BRAKING NEWS

বড়ঞা ও রানাঘাটে আয়োজিত জনসভায় কংগ্রেস-তৃণমূলের দেশবিরোধী মানসিকতাকে নিশানা নাড্ডার

বড়ঞা/ রানাঘাট ২৮ এপ্রিল (হি.স.): ভারতীয় জনতা পার্টির জাতীয় সভাপতি, শ্রী জগৎ প্রকাশ নাড্ডা, রবিবার পশ্চিমবঙ্গের বড়ঞা এবং রানাঘাটে আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময়, কংগ্রেস এবং টিএমসির দেশবিরোধী মানসিকতাকে সামনে তুলে ধরেন। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি রাজ্য সভাপতি শ্রী সুকান্ত মজুমদার, রাজ্য সহ-সভাপতি শ্রী সঞ্জয় সিং, বহরমপুর লোকসভার প্রার্থী শ্রী নির্মল কুমার সাহা এবং রানাঘাটের প্রার্থী শ্রী জগন্নাথ সরকার এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।

শ্রী নড্ডা বলেন, যে পশ্চিমবঙ্গের আজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাওয়া উচিত ছিল, মমতার শাসনে দুর্নীতি, তোলাবাজি এবং অপশাসনের কারণে এগিয়ে যেতে পারেনি এবং রাজ্যের উন্নয়ন থেমে গেছে। বাংলা সম্পর্কে বলা হয় যে, বাংলা আজ যা ভাবে, দেশ কাল তা ভাবে। বাংলাকে দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজ্যগুলির মধ্যে গণ্য করা হয়েছিল কিন্তু মমতা সরকারের অপশাসনের জন্য বাংলার আজ বদনাম হয়ে গেছে। বিজেপি যেখানে শক্তিশালী সরকারের কথা বলে, মমতা অসহায় সরকারের কথা বলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন একটি সরকার সম্পর্কে কথা বলেছেন যেটির তোষামদের, বৈষম্য এবং সন্ত্রাসীদের প্রতি নরম হওয়া এবং তাদের সহানুভূতির সাথে দেখার কথা বলে। অন্যদিকে, মোদীজির নেতৃত্বে শক্তিশালী বিজেপি সরকার আমাদের দেশের দিকে খারাপ নজর দেওয়া পাকিস্তানকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক দিয়ে জবাব দেয়। ইউপিএ শাসনের সময় কাশ্মীর থেকে সন্ত্রাসীদের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এবং এটি ছিল একটি অসহায় সরকারের উদাহরণ। ডঃ শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি এক দেশে দুই চিহ্ন, দুই প্রধান ও দুই সংবিধানের প্রতিবাদে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন এবং শক্তিশালী বিজেপি সরকার ৩৭০ ধারা অপসারণ করে এবং কাশ্মীরকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ করে তার আত্মত্যাগকে অর্থবহ করেছে। মমতা ও ইউপিএ-র শাসনকালে সরকারে প্রতিদিন দুর্নীতি হতো। টিএমসি নেতাদের বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে এবং শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি হয়েছে। এই সমস্ত স্ক্যামাররা একটি অসহায় সরকার চেয়েছিল, কিন্তু মাননীয় মোদীজির নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সরকার চলে এবং গত ১০ বছরে কোনও কেলেঙ্কারি ঘটেনি।

