নয়াদিল্লি, ২৪ মে ২০২৪৷৷বঙ্গোপসাগরে আসন্ন ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতি পর্যালোচনা করতে শুক্রবার ক্যাবিনেট সচিব শ্রী রাজীব গৌবার সভাপতিত্বে জাতীয় সঙ্কট ব্যবস্থাপনা কমিটির (এনসিএমসি)বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের মহানির্দেশক জানিয়েছেন, বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পশ্চিমবঙ্গের ক্যানিং থেকে ৮১০ কিলোমিটার দক্ষিণে মধ্য বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপটি বর্তমানে অবস্থান করছে৷ এটি উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আরও ঘনীভূত হয়ে ২৫ মে রাতে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এরপর এটি প্রায় উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ২৬ মে মধ্যরাত নাগাদ সাগর দ্বীপ ও খেপুপাড়ার মধ্যবর্তী বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করবে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব ঘূর্ণিঝড়ের প্রত্যাশিত পথে জনসাধারণের সুরক্ষার জন্য যে সমস্ত প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে কমিটিকে অবহিত করেছেন। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে এবং যারা সমুদ্রে রয়েছেন তাদের নিরাপদ বার্থে ডাকা হয়েছে। জেলা কন্ট্রোল রুমগুলিকেও সক্রিয় করা হয়েছে এবং পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র, বিদ্যুৎ সরবরাহ, ওষুধ ও জরুরি সেবা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) ১২টি দল মোতায়েন করেছে এবং পাঁচটি অতিরিক্ত দলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জাহাজ ও বিমানসহ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও উপকূল বাহিনীর উদ্ধার ও ত্রাণ কাজের জন্য পৃথক দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জাহাজ পরিবহন সংক্রান্ত মহানির্দেশকের কার্যালয় থেকে কলকাতা ও পারাদ্বীপ বন্দরে নিয়মিত সতর্কতা ও পরামর্শ পাঠানো হচ্ছে|। বিদ্যুৎ ব্যবস্থার তাৎক্ষণিক পুনরুদ্ধারের জন্য বিদ্যুত মন্ত্রক থেকে কর্তৃক জরুরি দল মোতায়েন করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সংস্থা এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রস্তুতি ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে ক্যাবিনেট সচিব রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রতিরোধমূলক ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই দুর্যোগে যেন প্রাণহানি শূন্যের কোঠায় রাখা যায় এবং বিদ্যুৎ ও টেলিকমের মতো সম্পত্তি ও পরিকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যায় এবং ক্ষতির ক্ষেত্রে সম্ভাব্য স্বল্পতম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলি পুনরুদ্ধার করার সম্ভব হয় তার উপর জোর দিয়েছেন তিনি।
ক্যাবিনেট সচিব বলেন, সমুদ্রে থাকা জেলেদের ফিরিয়ে আনতে হবে এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সময়মতো সরিয়ে নিতে হবে। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে বড় হোর্ডিং বসানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন। ক্যাবিনেট সচিব পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে আশ্বস্ত করেছেন যে সমস্ত কেন্দ্রীয় সংস্থা সম্পূর্ণ সতর্ক রয়েছে এবং সহায়তার জন্য প্রস্তুত থাকবে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব, বিদ্যুৎ, টেলিকম, বন্দর জাহাজ চলাচল ও জলপথ, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস এবং মৎস্য দপ্তরের সচিব ছাড়াও জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সদস্য সচিব, চিফ অফ ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্স স্টাফ টু চেয়ারম্যান, চিফ অফ স্টাফ কমিটি (সিআইএসসি), ভারত আবহাওয়া দফতরের মহানির্দেশক, জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনীর মহানির্দেশক, কোস্টগার্ডের মহানির্দেশক এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।