BRAKING NEWS

দৃশ্য শ্রবণ, চলচ্ছবি ও বিনোদন ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত: ধারণা ও পরিচয় ঘটাতে সুকান্ত একাডেমিতে ‘ক্রিয়েট ইন ইন্ডিয়া চ্যালেঞ্জ – মিট এন্ড গ্রিট” অনুষ্ঠিত

আগরতলা, ২৭ নভেম্বর : আজ আগরতলার সুকান্ত একাডেমীতে, দৃশ্য শ্রবণ ও চলচ্ছবি ও বিনোদন ক্ষেত্রের বিভিন্ন বিভাগের নতুন দিগন্ত ও সুযোগ-সম্ভাবনা নিয়ে ‘মিট এন্ড গ্রিট’ শীর্ষক এক সচেতনতামূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কর্মশালার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে আগরতলার বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করে। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অধীন প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর আগরতলা কার্যালয়ের উদ্যোগে এবং রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর, ত্রিপুরা ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট এবং ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের সূচনা করে প্রধান অতিথির ভাষণে ত্রিপুরা সরকারের তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ডঃ প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, সৃজনশীল তরুণ প্রতিভাদের বিশ্বমঞ্চে পৌছে দিতে এরকম একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন এই সময়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, এই সুযোগ গ্রহনের জন্য বিভিন্ন সৃজনশীল বিভাগে যে প্রতিযোগিতা ওয়েবস এর মাধ্যমে এসেছে, সেগুলো কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে পৌঁছে দেবার উদ্দেশ্যে আজকের ‘ক্রিয়েট ইন ইন্ডিয়া চ্যালেঞ্জ – মিট এন্ড গ্রিট” অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক ও প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।

ওয়েবস এর ক্রিয়েট ইন ইন্ডিয়া- অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন বিভাগে অংশগ্রহণর সুযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, বহুবিধ মাধ্যম ও বিভাগে এই চ্যালেঞ্জগুলোতে অংশ নেওয়া যাবে। এর মধ্যে রয়েছে, চলচ্ছিত্র, শর্ট ফিল্ম, রিল নির্মাণ, থিম সং, সংবাদমাধ্যম, টেলিভিশন, কমিউনিটি রেডিও, মিউজিক, বিজ্ঞাপন, এনিমেশন, ই-গেমিং, ই-স্পোর্টস, সোশ্যাল মিডিয়া, ফিল্ম পোস্টার তৈরী করা সহ আরো অনেক কিছু। তবে, দৃশ্য-শ্রবণ ও বিনোদন দুনিয়ার এসমস্ত ক্ষেত্রে সৃজনশীলতা দেখাবার ক্ষেত্রে তিনি বিধিবদ্ধ সাবধানতা গ্রহণ করতেও পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, আজকের ওয়েব ও ডিজিটেল দুনিয়ায় মিডিয়া ও বিনোদন মাধ্যমের কন্টেন্ট তৈরির সময় আইনি বিধিবদ্ধতা সম্পর্কে অবগত থাকা এবং সেইমতো পদক্ষেপ করাও জরুরি। সাইবার নিরাপত্তার বিষয়েও সতর্ক থাকার জন্য বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি, ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ামক ডঃ দীপক শর্মা বলেন, মোবাইল ফোন এখন আর শুধু বিনোদবের বস্তু নয় তা,এখন তথ্য আদান প্রদানের গুরুত্বপূর্ণ এক মাধ্যম। এক নতুন ভারতের ছবি, নতুন ভারতের উন্নয়ন ও এগিয়ে যাওয়ার কথা ও কাহিনী এই ডিজিট্যাল মাধ্যমগুলোরা মাধ্যমে বিশ্বের কাছে পৌঁছানো উচিত। তিনি বলেন ভারত সরকারের তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রক এই যে ওয়েভস সামিট করতে চলেছে তা অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং তরুণ প্রজন্মের জন্য বিশেষ সুফলদায়ী হবে। নতুন প্রজন্মকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনের সুযোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে দৃশ্য শ্রবণ ও চলচ্ছবি ও বিনোদন ক্ষেত্রে পরিবর্তিত ও নতুন দিগন্তের আগমন বিষয়ে বক্তব্য রাখেন সত্যজিৎ রায় ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট এবং ত্রিপুরা ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট এর শিক্ষক চলচ্চিত্রকার সমদর্শী দত্ত। তিনি বলেন, চলচ্চিত্র শিল্পে বিশ্বে অন্যতম স্থানে রয়েছে ভারত। বর্তমান ভারতে সমস্ত রকমের আধুনিক ও ডিজিটাল সব প্রযুক্তির ব্যবস্থা ও উপকরণ রয়েছে। ফলে, তরুণদেড় কাছে সমস্ত রকমের সুবিধা রয়েছে, তবে পড়ার ও জানার অভ্যাস প্রসারিত করতে হবে। ভিডিও ও চলচ্ছবির কন্টেন্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে তরুন প্রজন্মকে অধিকতর সচেতন, সতর্ক ও দায়িত্বশীল হওয়ার উপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে থ্রী-ডি টেকনলজি ছাড়িয়ে আরও আধুনিক প্রযুক্তি সেভেন-ডি সিনেমা, তেমনি শর্ট ফিল্ম, মিনি সিনেমা এসে গেছে। ওয়েবস সম্মেলন ভারতের তোরণ প্রজন্মের সামনে বিস্তৃত দিগন্ত খুলে দেবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে সকলকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর উপ-অধিকর্তা শুভাশিস চন্দ।

উল্লেখ্য, আগামী বছরের ৫ থেকে ৯ ই ফেব্রুয়ারী নয়াদিল্লির ভারত মন্ডপমে ওর্য়াল্ড অডিও ভিসুয়াল এন্ড এন্টারটেইনমেন্ট সামিট (ওয়েবস) সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলন দেশে এই প্রথমবারের মতো হতে চলছে। দৃশ্য শ্রবণ ও চলচ্ছবি ও বিনোদন ক্ষেত্রে দেশের তরুণ প্রতিবাদেরঅন্বেষণ ও বিকশিত করার লক্ষ্য নিয়ে এই আয়োজন করা হচ্ছে। তেমনি, এই ক্ষেত্রটিতে আন্তর্জাতিক মিডিয়া ও বিনোদন জগতের কাজকর্মের সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপন এবং দেশের তরুণ ক্রিয়েটর বা সৃজনশীল প্রতিভাদের তাদের সাথে যুক্ত করারও লক্ষ্য রাখা হয়েছে।

আজকের অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথি-অভ্যাগত, উপস্থিত ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকারা সমবেতভাবে সংবিধান দিবস উপলক্ষে শপথ গ্রহন করেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেন ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম, বিভাগ, বি-ভোক (চলচ্চিত্র বিভাগ), ত্রিপুরা ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট, এম বি বি বি কলেজ, মহিলা কলেজ, রামঠাকুর কলেজ, বিবিএম কলেজ, সচিন দেববর্মন মিউজিক কলেজ এর ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অনুষ্ঠানে, আকস্মিক সৃজন পর্বে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ জন শিক্ষার্থী একক ও সমবেত হয়ে সংগীত, শায়েরি, নাচ, অভিনয় ইত্যাদি পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠান শেষে, সুকান্ত একাডেমি প্রাঙ্গন থেকে ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে একটি সচেতনতামুলক পদযাত্রা বের হয়ে শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমার পর সুকান্ত একাডেমি প্রাঙ্গনে এসে শেষ হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *