আগরতলা, ২৭ জুন: তীব্র দাবদাহে মিছিল এবং বিদ্যালয়ে নির্ধারিত সময়ের পরে আসার শাস্তির জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছে তেলিয়ামুড়ার মাইগঙ্গা সুকান্ত দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ে ৮ জন ছাত্রী। সাথে সাথে তাদেরকে তেলিয়ামুড়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অসুস্থ ছাত্রীদের মধ্যে রিতিকা দাস এবং কোয়েল বিশ্বাসের শারীরিক অবস্থার অবনতির হওয়ায় জিবি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। ওই ঘটনায় গোটা ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনার বিবরণে জানা গিয়েছে, তেলিয়ামুড়ার মাইগঙ্গা সুকান্ত দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ে একাধিক ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ,
আজ বৃহস্পতিবার প্রচন্ড দাবদাহের মধ্যে বিদ্যালয়ের ইকো ক্লাবের দায়িত্বে থাকা শ্যামলী দাস এবং মানিক চক্রবর্তী নামের দুই শিক্ষক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সর্বাণী ভট্টাচার্যের অনুমতি ক্রমে ছাত্রছাত্রীদের’কে নিয়ে পরিবেশ সচেতনতা মূলক মিছিল সংঘটিত করে। এই মিছিলটি দুপুর সাড়ে বারোটার থেকে শুরু হয়ে বিদ্যালয় চত্বর সহ সন্নিহিত এলাকা প্রদক্ষিণ করার পর যখন বিদ্যালয়ে আসে এর কিছুক্ষণ পর থেকেই ছাত্রছাত্রীরা কাতারে কাতারে অসুস্থ হতে থাকে। যদিও এর আগেও একাধিক ছাত্র-ছাত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
তাদের আরও অভিযোগ, বিদ্যালয়ে নির্ধারিত সময় অর্থাৎ প্রার্থনার পর কিছু ছাত্রছাত্রী বিদ্যালয়ে আসার শাস্তি স্বরূপ প্রধান শিক্ষিকা সর্বানি ভট্টাচার্যের নির্দেশ অনুযায়ী দ্বাদশ এবং দশম শ্রেণীর শ্রেণী শিক্ষক বা শিক্ষিকা ছাত্র-ছাত্রীদের প্রখর রৌদ্রের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখেন এবং ৭০ থেকে ৮০ বার করে কান ধরে উঠবস করান। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই যা হবার হয়েছে, কিছুক্ষণের মধ্যেই একাধিক ছাত্রী বিশেষ করে মাটির মধ্যে লুটিয়ে পড়তে থাকে। সাথে সাথে তাদেরকে অ্যাম্বুলেন্স করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে ইকো ক্লাবের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক এবং শিক্ষিকা মানিক চক্রবর্তী এবং শ্যামলী দাসের জানিয়েছেন, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল তাই রৌদ্রের মধ্যেই এই মিছিল করতে হয়েছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সর্বাণী ভট্টাচার্য দাবি করেছেন, আজকের আবহাওয়া ততটা গরম না থাকায় মিছিলের উদ্যোগে গ্রহণ করা হয়েছে। তাছাড়া, বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন শুরু হওয়ার পর কয়েকজন ছাত্রী শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। পর পর আরও ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। এদিন তিনি ছাত্রীদের শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির একাধিক সদস্য দাবি করেছেন, নিঃসন্দেহে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বৃহস্পতিবারের এই ভূমিকা নিন্দনীয় এবং কমিটির মিটিং-এর মধ্য দিয়ে আজকের ঘটনার তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।