আগরতলা, ১৯ নভেম্বর : রাজ্যপাল ইন্দ্র সেনা রেড্ডি নাল্লু বলেছেন, ত্রিপুরার গ্রামীন অর্থ নীতির বিকাশে রাবার চাষের গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে। তিনি আজ আগরতলায় রাবার বোর্ডের অফিস পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে সংবাদ মাধ্যমের কাছে রাজ্যপাল বলেন, ভারতে রাবার উৎপাদনে কেরালার পরেই রয়েছে ত্রিপুরা। যার জন্য এখানে রাবার বোর্ডের আঞ্চলিক অফিস খোলা হয়েছে ।
রাজ্যপাল বলেন, ত্রিপুরায় রাবার চাষ ও প্রাকৃতিক রাবার উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করার ব্যপারে রাবার বোর্ডের গবেষক ও বিজ্ঞানীরা নিরন্তর কাজ করছেন। ত্রিপুরায় রাবার চাষিরা যেন পুরোপুরিভাবে আর্থিক ভাবে সয়ম্ভর হতে পারে তার জন্য গাছে রাবার ল্যাটেক্স উৎপন্ন হওয়ার আগে রাবার বাগানে অন্তর্বর্তীকালীন বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করা যায়, রাবার উৎপাদনের সময়কাল ২৫ থেকে ৩৫ বছর পর সেই রাবার গাছের কান্ড থেকে বিভিন্ন আসবাব প্রস্তুত করা, রাবার গাছের গুঁড়ো, রাবার গাছের ফল ইত্যাদিকে আরও বেশি করে কাজে লাগানোর ব্যপারেও বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন উল্লেখ করেন রাজ্যপাল। রাবার ভিত্তিক এসব পন্যের প্রচার প্রসারের উপরও তিনি গুরুত্ব দেন।
রাজ্যপাল এর আগে রাবার বোর্ডের কর্মকর্তাগন , ও কর্মীদের সঙ্গে ত্রিপুরায়,রাবার চাষ, উৎপান, রাবার প্রক্রিয়াকরন ইত্যাদি বিষয়ে মত বিনিময় করেন। ত্রিপুরায় রাবার চাষ পদ্ধতির প্রদর্শনী, ল্যাবরেটরি ঘুরে দেখেন। পরে রাবার বোর্ড অফিস চত্বরে অবস্থিত মনিমালয়ার রাবার প্রাইভেট লিমিটেড ও ত্রিপুরা রাবার ল্যাটেক্স প্রাইভেট লিমিটেডের রাবার ল্যাটেক্স গুদাম পরিদর্শন করেন রাজ্যপাল। রাবার বোর্ডের, স্থানীয় প্রধান রাবার বোর্ডের জয়েন্ট রাবার প্রোডাকশন কমিশনার শেলেজা কে ও অন্যান্য আধিকারীকরা উপস্থিত ছিলেন ।
এর আগে রাবার বোর্ডের পক্ষ থেকে রাজ্যপালের কাছে এক উপস্থাপনায়, রাবার বোর্ডের বরিষ্ঠ ডেভেলপমেন্ট অফিসার অরুনাভ মজুমদার তথ্য দিয়ে জানান, রাবার গাছের ভ্যালু এড করা, রাবার চাষে কৃষকদের সহায়তা করা, নতুন চারা রোপন, পুরানো চারার রক্ষনাবেক্ষনে সহায়তা দান, রাবার চাষের সঙ্গে কৃষিকাজে সহযোগিতা করা, উৎপাদিত রাবারের ভ্যালু এডে সহায়তা দানের উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছে রাবার বোর্ড ত্রিপুরা।
শ্রী মজুমদার জানান, জলবায়ু রক্ষা ও প্রকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায়ও রাবার চাষ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নিচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ত্রিপুরায় রাবার চাষে মহিলাদের অংশগ্রহন উল্লেখযোগ্য এবং ত্রিপুরায় জঙ্গী কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ দমনে রাবার চাষের গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। ডেভেলপমেন্ট অফিসার অরুনাভ মজুমদার আরও জানান, ত্রিপুরায় রাবার চাষ সহস্র জুমিয়া পরিবারের জীবন জীবিকার উন্নতি ঘটিয়েছে। জুমিয়া পরিবারের আগে যেখানে মাসে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় হতো রাবার চাষের মাধ্যমে সেই পরিবারের আয় বেড়ে হয়েছে মাসে ৬০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা।