ধর্মনগর, ১৮ ডিসেম্বর : দীর্ঘ দশ বছর পর জাল নোট মামলায় অভিযুক্তকে দুটি ধারায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা দিল ধর্মনগর দায়রা আদালতের বিচারপতি অংশুমান দেববর্মা। সাথে পাঁচ হাজার টাকার জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ছয় মাস করে জেল হাজতের রায় দেন তিনি।
ঘটনার বিবরণে সরকারি আইনজীবী পার্থ পাল জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ উত্তর ত্রিপুরা জেলার পানিসাগরের উত্তর পদ্মবিলের বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি ধর্মনগর শহরের ক্ষিতীশ চন্দ্র দেবনাথের মুদি দোকানে কোন একটা জিনিস কিনতে গিয়েছিলেন। কিছু জিনিস কিনার পর হেলাল দোকান মালিককে পাঁচশো টাকার একটি নোট দিলে নোটটি দেখে দোকান মালিকের সন্দেহ হয়। প্রাথমিক ভাবে বোঝা যায় এটি জাল নোট। পরে আশপাশের দোকানি সহ দোকান মালিকের ছেলে মতিলাল দাস ধর্মনগর থানায় খবর দিয়েছিল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছে পুলিশ। পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তল্লাশি চালিয়ে তার কাছ থেকে মোট ছয়টি পাঁচশো টাকার জাল নোট অর্থাৎ জাল তিন হাজার টাকা উদ্ধার করে।
তার বিরুদ্ধে ধর্মনগর থানায় ১০৪ নম্বরের ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৮৯ বি এবং ৩৮৯ সি ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেন তদন্তকারী অফিসার নন্দদুলাল সাহা। এদিকে উদ্ধার তিন হাজার টাকা ফরেন্সিক সাইন্সের রিপোর্টে জাল আসে। সাথে ধৃত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে দক্ষিণ কদমতলার আলমাছ আলি নামের এক যুবককে আটক করলেও পরবর্তীতে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এদিকে তদন্তকারী অফিসার নন্দদুলাল সাহা অন্যত্র বদলি হলে মামলাটি হাতে নেন সাব ইন্সপেক্টর দেবজিত চ্যাটার্জি। পরবর্তীতে তিনি মামলাটির চার্জশিট ধর্মনগর জেলা ও দায়রা আদালতে জমা দেন।
এদিন তিনি আরও বলেন, অবশেষে দীর্ঘ দশ বছর ধরে মামলাটি চলার পর সাত জন সাক্ষীর সাক্ষ্য দানের উপর ভিত্তি করে বুধবার ধর্মনগর আদালতের বিচারপতি অংশুমান দেববর্মা অভিযুক্ত হেলাল উদ্দিনকে ৩৮৯ বি ধারায় পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। সাথে পাঁচ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ছয় মাসের জেল হেফাজতের আর্দেশ দিয়েছেন। সাথে ৩৮৯ সি ধারায় পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং সাথে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ছয় মাসের জেল হাজতের নির্দেশ দেন। আদালতে এই মামলার শুনানি চলাকালীন সময় ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য বাক্য গ্রহণ করা।