নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ জুলাই: ঘনঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট সহ রাজ্যের বর্তমানে বিদ্যুৎ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎ দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ।
বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বৈঠকে আলোচ্য বিভিন্ন বিষয় এবং গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন টিএসইসিএল এর এমডি বিশ্বজিৎ বসু। সাংবাদিক সম্মেলনে বিস্তারিত বলতে গিয়ে তিনি জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী। এদিন বৈঠকে যাবতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করে সমস্যাগুলি সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি জানান বর্তমানে রাজ্যে বিদ্যুৎ-এর চাহিদা ৩০০ মেগাওয়াট থেকে ২২০ মেগাওয়াটের মধ্যে রয়েছে। যার ফলে মাঝেমধ্যে লোডশেডিং এর মাধ্যমে চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়াও বেশ কিছু জায়গায় ঘনঘন বিদ্যুৎ এর জন্য কিছু কারণ দেখা গিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ট্রান্সফরমার বিকল হওয়া। এছাড়াও সাবস্টেশনে গোলযোগ দেখা দেওয়ায় বিদ্যুতের সমস্যা দেখা দিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। এর জন্য ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে টিএস ই সি এল। ইতিমধ্যেই সমস্যাগুলোর সমাধানে সাবস্টেশনগুলিতে জরুরী সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কোন অভিযোগ আসলে সঙ্গে সঙ্গে যেন সেখানে সাধারণ জনগণকে পরিষেবা প্রদান করা যায় সেজন্য কর্মীরা ২৪ ঘন্টা তৎপর থাকবে সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, গোটা রাজ্যব্যাপী প্রায় কুড়ি হাজার ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফর্মার রয়েছে। কিছু কিছু ট্রান্সফরমার এরই মধ্যে পরিবর্তন করা হবে। পুজোর আগে বাকি ট্রান্সফরমার গুলিকে সমান্তরাল সংযোগ দিয়ে যুক্ত করা হবে।
এছাড়াও সঠিক সময় বিদ্যুৎ দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি আরো বৃদ্ধি পায়। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে বিদ্যুৎ দপ্তরের কল সেন্টারের কর্মী সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ দপ্তরের অ্যাপের মাধ্যমে জনগণকে তাদের অভিযোগ নথিভুক্ত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন ম্যানেজিং ডাইরেক্টর বিশ্বজিৎ বসু।
তিনি আরো জানান, আন্ডারগ্রাউন্ড বিদ্যুৎ লাইন চালু করার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। দুটি ধাপে এই কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিকে ঘনঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট সহ বিদ্যুৎ সম্পর্কিত বিভিন্ন অভিযোগ বৃদ্ধি পাওয়ার মূল কারণ হলো রাজধানী আগরতলা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের চাহিদা হু হু করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে পুরনো পরিকাঠামো সেই চাহিদা সামাল দিতে কিছুটা হিমশিম খাচ্ছে। সেই কারণেই বিদ্যুৎ সম্পর্কিত অভিযোগ বর্তমানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু ইতিমধ্যেই এই সমস্যা সমাধানে যাবতীয় পরিকাঠামো উন্নয়ন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী দেড় থেকে দু বছরের মধ্যেই এই সমস্যার সম্পূর্ণভাবে সমাধান হয়ে যাবে। বর্ধিত বিদ্যুৎ চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিদ্যুৎ পরিষেবার পরিকাঠামো আরো উন্নত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন টিএসইসিএল এমডি বিশ্বজিৎ বসু।