পিয়ংইয়ং, ৭ জুন : শনিবার উত্তর কোরিয়ায় ঘটে গেল এক বড়সড় ইন্টারনেট বিভ্রাট, যার ফলে কয়েক ঘণ্টা ধরে বন্ধ ছিল সরকারি ও সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটগুলি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি বাইরের কোনো সাইবার হামলার ফল নয়, বরং অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যার কারণেই এই বিপর্যয় ঘটেছে।
রয়টার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, শনিবার সকালে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতীয় বিমান সংস্থা এয়ার কোরিও এবং দেশটির প্রধান সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটগুলিতে প্রবেশ করা যাচ্ছিল না। দুপুর নাগাদ কিছু কিছু সাইট ধীরে ধীরে সচল হতে শুরু করে।
ইউকে-ভিত্তিক ইন্টারনেট পর্যবেক্ষক জুনেইড আলি জানান, উত্তর কোরিয়ার ইন্টারনেট অবকাঠামো সম্পূর্ণভাবে অদৃশ্য হয়ে যায় মনিটরিং সিস্টেম থেকে। এমনকি ইমেল পরিষেবাও বিঘ্নিত হয়। তিনি বলেন, “এটি ইচ্ছাকৃত না দুর্ঘটনাজনিত তা বলা কঠিন, তবে এটা বাইরের আক্রমণের থেকে অভ্যন্তরীণ ত্রুটির সম্ভাবনাই বেশি।”
ওয়াশিংটন-ভিত্তিক স্টিমসন সেন্টারে উত্তর কোরিয়ার প্রযুক্তি ও অবকাঠামো বিশেষজ্ঞ মার্টিন উইলিয়ামসও এই মত পোষণ করেছেন। তিনি বলেন, “চীন ও রাশিয়ার সংযোগও কাজ করছিল না, তাই এটি সম্ভবত দেশীয় কোনো সমস্যার ফল।”
দক্ষিণ কোরিয়ার সাইবার টেরর রেসপন্স সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও, তাঁরা কোনো মন্তব্য করেননি।
উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়ার ইন্টারনেট ব্যবস্থা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। সাধারণ মানুষ কেবল সরকারের নিয়ন্ত্রিত ইনট্রানেট ব্যবহার করতে পারে, যা বাইরের বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত নয়। শুধুমাত্র উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের জন্যই খোলা ইন্টারনেট অ্যাক্সেস অনুমোদিত।
উল্লেখযোগ্যভাবে, অতীতেও উত্তর কোরিয়ায় বড় ইন্টারনেট বিভ্রাট দেখা গিয়েছে, যার পেছনে সাইবার হামলার সন্দেহ উঠেছিল। দেশটির উচ্চমানের হ্যাকার দল রয়েছে — যেমন ‘লাজারাস গ্রুপ’, যা গোয়েন্দা সংস্থার নিয়ন্ত্রণে চলে এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে হামলা চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত।
তবে উত্তর কোরিয়া সব সময় এই ধরনের হ্যাকিং, ক্রিপ্টো চুরি এবং সাইবার অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

