করিমগঞ্জ (অসম) ২ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : সমগ্র দেশ ও রাজ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে করিমগঞ্জেও সোমবার সপ্তম রাষ্ট্রীয় পোষণ মাসের সূচনা করা হয়েছে। সোমবার করিমগঞ্জের জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদবের পৌরোহিত্যে তার কার্যালয় সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে এই মাস পালনের সূচনা করা হয়। “অ্যানিমিয়া, গ্রোথ মনিটরিং, কমপ্লিমেন্টারি ফিডিং, পোষণ ভী পড়াই ভী, টেকনোলজি ফর বেটার গভর্নেন্স ট্রান্সপারেন্সি অ্যান্ড বেটার সার্ভিস ডেলিভারি এবং এক পেড় মা কে নাম অভিযান – এই থিমগুলি নিয়ে সেপ্টেম্বর মাস ব্যাপী চলা করিমগঞ্জ জেলায় রাষ্ট্রীয় পোষণ মাস নিয়ে উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক সৈয়দ আহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে জেলাশাসক স্বাস্থ্য, কৃষি, শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য কারিগরি, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন ইত্যাদি সহযোগী বিভাগগুলির সাথে সমন্বয় রক্ষা করে রাষ্ট্রীয় পোষণ মাস সফল করতে আহ্বান জানান। তিনি মাসব্যাপী চলা এই কার্যসূচির বিভিন্ন অনুষ্ঠানকে উৎসবের ন্যায় উদযাপন করতে এবং জনগণকে এই অভিযানে অংশগ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করতে আহবান জানান। পাশাপাশি তিনি স্বাস্থ্য বিভাগের আশা সুপারভাইজারদের এই অভিযানে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে এবং পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন বিভাগের সখীদের অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করতে পরামর্শ দেন। তিনি ব্লক পর্যায়ে চলা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ফটো, ভিডিও এবং রিল তৈরি করে তা শেয়ার করতে বলেন। তিনি সমাজ কল্যাণ বিভাগকে বিভিন্ন এনজিও দের পক্ষ থেকে অপুষ্টি গ্রস্ত শিশুদের পুষ্টিকর যে কী প্রদান করা হয় তার ব্যবস্থা করতে ওই এনজিওগুলোর সাথে সমন্বয় রক্ষা করতে পরামর্শ দেন। তিনি চা বাগান এলাকাগুলোতে স্থানীয় নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গদের কে নিয়ে সচেতনতা মূলক সভা অনুষ্ঠিত করতে পরামর্শ দেন। এদিনের অনুষ্ঠানে জেলা সমাজ কল্যাণ বিভাগের পোষণ অভিযানের জেলা সমন্বয়ক সৈয়দ মেহেবুবুর রহমান পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে মাসব্যাপী কার্যসূচী তুলে ধরেন। এতে ১ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, সহযোগী বিভাগ এবং জনগণকে নিয়ে এই মাস পালনের সম্পর্কে ব্যানার, পোস্টার ইত্যাদি প্রদর্শন করার কার্যসূচী চলবে। ৮ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর চা বাগান, শহুরে বস্তি ও পার্বত্য এলাকাগুলিতে ১৪ থেকে ১৮ বছরের মেয়ে, শিশু, গর্ভবতী মহিলা, দুগ্ধ পান করানো মাতৃ ও অন্যান্য মহিলাদের অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা সনাক্তকরণে পরীক্ষা চিকিৎসা এবং এ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করা হবে। ১২ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর শিশুদের বিকাশ নিরূপণ করা হবে; এতে ব্লক পর্যায়ে অতি অপুষ্টিগ্রস্ত শিশুদের সনাক্তকরণ, স্বাস্থ্য বালক স্পর্ধার জন্য স্বাস্থ্যবান শিশুদের সনাক্ত করা হবে। এদিকে ১৭ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর মাতৃদুগ্ধ পান করানো নিয়ে আঙ্গনওয়াডি কর্মী ও সহায়িকারা শিবির করে পরামর্শ প্রদান এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পুষ্টিকর খাদ্যের প্রদর্শনীর মাধ্যমে গর্ভবতী মা, দুগ্ধ পান করানো মাতৃ ও শিশুদের পরিচর্যা প্রদানকারীদের মধ্যে সচেতনতা অভিযান চালানো হবে। এদিকে ১২ থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর থাকছে “পোষণ ভি পড়াই ভি”, এতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিশুদের তাদের অভিভাবক ও পরিচর্যাকারীদের সম্মিলিত করে বিভিন্ন পুষ্টিবর্ধক খেলাধুলা সম্পর্কে উৎসাহ এবং সাথে পুনব্যবহার যোগ্য সামগ্রী দিয়ে খেলনা প্রস্তুত ও প্রদর্শন এবং পরিবেশ রক্ষায় এক পেড় মা কে নাম এর অধীনে পরিবেশ রক্ষার শপথ নিয়ে বৃক্ষরোপণ করা হবে। এছাড়া ২৮ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর জল সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বাজরা ইত্যাদি পুষ্টিকর খাদ্য প্রতিযোগিতা, ওই একই সময়সীমা পোষণ ভাটিকা অভিযান চলবে এতে অঙ্গনওয়াডি কেন্দ্র বিদ্যালয় প্রাঙ্গন গ্রাম পঞ্চায়েত সংলগ্ন প্রাঙ্গন ও অন্যান্য স্থানে পুষ্টিকর বাগান, ঔষধি গুণসম্পন্ন জনপ্রিয় ভাটিকা গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি থাকবে পুষ্টির জন্য যোগা এবং আয়ুষ। এতে যোগা সেশন এবং অধিকতর পুষ্টির জন্য আয়ুস অভ্যাস ও সচেতনতা শিবির আয়োজন করা হবে। এদিনের অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এডিসি মিনার্ভা দেবী আরামবাম আগামী ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলতে থাকা স্বাস্থ্য বিভাগের কৃমিনাশক অভিযানের অধীনে ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত বালক বালিকাদের বিকাশ জড়িয়ে রয়েছে তাই এই কার্যসূচী সাথে সামঞ্জস্য রেখে কৃমিনাশক অভিযানও চালিয়ে যেতে আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি সমাজ কল্যাণ ও স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বয়ে প্রতিটি আইসিডিএস প্রকল্পের কর্মকর্তা, আঙ্গনওয়াডি সুপারভাইজার, কর্মী, সহায়িকা, আশা কর্মী, সুপারভাইজারদের পোষণ মাসের কার্যসূচিগুলি সফল করে তুলতে আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে স্কুলসমূহের পরিদর্শক মিলন জ্যোতি দাস ও জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের আরবিএসকে এর ডিসিও মনিষা রায় ঘোষ জেলায় পোষণ মাস সফল করতে তাদের বিভাগের পক্ষ থেকে সমন্বয় রক্ষা করে কিভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন। এদিনের অনুষ্ঠানে সব কয়টি আইসিডিএস প্রজেক্টের প্রজেক্ট আধিকারিক, সুপারভাইজার বিভিন্ন সহযোগী বিভাগের কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।