এয়ার ইন্ডিয়া এআই-১৭১ বিমান দুর্ঘটনা: কারণ এখনও অনিশ্চিত, তদন্তে নেমেছে ডিজিসিএ

আহমেদাবাদ, ১২ জুন: আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই ভয়াবহভাবে ভেঙে পড়া এয়ার ইন্ডিয়া এআই-১৭১ ফ্লাইটের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে ভারতের অসামরিক বিমান পরিবহন মহাপরিদর্শক দপ্তর । বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার, যা লন্ডনের গ্যাটউইকের উদ্দেশ্যে যাত্রা করছিল, দুপুরে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় ভেঙে পড়ে।

এআই-১৭১-র মুখপাত্র জানিয়েছেন, “দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ এখনও নিশ্চিত নয়। একটি বিশদ তদন্ত শুরু হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট সমস্ত সংস্থাকে এতে যুক্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই ভয়াবহভাবে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়া AI-171 ফ্লাইট। বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার যা লন্ডনের গ্যাটউইকের উদ্দেশ্যে যাত্রা করছিল। দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে সরদার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে ২৩ থেকে উড্ডয়ন করে। উড্ডয়নের পরপরই পাইলট একটি কল পাঠান, কিন্তু এরপর আর কোনো যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। ফ্লাইটটি পরিচালনা করছিলেন অভিজ্ঞ পাইলট ক্যাপ্টেন সুমীত সাবারওয়াল। যাঁর উড়ান অভিজ্ঞতা ৮,২০০ ঘণ্টারও বেশি এবং সহ-পাইলট ছিলেন ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দর, যাঁর অভিজ্ঞতা ১,১০০ ঘণ্টা। বিমানে মোট ২৪২ জন ছিলেন— ২৩০ জন যাত্রী, ১০ জন কেবিন ক্রু ও ২ জন পাইলট।

দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দা ও বিমানবন্দর কর্মীরা জানিয়েছেন, বিমানের পতনের পর ঘন কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী আকাশে উঠতে দেখা যায়। ধারণা করা হচ্ছে, বিমানটি উড্ডয়নের পর যথাযথ উচ্চতা অর্জন করতে না পারায় রানওয়ের বাইরে বিমানবন্দর সীমার কাছাকাছি এলাকায় ভেঙে পড়ে।

এই ঘটনার পরই ডিজিসিএ (ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন) তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ইতিমধ্যেই ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার, ককপিট ভয়েস রেকর্ডার ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবৃতি সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে। বোয়িং সংস্থার প্রতিনিধিরাও খুব শীঘ্রই এই তদন্তে অংশ নেবেন বলে জানা গিয়েছে।

যদিও দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে ইঞ্জিন বিকল হওয়া বা ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেমে ত্রুটির মতো কিছু অনুমান করা হচ্ছে, কর্তৃপক্ষ স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে, চূড়ান্ত তদন্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কোনো প্রকার অনুমান বা গুজবে কান না দেওয়াই বাঞ্ছনীয়। এই দুর্ঘটনা ভারতের বিমান নিরাপত্তা এবং রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থাপনার উপর নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ ইতিমধ্যেই বিমানের টেকনিক্যাল চেক ও রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে আরও কঠোর মনোভাব নিতে শুরু করেছে।