BRAKING NEWS

কর্মক্ষম-কর্মপ্রার্থী বেকার ছেলে-মেয়েদের শূন্যপদে নিয়োগ ও বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য ত্রিপুরা সরকারের প্রয়াস জারি রয়েছে ঃ যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রী

আগরতলা, ৫ সেপ্ঢেম্বর, ২০২৪  বর্তমান রাজ্য সরকার গত ৫-৬ বছরে বিভিন্ন দপ্তরে বিভিন্ন পদে চাকরি দিয়েছে৷ এরমধ্যে নিয়মিত পদে চাকরি এবং আউটসোর্সিংও রয়েছে৷ আরও বেশ কিছু পদে চাকরি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে৷ আজ বিধানসভায় বিধায়ক সুুদীপ রায় বর্মণের জনস্বার্থে আনীত এক স্বল্প সময়ের আলোচনায় অংশ নিয়ে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মী টিঙ্কু রায় একথা বলেন৷ বিধায়ক সুুদীপ রায় বর্মণ আনীত আলোচনার বিষয় ছিল ’ত্রিপুরা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নিয়মিত বেতনক্রমে সরাসরি নিয়োগযোগ্য শূন্যপদ সমূহ শ্রীঘই পূরণ করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে৷’ এ বিষয়ের আলোচনায় অংশ নেন বিরোধী দলনেতা জীতেন্দ্র চৌধুরী, বিধায়ক রঞ্জিত দাস, বিধায়ক নয়ন সরকার, বিধায়ক চিত্তরঞ্জন দেববর্মা, বিধায়ক বিনয় ভূষণ দাস, বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায় এবং বিধায়ক কিশোর বর্মণ৷

                আলোচনায় অংশ নিয়ে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মী টিঙ্কু রায় বলেন, কর্মক্ষম-কর্মপ্রার্থী বেকার ছেলে-মেয়েদের শূন্যপদে নিয়োগ ও বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য ত্রিপুরা সরকারের প্রয়াস জারি রয়েছে৷ রাজ্যের বর্তমান সরকার বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন৷ সেকারণেই বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরই একটি স্বচ্ছ নিয়োগ নীতি প্রনয়ণ করেছে, যাতে করে রাজ্যের যোগ্য যুবক-যুবতীরা সরকারি চাকুরি পেতে পারে৷ সে কারণেই জয়েন্ট রিক্রটমেন্ট বোর্ড ত্রিপুরা (জেআরবিটি) গঠন করা হয়েছে গ্রপ-সি ও গ্রপ-ডি পদে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করার জন্য৷ ইতিমধ্যেই জেআরবিটি গ্রপ-সি পদে ১,৯৮০ জনকে নির্বাচিত করেছে এবং নির্বাচিত যুবক-যুবতীরা রাজ্য সরকারের ৩৫টি দপ্তরে কাজে যোগদান করেছে৷ অন্যদিকে জেআরবিটি’র মাধ্যমে গ্রপ-ডি পদে ২,৫০০ জনকে নির্বাচিত করার জন্য ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে৷ খুব শীঘই যে সকল যুবক-যুবতী ২,৫০০টি পদে নির্বাচিত হবেন এবং তাদের রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগ করা হবে৷ রাজ্যের ইতিহাসে একসাথে এত বড় মাত্রায় গ্রপ-সি ও গ্রপ-ডি পদে নিয়োগ এই প্রথম৷

                বিধানসভায় যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মী জানান, ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৪,৮৪৯ জন অশিক্ষক কর্মচারি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগ করা হয়েছে৷ তাছাড়া ২০১৮-১৯ থেকে ২০২৩-২৪ পর্যন্ত বিভিন্ন দপ্তরে আউটসোর্সিং ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হয়েছে ৮,০২৪ জন৷ টিচার্স রিক্রটমেন্ট বোর্ড ত্রিপুরা, টেট পরীক্ষার মাধ্যমে ২০১৮-১৯ থেকে এখন পর্যন্ত ৬,৮০২ জনকে শিক্ষক-শিক্ষিকার নিয়মিত পদে নিয়োগ করেছে৷ স্পেশাল এডুকেটর হিসেবে ৮৮ জনকে নিয়মিত পদে নিয়োগ করা হয়েছে৷ তিনি জানান, ত্রিপুরা পাবলিক সার্ভিস কমিশন স্বচ্ছ নিয়মনীতি অনুযায়ী রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লোক নিয়োগ করার জন্য উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচিত করে চলেছে এবং নির্বাচিত প্রার্থীরা রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে যোগদান করে চলেছে৷ এখন পর্যন্ত টিপিএসসি’র মাধ্যমে বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগ করা হয়েছে ১,৭৪২ জনকে৷ এই মূহুর্তে টিপিএসসি’র মাধ্যমে ৭৪৫টি পদ পূরণ করার প্রক্রিয়া চলছে৷

