নিজস্ব প্রতিনিধি, কমলপুর, ২৪ জুন: অদম্য ইচ্ছা শক্তি মানুষকে সাফল্যের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়। আর সেটাই প্রমাণ করে দিলেন অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক। কিছু করার আগ্রহ, মানসিকতা, চেষ্টা থাকলে বয়স বাধা হতে পারে না। তাইতো চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেও ৬৩ বৎসরের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কয়েক প্রজাতির ড্রাগন ফল চাষ করে প্রমাণ করে দিয়েছেন। তরুণ প্রজন্মের জন্য এক অনুকরণযোগ্য দৃষ্টান্ত তৈরি হয়েছে কমলপুরে।
কমলপুর শহরের মাদ্রাসা দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন মহকুমার সদরের ভট্টাচার্যী পাড়া এলাকার সমীর চক্রবর্তী । শহর এলাকায় পরিচিত মুখ এই শিক্ষক প্রায় চার বছর আগে চাকুরী থেকে অবসর নিয়েছেন । এরপর উনার সময় কাটছিল না । রোজগারও কমে গিয়েছিল । এই অবস্থায় উনার ভাগ্নে তথা রাজ্য প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তা পঙ্কজ চক্রবর্তীর পরামর্শে প্রায় আড়াই বছর আগে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন । বড়সুরমা তহশীল এলাকা সংলগ্ন পুরান বাড়িতে এক কানি জায়গার উপর পাঁচশোটি গাছ লাগিয়েছেন । এই বছর ফুল থেকে ফল ধরতে শুরু হয়েছে । উনার বাগানে দুই তিন ধরনের ড্রাগন ফলের প্রজাতি রয়েছে।
উনি জানান অনেক প্রজাতির ড্রাগন ফল রয়েছে । জাম্বু রেড ড্রাগন, মোরাক্কান রেফ ড্রাগন, শ্রীলঙ্কান রেড ড্রাগন, সিয়াম রেড ড্রাগন, ভিয়েতনাম কিং ড্রাগন এবং আরো কয়েক প্রজাতির ড্রাগন রয়েছে। বছরে সাত মাস ফল দেয় এই গাছগুলো। ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ফল দেয়না। সুখা মৌসুমে জৈব সার গাছের খাবার হিসাবে দিতে হয়। যেমন গোবর, খৈল, ভার্মি কম্পোস্ট সার এবং জল প্রদান করতে হয়।
রাত্রিবেলা ফুলের মধ্যে পরাগায়ন করলে ফল বড় আকারের হয় এবং ফল নষ্ট হবার চান্স থাকে না। ফলের মৌসুমে প্রতি রাতেই ফুল ফুটলে তিনি পরাগায়ন করে থাকেন। কারণ দিনের বেলা ফুল সূর্য ওঠার সাথে সাথে মুজে যায়। যত্ন বলতে ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে রক্ষা করতে হয় । আর অর্গানিক খাবার গাছগুলির বৃদ্ধি দ্রুত করে। চারা লাগানোর এক বছরের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে।অন্যদেরকে উৎসাহ প্রদান করার জন্য উনি উনার বাড়িতেও কিছু ড্রাগন ফলের গাছ লাগিয়েছেন।
নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে প্রাক্তন শিক্ষক সমীর বাবু জানান, ড্রাগন ফলের ভালো বাজার থাকলেও শিক্ষক মশাই নিজের বাড়ি থেকে দেড়শো দুইশ টাকা কিলো হিসাবে বিক্রি করছেন ফল । বাইরের কিছু ক্রেতা যোগাযোগ করছেন উনার সাথে ড্রাগন ফল কেনার জন্য। তিনি চাইছেন কর্মহীন যুবকরা এগিয়ে আসুক এই ব্যবসায় । এতে আর্থিক সমৃদ্ধি সম্ভব ।