জম্পুই পাহাড়ে ভূমিধসে জনজীবন বিপর্যস্ত, প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষোভ, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি

নিজস্ব প্রতিনিধি, কাঞ্চনপুর, ২৩ জুন: জম্পুই পাহাড়ে বসবাসকারী জনগণ জটিল সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। বসতবাড়ি কৃষি জমি রাস্তাঘাট স্কুল ইত্যাদি ধ্বসে পড়তে শুরু করেছে। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এক ধরনের ঘটনা ঘটে চললেও প্রশাসনের তরফ থেকে কার্যকরী কোন পদক্ষেপ কিংবা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার তেমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। তাতে ক্ষোভে ফুসছেন বিস্তীর্ণ এলাকার জনগণ।

টানা বর্ষণে ভূমি ধসে তলিয়ে যাচ্ছে জম্পুই পাহাড়ের শতাব্দী প্রাচীন ত্যালক্সী গ্ৰাম। সড়ক নির্মাণে প্রযুক্তিগত   ত্রুটির খেশারদ দিচ্ছে সাধারণ মানুষ।বসতবাড়ি হারিয়ে  গ্ৰামবাসীদের জীবন এখন দুর্বিসহ অবস্থা । চলতি মরশুমে বর্ষার জলে ইতিমধ্যেই চোদ্দটি পরিবার সর্বশান্ত হয়েছেন।গ্ৰামের যোগাযোগের  ব্যবস্থা এখন বিচ্ছিন্ন। নেই পানীয় জল। ভিলেজের ছাত্রছাত্রীদের জন্য একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাকা বাড়িতে দেখা দিয়েছে ফাটল। কৃষি প্রধান ভিলেজের ব্যাপকভাবে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ধসে তলিয়ে গেছে বহু কৃষি জমি  ।গ্ৰামবসীদের এই করুন পরিনতিতে দেখা নেই  প্রশাসনের। তাই অসহায় বাস্তহারাদের এই দুর্দিনে দীর্ঘ তালবাহনায় পর এবার দাবি আদায়ে মাঠে নামছে জম্পুই পাহাড়ের মিজো কনভেনশন।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ত্যালাক্সী গ্ৰামের জন্য সাহায্য চেয়ে আবেদন করছেন জম্পুই পাহাড়ের মিজো সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

কিন্তু সমস্যা সমাধান না হলে এবার আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সংগঠনের সদস্যরা। উল্লেখ্য ,এনএইচআইডিসিএল কাঞ্চনপুর থেকে মনপুই পর্যন্ত এনএইচ ৪৪(বর্তমানে ১০৮)প্যাকেজ ত্রি সড়ক নির্মাণের ফলে জম্পুই পাহাড়ের ত্যালক্সী  গ্ৰামে ভুমি ধস শুরু হয় ।গত বছর থেকে প্রবল বর্ষণে ভুমি ধসে তলিয়ে যাচ্ছে জম্পুই পাহাড়ের এক সময়ে কমলা উৎপাদনে প্রসিদ্ধ শতাব্দী প্রাচীন ত্যালক্সী গ্ৰাম। ইতিমধ্যে ভূমি ধসের ফলে গ্ৰামের চৌদ্দটি পরিবার বাস্তুহারা হয়েছেন । তাদের বসত বাড়ি ভূমিধসে তলিয়ে গেছে ।গ্ৰামে প্রবেশের মূল সড়কটিই বিচ্ছিন্ন ।গ্ৰামের উপার্জনের জন্য তৈরি  হেক্টর হেক্টর বাগানে ফসল নষ্ট হয়েছে। এমনকি গ্ৰামের মৃত ব্যক্তিদের কবর স্থান পর্যন্ত ভুমি ধসে ছিটকে পড়েছে । মিজো কনভেনশনের  অভিযোগ  বিগত বছরে ভুমি ধসের কারণে ত্যালক্সী গ্ৰামের   বাস্তু হারাদের ক্ষতি পুরনের জন্য একাধিকবার জেলা ও মহকুমা স্তরের আধিকারিকদের নিয়ে মিটিং করা হয়েছে ।

কিন্তু একাধিকবার কাঞ্চনপুর মহকুমা শাসকের অফিসে যোগাযোগ করেও কোন সাহায্য মেলেনি । এরমধ্যে চলতি বছরে টানা বর্ষণে ফের ভূমি ধসের কারণে সম্পুর্ন গ্ৰাম তলিয়ে যাচ্ছে ।গ্ৰামে প্রবেশর সড়ক ছিন্ন হয়ে গেছে । ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে গ্ৰামে পানীয় জল সরবরাহকরী পাইপ লাইন । সবথেকে করুন অবস্থা হয়েছে গ্ৰামের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দালান বাড়ী । বিদ্যালয়টি যেকোনো সময় ভেঙ্গে পড়তে  পারে । কিন্তু এমন দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় প্রশাসনের কোন হেলদোল নেই । যেভাবে ভূমি ধসে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে তাতে যে কোন সময় সম্পুর্ন গ্ৰামই তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে । এমনকি নবনির্মিত সড়কটি ও তলিয়ে যেতে পারে । অথচ কোন অজ্ঞাত কারণে প্রশাসনের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না । প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় ক্ষুব্ধ জম্পুইবাসী।  তাই শেষবারের মতো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছেন । অন্যথায় আদালতে মামলা করেন ক্ষতিপূরণের জন্য । কেননা নির্মাণ সংস্থার প্রযুক্তিগত ত্রুটির জন্যই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে । তাই নির্মাণ সংস্থা ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য বলে দাবি করেন গ্ৰামবাসীরা।