনা আক্তার রুবেল হোসেনের নাবালিকা মেয়েকে গাড়িতে তুলে একপ্রকার ঠান্ডা পানীয় খাইয়ে অজ্ঞান করে অপহরণ করে বলে অভিযোগ। ঘটনার পর নাবালিকার পরিবার থানায় দ্বারস্থ হলে তিন দিনের মধ্যেই দক্ষিণ জেলার মনু থেকে অপহরণকারী হুমায়ুন কবির ও রুবিনা আক্তারকে নাবালিকা মেয়েসহ উদ্ধার করা হয়।
অপহরণ মামলায় হুমায়ুন কবিরকে জেল খাটতে হয়। পরবর্তী সময়ে জামিনে বেরিয়ে এসে তিনি ওই পরিবারের উপর অকথ্য অত্যাচার শুরু করেন এবং মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। একপর্যায়ে মামলা শেষ করার জন্য ওই নাবালিকার পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
কিন্তু মেয়ের জেঠু অর্থাৎ বড় ভাই সুমন মিয়া এতে রাজি হননি। এরপর থেকেই তাদের উপর বিভিন্ন ধরনের চাপ সৃষ্টি করা হতে থাকে। চলতি মাসের ১০ ও ১২ তারিখে সোনামুড়া কোর্টে এই মামলার শুনানি ছিল। অভিযুক্তরা তাদের আদালতে না যেতে এবং কোনো সাক্ষী না দিতে হুমকি দেয়, অন্যথায় তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়।
এর মধ্যেই এক গভীর চক্রান্তের মাধ্যমে রুবিনা আক্তারকে অ্যাসিড হামলায় আহত করে ওই তিন নিরপরাধ ভাইকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, অ্যাসিড হামলায় আহত রুবিনা আক্তারের বাড়ি ভারত-বাংলা সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার একদম কাছে, যেখানে সন্ধ্যা ৬টার পর বিএসএফের পক্ষ থেকে কাউকে চলাচলের অনুমতি নেই। অথচ এই অ্যাসিড হামলাটি হয় রাত প্রায় এগারোটায়। তাহলে অভিযুক্তরা কীভাবে সেখানে গেল, তা নিয়েও বড় ধরনের প্রশ্ন উঠছে।
যাদের নামে অ্যাসিড হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে, তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশ প্রশাসনের কাছে প্রার্থনা জানানো হয়েছে যে, তারা যেন বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করেন এবং প্রকৃত সত্য সবার সামনে তুলে ধরেন। এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করার দাবি উঠেছে।

