বিলোনিয়া এবং কৈলাসহরের বাঁধ নির্মাণ জনিত সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে মুখ্যসচিবকে চিঠি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির

আগরতলা, ২৪ এপ্রিল: কৈলাসহর এবং বিলোনিয়া মহকুমার সীমান্তবর্তী এলাকায় বাংলাদেশ সরকার অবৈধভাবে বাঁধ নির্মাণ করছে। তাতে ওই মহকুমাগুলো জলমগ্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু উদ্ববেগের বিষয়, কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য সরকার কার্যত নীরব। বিলোনিয়া এবং কৈলাসহরের বাঁধ নির্মাণ জনিত সমস্যার স্থায়ী সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে মুখ্যসচিবের নিকট চিঠি দিয়ে আবেদন জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশিস কুমার সাহা।

চিঠিতে সভাপতি আশিস কুমার সাহা লেখেন, স্বাধীন ভারতের ঐতিহ্যের পরম্পরায় চলে আসা বিদেশ নীতি যা মোদি জমানায় অনেকাংশেই দুর্বল যার ফল ভোগ করতে হচ্ছে আজ দেশের একটা বড় অংশের মানুষদের বিশেষত সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির মানুষদের। কেন্দ্রীয় সরকার কার্যত এই ক্ষেত্রগুলিতেও সম্পূর্ণ উদাসীন। সম্প্রতি ত্রিপুরার কৈলাশহর বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় গত বছরের বন্যার পরপরই বাংলাদেশ সরকার তাদের সীমান্তে উঁচু বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করে দেয়। ফলে শহরের বিরাট সংখ্যক কৃষি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সাথে সামান্য বৃষ্টিতেই কৈলাসহর ভেসে যাওয়ার অবস্থা তৈরি হয়। সেক্ষেত্রে কি কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য সরকার কার্যত নীরবই ছিল।

তিনি আরও লেখেন, কংগ্রেস দলের বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা বিধানসভা অধিবেশনে এই বিষয়টি তুলে ধরার সাথে সাথে কৈলাসহর মহকুমাতেও এর বিরুদ্ধে আন্দোলন সংঘটিত করে। উভয় সরকারই কিছুটা নড়েচড়ে বসে কিন্তু এখনও আন্তর্জাতিক নিয়ম কানুন মেনে বাংলাদেশ সরকার নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করেনি। তা না করেই আবার বিলোনিয়া সীমান্তে বাংলাদেশের সীমানায় আরো একটি বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করে দেয়। এই দুটো ক্ষেত্রেই রাজ্য সরকার সম্পূর্ণ উদাসীন এবং নীরব ভূমিকাই পালন করে আসছে। এটা ঠিক যে বিষয়টি আন্তর্জাতিক এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। আন্তর্জাতিক সীমানায় যেকোনো নির্মাণ হতে গেলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে একটা নির্দিষ্ট নিয়ম-নীতি মেনে চলতে হয়।

তাঁর কথায়, ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে ত্রিপুরায় ৭০০ কিলোমিটার কাটা তারের বেড়ানির্মাণের ক্ষেত্রে জিরো লাইন থেকে ১৫০ মিটার ভারতীয় ভূখণ্ডের জমি ছাড়া হয়েছিল। এতে জনগনের তিন ফসলি জমি, চা বাগান, রাবার বাগানসহ কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে। দুই দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এসব কিছুকে রাজ্যের জনগণ মেনে নিয়েছিল। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের এহেন উদ্যোগে সৃষ্ট সমস্যার দায় কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার এড়াতে পারে না। বিলোনিয়া সীমান্তে এখনো বাঁধ নির্মাণ হয়নি তাতেও গত দুই দিনে সামান্য বৃষ্টিতেই বিলোনিয়া শহর শুধু জলে ভেসে যায়নি হাসপাতালও জলমগ্ন হয়ে জীবন দায়ী ঔষুধও ভেসে গেছে। আমরা লক্ষ্য করেছি রাজ্য সরকার এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াবলিতে গুরুত্ব না দিলে পরেও সম্প্রতি সীমান্তবর্তী এলাকাসমূহে যেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষই বেশি সংখ্যায় বসবাস করছে তাদের একটা অংশের জমি, জমা, ঘরবাড়ি কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে পড়ে যাওয়ার ফলে নিজ দেশে বৈধ নাগরিকত্ব এবং জমি জমার বৈধ নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও পরদেশীর মতো থাকতে বাধ্য হচ্ছে। তাই আসন্ন বর্ষার পূর্বেই বিলোনিয়া এবং কৈলাসহরের বাঁধ নির্মাণ জনিত সমস্যার স্থায়ী সমাধান সহ সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসকারি নাগরিকদের বর্তমান সমস্যাগুলির সুষ্ঠ সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আবদেন জানিয়েছেন তিনি।