মেঘালয়ে হানিমুনে গিয়ে স্বামীর খুন! সোনাম রঘুবংশী গ্রেপ্তার, প্রেমিকের সঙ্গে মিলে খুনের ছক? তদন্তে নেমেছে পুলিশ

ইন্দোর, ৯ জুন : মেঘালয়ের ওয়েইসাওডং জলপ্রপাত সংলগ্ন গভীর খাদ থেকে রাজা রঘুবংশীর মৃতদেহ উদ্ধারের পর, নিখোঁজ হওয়া স্ত্রী সোনাম রঘুবংশীকে অবশেষে উত্তরপ্রদেশের গাজীপুরে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এক চাঞ্চল্যকর মোড় নিয়েছে নবদম্পতির এই হানিমুন ট্র্যাজেডি।

তদন্তকারীদের বরাতে জানা গেছে, সোনাম রঘুবংশীর প্রাক্তন সহকর্মী রাজ কুশওয়াহা এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। রাজ ও সোনাম মিলে ভাড়াটে খুনি বিকি ঠাকুর, আকাশ ও আনন্দকে সঙ্গে নিয়ে স্বামী রাজা রঘুবংশীকে হত্যার ছক কষেন। মেঘালয় পুলিশের ডিজিপি ইদাশিশা নোংরাং জানিয়েছেন, সোনামই সরাসরি এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন এবং রাজাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে তিনজন খুনিকে ভাড়া করেন।

তদন্তে আরও উঠে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। কল রেকর্ড বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সোনাম ও রাজ কুশওয়াহার মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ হতো। হানিমুন চলাকালে সোনাম প্রায়ই তার শাশুড়িকে ফোন করে জানান যে সব কিছু ঠিক আছে এবং রাজা-ই নাকি তাকে জঙ্গলে ঘুরতে নিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশ মনে করছে, এই আচরণ ছিল পূর্বপরিকল্পিত, যাতে সন্দেহ না হয় এবং হত্যার ছাপ ধামাচাপা দেওয়া যায়।

রবিবার রাতে সোনামকে গাজীপুর জেলার একটি ধাবায় কান্নারত অবস্থায় দেখা যায়। তিনি সেখান থেকে ফোন করে আত্মীয়দের খবর দেন এবং পরে নন্দগঞ্জ থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয় এবং রাতভর অভিযানে তিনজন ঘাতককেও গ্রেফতার করা হয়।

রাজা রঘুবংশীর পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার মা, উমা, সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “সোনামের গায়ে একটাও আঁচড় ছিল না। যদি সে অপহরণ বা হামলার শিকার হতো, তাহলে চিহ্ন থাকত। আমার ছেলে প্রতিদিন আমার সঙ্গে কথা বলে — আমি তার কাছ থেকে ন্যায় চাই।” রাজার ভাই বিপুল জানান, “সোনাম এখনো কিছু স্বীকার করেনি। আমরা চাই তদন্তের মাধ্যমে সত্য সামনে আসুক।”

অন্যদিকে, সোনামের বাবা দেবী সিং অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার মেয়ে নির্দোষ। সে নিজেই ধাবায় গিয়ে ফোন করেছিল। মেঘালয় পুলিশ শুরু থেকেই মিথ্যা বলছে। আমরা এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত চাই।”

বর্তমানে সোনামকে ট্রানজিট রিমান্ডে এনে মেঘালয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। দুই পরিবারের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পুলিশ রেকর্ড করবে। তদন্ত এগোচ্ছে পূর্ণমাত্রায় এবং সোনামের পরিবার এখন কেন্দ্র সরকারের কাছে সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *