নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ সেপ্টেম্বর: বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তোলা কংগ্রেসের অভিযোগ খন্ডন করলেন প্রদেশ বিজেপি মুখপাত্র সুব্রত চক্রবর্তী। রবিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেসের তোলা বিভিন্ন অভিযোগের স্পষ্ট জবাব দেন তিনি।
বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনের পুরনো এমএলএ হোস্টেল নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, সমস্ত বিধায়কদের জন্য উন্নত সুবিধাযুক্ত নতুন এমএলএ হোস্টেল স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে বেশিরভাগ বিধায়করাই নিজেদের আবাসনে বসবাস করছেন। কিন্তু দুইবার নোটিশ দেওয়া সত্ত্বেও কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন সে নতুন সর্ব সুবিধাযুক্ত এমএলএ হোস্টেলে যেতে রাজি নন। পুরাতন এমএলএ হোস্টেলে তিনি দুটো কোয়াটার দখল করে আছেন। বারবার নোটিশ দেওয়া সত্ত্বেও তিনি সেই কোয়াটার দুটি হস্তান্তর করছেন না। কেন সুদীপ রায় বর্মন নতুন এমএলএ হোস্টেলে যেতে রাজি নন, সেই প্রশ্নই তোলা হয় বিজেপির তরফে।
এদিকে সমসাময়িক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কংগ্রেসের তোলা অভিযোগ খন্ডন করে তিনি বলেন, বন্যা পরিস্থিতিতে রাজ্যের কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেই সম্পর্কে কোন ধারণা নেই কংগ্রেসের। বন্যা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশে তাদের দেখা যায়নি। তিনি আরো বলেন এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ এর আগে ত্রিপুরায় সংঘটিত হয়নি। যার ফলে এই দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সময় লাগবে। বন্যার ফলে যে ক্ষয়ক্ষতিগুলি হয়েছে সেগুলি ছাড়াই করা যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ।
তিনি বলেন, সাহায্যের দিক দিয়ে বিজেপি সরকার কোন খানকে রাখেনি। বন্যা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের দিকে আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি সহ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি সরকার। বন্যার ফলে ৩৬ জন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩৩ জনের কাছে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী চার লক্ষ টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনজনের কাছেও এক সপ্তাহের মধ্যে পৌঁছে যাবে সেই টাকা। এছাড়াও যারা আহত হয়েছেন তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে।
প্রচুর মানুষ এখনো শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন। রাজ্যে ৬৭ টি শরণার্থী শিবির এখনো চালু রয়েছে, সেখানে ৩৮৭৩ জন শরণার্থী রয়েছেন। পাশাপাশি প্রচুর ঘর বন্যার জোরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের তরফে অতিরিক্ত আরও পঞ্চাশ হাজার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর প্রদান করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও রেশনিং ক্ষেত্রেও সরকার যথেষ্ট সাহায্য করছে। দুমাস অতিরিক্ত ১০ কেজি চাল প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে খাদ্য দপ্তর। সেই অনুযায়ী সাধারণ মানুষকে সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
বিদ্যুৎ, সড়ক, পানীয় জলের উৎস সবকিছুই বন্যা তে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই মানুষের জরুরী ভিত্তিতে যেগুলো প্রয়োজন হবে সেগুলি ছাড়াই এর উদ্যোগ আগে থেকেই গ্রহণ করা হচ্ছে। বিদ্যুতের কাজ আংশিক সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও সড়ক এবং ব্রিজ গুলি যেখানে ভেঙে গেছে সেগুলিও সারাইয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক এবং মৎস্য চাষীদের ক্ষতিপূরণ দিয়েছে সরকার। তাই কংগ্রেস দল বিজেপির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলছে, তা ভিত্তিহীন।
এছাড়াও কংগ্রেস দলের সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষক বদলির বিষয়টি নিয়েও সরব হয় বিজেপি। তিনি বলেন সরকারি শিক্ষককে কোথাও বদলি করে দেওয়া হবে সেই সিদ্ধান্ত দপ্তর নেবে। কংগ্রেস ভবন সেটি ঠিক করবে না।
সাংবাদিক সম্মেলনে একাধিক যুক্তিহীন ভিত্তিহীন বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার প্রতিবাদে এদিন কংগ্রেস দলকে তীব্র নিন্দা জানায় প্রদেশ বিজেপি দল।