বিধানসভায় যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মী আরও জানান, ২০১৮-১৯ থেকে এখন পর্যন্ত রাজ্য পুলিশে ১১৯ জনকে এসআই ও কনষ্টেবলের নিয়মিত পদে নিয়োগ করা হয়েছে এবং ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসের (ইণ্ডিয়া রিজার্ভ ব্যাটেলিয়ন) নতুন ২টি বাহিনী গঠন করা হয়েছে৷ তাছাড়া ১,৪১৩ জন টিএসআর জওয়ান নিয়োগ করা হয়েছে৷ এছাড়া গ্রপ-সি ও গ্রপ-ডি বিভিন্ন পদে ২৮৮ জনকে নিয়মিত পদে নিয়োগ করা হয়েছে৷ ২০১৮-১৯ থেকে ২০২৩-২৪ সময়ে এসপিও পদে ১,২৬২ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে৷ তাছাড়াও ত্রিপুরা পুলিশে ৬ হাজারটি স্পেশাল এক্সিকিউটিভ পদে অন্তর্ভূক্তির জন্য ইন্টারভিউ শেষ হয়েছে৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরা পুলিশে ১৪৯টি এসআই ইউবূি এবং ৪৫টি এসআই এবূি (পুরুষ) পদে এবং এসআই ইউবূি (মহিলা) ২১টি এবং এসআই এবূি (মহিলা) ৩টি পদে টিপিএসসিক্ত্রর মাধ্যমে সরাসরি নিয়োগের জন্য ইতিমধ্যেই ত্রিপুরা স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে৷ ত্রিপুরা পুলিশে ১ হাজার কনষ্টেবল পদে সরাসরি নিয়োগের জন্য একটি সিলেকশন কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ইতিমধ্যেই এই ১ হাজার কনষ্টেবল পদে সরাসরি নিয়োগের জন্য প্রার্থীদের শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা এবং লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছে৷ তিনি বলেন, তাছাড়াও আরও ৯১৬টি কনষ্টেবল এর শূন্যপদে সরাসরি নিয়োগের কাজ শুরু করার জন্য দপ্তর থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে৷ তার ফলে খুব সহসাই মোট ১,৯১৬টি কনষ্টেবল পদে সরাসরি নিয়োগের কাজ সম্পন্ন করা হবে৷

                বিধানসভায় যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মী জানান, বেকারদের কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে শূন্যপদ পূরণের লক্ষ্যে রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তরে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে টিপিএসসি’র মাধ্যমে ৩৯৫ জনকে পঞ্চায়েত এক্সিকিউটিভ অফিসার পদে নিয়োগ করা হয়েছে৷ সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরে টিপিএসসি’র মাধ্যমে ২ জনকে সিডিপিও পদে এবং ৩১ জনকে সুুপারভাইজার (আইসিডিএস) পদে অফার দেওয়া হয়েছে৷ সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরে ১০টি সিডিপিও এবং ১১৯টি সুুপারভাইজার (আইসিডিএস) পদে টিপিএসসি’র মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে৷ সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরে ২০১৮-১৯ থেকে ডিসেম্বর, ২০২৩ পর্যন্ত মোট ১,০৩৯ জন অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার (ঙ্ঢঢ) এবং ১,১৬০ অঙ্গনওয়াড়ি হেল্পার (ঙ্ঢ্ছ) সাম্মানিক ভাতার ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধীনে গেজেটেড পদে নিয়োগের জন্য বিভিন্ন শূন্যপদ পূরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে৷ বর্তমানে উচ্চশিক্ষা দপ্তরে ৩১২টি শূন্যপদ রয়েছে৷ ৬টি সহকারি অধ্যাপক পদে নিয়োগের জন্য বর্তমানে রিক্রটমেন্ট রুলস সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে এবং সংশোধন প্রক্রিয়ার কাজ শেষ হলে ত্রিপুরা লোকসেবা আয়োগের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করা হবে৷ তিনি বলেন, বর্তমানে জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের অধীনে বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান তথা স্বরোজগারের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে৷ বিধানসভায় যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মী বেকারদের কর্মসংস্থান ও স্বরোজগারের আরও বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে বলেন, ৩১-০৩-২০১৮ তারিখে রাজ্যের কর্মবিনিয়োগ কেন্দ্রগুলিতে নথিভুক্ত বেকারের সংখ্যা ছিল ৭,৪১,৩০৫ জন৷ অন্যদিকে ৩১-০৩-২০২৪ পর্যন্ত, ন্যাশনাল ক্যারিয়ার সার্ভিস পোর্টালে রাজ্যের নথিভুক্ত কর্মপ্রত্যাশী যুবক-যুবতীর সংখ্যা হল ৩,০৯,৪৮২ জন৷ এসব তথ্য প্রমাণ করে রাজ্যে সরকারি কর্মসংস্থান ও অন্যান্য কাজের সুুযোগ বর্তমান সরকারের সময় বাড়ছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *