কোকরাঝাড় (অসম), ২১ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : বডোল্যান্ড শান্তি চুক্তি-২০২০ বিটিআর (বড়োল্যান্ড টেরিটরিয়াল রিজিওন)-এর নবযুগের সূচনা ঘটিয়েছে, আন্তর্জাতিক শান্তি দিবসের অনুষ্ঠানে বলেছেন রাজ্যপাল লক্ষ্মণ প্ৰসাদ আচাৰ্য।
আজ শনিবার কোকরাঝাড়ের চাঁদমারিতে অবস্থিত বডোফা সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সে আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস-২০২৪-এর একটি জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বডোল্যান্ড টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল (বিটিসি) সরকার। অনুষ্ঠানে অসমের রাজ্যপাল লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্য প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই অঞ্চলে শান্তি ও ঐক্যের বাৰ্তা দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্য বলেন, গত ২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি ভারত সরকার, অসম সরকার এবং বডো গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের মধ্যে স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তি বডোল্যান্ডে প্রকৃতার্থে শান্তি এনেছে।
বডোফা উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পাশাপাশি বিটিআর-এ শান্তি ও উন্নয়নকে বাস্তবে পরিণত করার জন্য বডোল্যান্ডের সকল অংশের জনগণকে ধন্যবাদ জানান রাজ্যপাল।
তিনি বলেন, ২০২৩ সালে প্ৰচলিত বডোল্যান্ড হ্যাপিনেস মিশনের অংশ হিসেবে পালিত আন্তর্জাতিক শান্তি দিবসটি বিটিআর-এ সুখ, শান্তি এবং মজবুত উন্নয়নের জন্য সফল হয়েছে।
বডোল্যান্ড অঞ্চলে শান্তির চলমান পরিবেশ বজায় থাকবে বলে তিনি আশাবাদী। ভবিষ্যতেও এই সম্প্রীতি বজায় থাকবে বলে প্ৰত্যাশা ব্যক্ত করেছেন রাজ্যপাল আচার্য। অঞ্চলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য বিটিআর নেতৃত্ব যে প্রচেষ্টা চালিয়েছে তার প্রশংসা করে এই প্রচেষ্টা ভবিষেতেও অব্যাহত রাখতে উৎসাহব্যঞ্জক বক্তৃতা পেশ করেছেন রাজ্যপাল।
বিটিআর-এর মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য (সিইএম) প্রমোদ বড়ো বিটিআর-এ প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক শান্তি দিবস পালিত হওয়ায় অপরিসীম আনন্দ প্রকাশ করেছেন। এই অঞ্চলের বিভীষিকাময় অতীত স্মরণ করেছেন তিনি। ৩০-৪০ বছর আগেকার ভয়-সন্ত্রাস, শিক্ষার অভাব, সীমিত জীবিকার সুযোগ সহ অশান্তির ফলে অপর্যাপ্ত পরিকাঠামোর বহু কথা স্মরণ করেছেন প্রমোদ বড়ো। তিনি কালীচরণ ব্রহ্ম এবং বডোফা উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মের মতো স্বপ্নদ্রষ্টাদের রূপান্তরমূলক অবদান স্বীকার করে বলেন, তাঁদের প্রচেষ্টায় এই অঞ্চলে শান্তি ও অগ্রগতির ভিত্তি স্থাপন হয়েছে।
আজকের অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দিয়েছেন বিটিসি-র প্রধনসচিব আকাশ দীপ। তিনি আন্তর্জাতিক দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, শান্তি সমৃদ্ধির পূর্বশর্ত। তিনি আশা ব্যক্ত করে বলেন, বিটিআর-এ অর্জিত শান্তি এই অঞ্চলের ভবিষ্যত উন্নয়নের জন্য একটি স্থায়ী ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে।
আন্তর্জাতিক শান্তি দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য পেশ করেছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক নীরজা চৌধুরী; লেখক, রাজনৈতিক ভাষ্যকার এবং নর্থইস্ট লাইভের প্রধান সম্পাদক ওয়াসবীর হুসেন এবং আসাম ট্রিবিউনের কার্যনির্বাহী সম্পাদক প্রশান্তজ্যোতি বরুয়া।
আজকের শান্তি দিবসের অনুষ্ঠানে অন্য সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের রেশম দফতরের মন্ত্রী উর্খাও গৌরা ব্রহ্ম, ইস্টার্ন নাগাল্যান্ড মহিলা সংস্থার সভাপতি ইংফে কোনিয়াক, প্রখ্যাত গান্ধীবাদী নিকেতু ইরালু প্রমুখ।
প্রসঙ্গত এই অনুষ্ঠানের পর বিকালের দিকে রাজ্যপাল লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্য ধুবড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন। আগামীকাল ধুবড়িতে তিনি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এবং ঐতিহাসিক রামরাইকুটি সত্র পরিদর্শন করবেন।