আগরতলা, ২৯ অক্টোবর : র্যাগিং বরদাস্ত নয়। সরাসরি না বললেও, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক(ডা.) মানিক সাহা বুঝিয়ে দিয়েছেন র্যাগিং-এ যুক্তদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, কারোর ভবিষ্যৎ নষ্ট না হোক, সেদিকেও প্রশাসন নজর রাখবে।
আজ ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজে র্যাগিং-র ঘটনায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। ছাত্রছাত্রীদের র্যাগিং মোটেও উচিৎ নয়। তাঁর কথায়, র্যাগিং প্রতিরোধে কড়া আইনী বিধান এনেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাতে, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তাই, এ-ধরণের কার্যকলাপ থেকে ছাত্রছাত্রীদের বিরত থাকা উচিৎ, পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
তাঁর বক্তব্য, র্যাগিং বিরোধী বিভাগের সে-দিকে কড়া নজর রয়েছে। ওই ঘটনার সাথে যুক্তদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, কারোর ভবিষ্যৎ নষ্ট না হয়, প্রশাসন সেদিকেও নজর রাখবে।
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজে র্যাগিং-র নালিশ ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন এবং ইউনিভার্সিটি গ্রান্ট কমিশনে পৌছতেই নড়েচড়ে বসার তাগিদ অনুভব করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। দিল্লি থেকে দাবড়ানি খেয়ে তদন্ত কমিটি গঠন এবং অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে থানায় এজাহার করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অরিন্দম দত্ত। শুধু তাই নয়, র্যাগিং-এ অভিযুক্ত ১৮ জন ছাত্রছাত্রীকে ১ বছরের জন্য হোস্টেল থেকে বহিষ্কার এবং কলেজ ক্যাম্পাসে ৬ মাস মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন তিনি।
এ-বিষয়ে ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অরিন্দম দত্ত বলেন, র্যাগিং সংক্রান্ত ঘটনায় দিল্লি থেকে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা থেকে গত ২০ অক্টোবর একটি ইমেইল পেয়েছি। সেখানে র্যাগিং-র বিভিন্ন ছবি সহ প্রমাণ পেশ করা হয়েছিল। এদিকে, ওই সংস্থা ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন এবং ইউনিভার্সিটি গ্রান্ট কমিশনে ওই র্যাগিং-র ঘটনায় বিস্তারিত তুলে ধরে অভিযোগ জানিয়েছিল। এরই প্রেক্ষিতে কমিশন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।
তিনি বলেন, কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী র্যাগিং-র ঘটনায় সত্যতা খুঁজে বের করতে কলেজের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিটি প্রথম বর্ষের পীড়িত ছাত্রছাত্রী সহ র্যাগিং-এ অভিযুক্তদের সাথে কথা বলেছে এবং অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পেয়েছে। কারণ, অভিযুক্ত ছাত্রছাত্রীরাই র্যাগিং-এ জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করেছে। সে মোতাবেক গত ২৬ অক্টোবর আমতলী থানায় এজাহার করা হয়েছে।
পশ্চিম জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চিরঞ্জীব চক্রবর্তী বলেন, র্যাগিং-র ঘটনায় ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ১৮ জন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে আমতলী এজাহার করেছেন। সম্ভবত, র্যাগিং-র শিকার পড়ুয়ার অভিভাবক প্রমাণ সহ দিল্লিতে নালিশ করেছেন। এরপরই কলেজের অধ্যক্ষ থানায় অভিযোগ করেছেন। পুলিশ ত্রিপুরা এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশন(প্রিভেনসন অব র্যাগিং) এক্ট, ১৯৯০ অনুযায়ী মামলা নথিভুক্ত করেছে।