ইন্দোর, ১০ জুন : মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে খুন হওয়া রাজা রঘুবংশীর শোকস্তব্ধ পরিবার অভিযুক্তদের, বিশেষ করে স্ত্রী সোনম রঘুবংশী ও তার কথিত সহযোগী রাজ কুশওয়াহার, বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দাবি করেছেন। পরিবারের মতে, এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার একমাত্র মৃত্যুদণ্ডেই সম্ভব।
রাজার মা উমা রঘুবংশী গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, “ঘটনার কারণ সামনে এসেছে। রাজা ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকারী এবং যারা দায়ী, তাদের কঠোরতম শাস্তি দেওয়া উচিত। আমার একটাই অনুরোধ, যদি সম্ভব হয়, তাদের ফাঁসি দেওয়া হোক।”
সোনমের পরিবারের সদস্য হওয়ার প্রসঙ্গে উমা বলেন, “আমরা কখনও তার উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ করিনি। রাজাকে বিয়ে দেওয়ার সময় আমরা খুশিই ছিলাম। অতীত নিয়ে ভাবিনি। কখনও কল্পনাও করিনি সে এতটা নির্মম হতে পারে। কিছু আঁচ করতে পারলে বিয়েটাই দিতাম না।”
তিনি আরও বলেন, “তাদের কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত। তারা দেশের ভাবমূর্তি ও সমাজের সম্মান ক্ষুণ্ণ করেছে। আমার ছেলের সঙ্গে যা করেছে, তা অকল্পনীয়। তার শরীরে এমন ক্ষত ছিল, দশ দিন পর দেহ দেখে সহ্য করা যায়নি। তাদের অপরাধের ফল ভোগ করতেই হবে।”
রাজার ভাই, বিপিন রঘুবংশী, পুলিশের ও সরকারের কাছে দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের একটাই দাবি—সরকার যেন অভিযুক্তদের, বিশেষ করে সোনম ও তার সহযোগীদের, ফাঁসি নিশ্চিত করে। সোনম ইতিমধ্যে দোষীদের নাম বলেছে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
বিপিন মেঘালয়ের সাধারণ মানুষ ও আইনজীবীদেরও আহ্বান জানান, “মেঘালয়ের পর্যটনের ওপর অর্থনীতি নির্ভরশীল। আমরা চাই, সেখানকার মানুষ আমাদের পাশে থাকুন। রাজ্যের কোনো আইনজীবী যেন সোনমের পক্ষে না দাঁড়ান। এই মামলায় যেমন মেঘালয় আলোচনায় এসেছে, তেমনই রাজার ন্যায়বিচারও যেন গুরুত্ব পায়।”
অন্যদিকে, সোনম রঘুবংশীর বাবা মেয়ের পক্ষ নিয়ে বলেন, “আমার মেয়ে নির্দোষ। মেঘালয় পুলিশ নিজেদের তদন্তের ব্যর্থতা ঢাকতে তাকে ফাঁসাচ্ছে।” সোনম, যিনি স্বামীর দেহ মেঘালয়ের গিরিখাদে উদ্ধারের পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন, সোমবার সকালে উত্তরপ্রদেশের গাজীপুর জেলার নন্দগঞ্জ থানায় আত্মসমর্পণ করেন।
এদিকে, হত্যার মূল অভিযুক্ত রাজ কুশওয়াহার পরিবারও তার নির্দোষত্ব দাবি করেছে। কুশওয়াহার মা জানান, “আমার ছেলে নির্দোষ। সে শুধু কাজের সূত্রেই সোনমের সঙ্গে পরিচিত ছিল। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সে, বোনদের দায়িত্বও তার ওপর। এই অভিযোগ বিশ্বাসযোগ্য নয়।”