আগরতলা, ২০ আগস্ট : মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লি থেকে ফিরে রাজ্যের উদ্ভুত বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে এক পর্যালোচনা বৈঠক করেন। ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি লেনস্থিত ত্রিপুরা ইনস্টিটিউশন ফর ট্রান্সফরমেশন কার্যালয়ে চিফ মিনিস্টার ওয়ার রুমে এই পর্যালোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, গত দু’দিনব্যাপী ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বন্যার কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতির মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সবার সক্রিয় ভূমিকার উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, এটা রাজ্যবাসীর কাছে একটি কঠিন পরিস্থিতি। তাই বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিক ও বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যারা যুক্ত রয়েছেন তাদের সক্রিয় ভূমিকা খুবই প্রয়োজন।
সভায় রাজ্যের মুখ্যসচিব জে কে সিনহা সহ রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন, রাজস্ব দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, পূর্ত দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী সহ বিভিন্ন দপ্তরের সচিব এবং উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত আধিকারিকগণ বন্যা পরিস্থিতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সমস্ত তথ্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন।
পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা আধিকারিকদের কাছ থেকে বন্যা পরিস্থিতির বিস্তারিত খোঁজখবর নেন। মুখ্যমন্ত্রী বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পরিমাণে অংশগ্রহণের উপর জোর দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যেখানে জল বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে সেখানকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে দ্রুত নিয়ে যেতে হবে। শিবিরগুলিতে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের যাতে প্রয়োজনীয় খাদ্য ও ওষুধপত্রের অভাব না হয় সেদিকে নজর রাখার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। যেখানে উদ্ধার কাজের জন্য নৌকা ব্যবহৃত হচ্ছে সেখানে নৌকা আরও বেশি পরিমাণে প্রস্তুত রাখতে হবে। নৌকা দিয়ে উদ্ধার কাজের ক্ষেত্রে যাতে কোনও বাধার সম্মুখীন না হয় সেজন্য যথাযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, যারা এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় দিনরাত কাজ করে চলছেন তাদের শারীরিক সুস্থতা এবং নিরাপত্তার বিষয়টির দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। বন্যা পরিস্থিতি মিটে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উপর বিশেষ নজর দেওয়ার জন্যও গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া বন্যার ফলে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণের কাজ দ্রুত শুরু করার জন্যও মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন।
পর্যালোচনা সভায় রাজস্ব দপ্তরের সচিব রাজ্যে উদ্ভুত বন্যা পরিস্থিতির সর্বশেষ চিত্র মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরে জানান যে, সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির ফলে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।