মাননীয় জাতীয় জাতীয় সভাপতি বলেন যে আজ আমেরিকা, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানের মতো উন্নত দেশগুলির অর্থনৈতিক অবস্থা নড়বড়ে, কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে একমাত্র ভারতই একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র যা দশম স্থান থেকে লাফিয়ে পঞ্চম স্থান অর্জন করেছে এবং মোদীজি যদি তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হন, তাহলে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। আজ ভারত সব ক্ষেত্রেই এগিয়ে। আজ আমরা অটোমোবাইল খাতে জাপানকে ছাড়িয়ে তৃতীয় স্থানে দাঁড়িয়েছি। সবচেয়ে সস্তা এবং কার্যকর ওষুধ তৈরিতে ভারত দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ভারত বর্তমানে ১৩৮ শতাংশ বৃদ্ধির সাথে বিশ্বের বৃহত্তম রফতানিকারক। পেট্রোকেমিক্যালে ভারতের রফতানি ১০৬ শতাংশ বেড়েছে। আমরা আগে চিন থেকে যে খেলনা আমদানি করতাম সেগুলির ক্ষেত্রে ভারত এখন তৃতীয় স্থানে এসেছে। ১০ বছর আগে, আপনার মোবাইলে লেখা ছিল মেড ইন কোরিয়া, মেড ইন চায়না এবং মেড ইন জাপান, কিন্তু আজ আপনার সমস্ত মোবাইলে লেখা মেড ইন ইন্ডিয়া এবং এটইা মাননীয় মোদীর নেতৃত্বে পরিবর্তনশীল ভারত।

শ্রী নাড্ডা বলেন যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে গত ১০ বছরে দেশে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রভূত উন্নত হয়েছে। ৫৫ হাজার কিলোমিটার নতুন রাস্তা নির্মাণ হয়েছে এবং ৫১ হাজার কিলোমিটার নতুন রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। বিজেপি সরকার গ্রামের উন্নয়ন, দরিদ্র, বঞ্চিত, নিপীড়িত, শোষিত যুবক, মহিলা ও কৃষকদের শক্তিশালী করা হয়েছে। ২ লক্ষেরও বেশি পঞ্চায়েতে পাকা রাস্তা হয়েছে এবং ১.৫ লক্ষেরও বেশি গ্রাম অপটিক্যাল ফাইবার দ্বারা যুক্ত হয়েছে। কংগ্রেস শাসনকালে একটি পঞ্চায়েতের উন্নয়নের জন্য মাত্র ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হতো। কিন্তু এখন বিজেপি সরকার একটি পঞ্চায়েতের উন্নয়নের জন্য প্রতি বছর ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করছে। প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের ৬ কোটি মানুষ এবং সারা দেশের ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন সরবরাহ করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পাঠানো জনগণের চালও তৃণমূলের চালচোর নেতারা খেয়ে নেয়। প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির মাধ্যমে বিজেপি সরকার প্রতি বছর পশ্চিমবঙ্গের ৪০ লক্ষ কৃষক সহ ১১ কোটি ৭৮ লক্ষ কৃষকের অ্যাকাউন্টে সরাসরি ৬ হাজার টাকা পাঠাচ্ছে। মমতা সরকার এই কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে ৭০ লক্ষ কৃষককে বঞ্চিত করেছিল। কিন্তু বিজেপি সরকারের চাপ দিতে তখন কৃষকরা এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে ৪ কোটি পাকা বাড়ি তৈরি করা হয়েছে, যার মধ্যে ৫২ লক্ষ বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে তৈরি হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের দ্বারা বরাদ্দ বাজেটের হিসাব পেশ করেননি, তবুও বিজেপি সরকার রাজ্যের দরিদ্রদের জন্য একটি পাকা বাড়ি তৈরি করে দিয়েছে। বিজেপি সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, মোদী সরকার তৃতীয়বারের মতো গঠিত হলে, প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনা আগের মতোই চলবে।

মাননীয় জাতীয় সভাপতি বলেন যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জি আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের জনগণকে ৫ লক্ষ টাকা করে বিনামূল্যের স্বাস্থ্য বীমা দিতে চান, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গে এই প্রকল্পটি কার্যকর হতে দেননি। আগামী নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনগণ। তৃতীয় মেয়াদে মোদী সরকার ৭০ বছরের বেশি বয়সী প্রতি বয়স্কদের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিজেপি সরকার সারা দেশের বিকাশ করছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীও পশ্চিমবঙ্গের প্রতি ন্যায়বিচার করেছেন। বিজেপি সরকার পশ্চিমবঙ্গকে দেওয়া অনুদান ২৬৮ শতাংশ বাড়িয়েছে। স্মার্ট সিটি উদ্যোগের অধীনে কলকাতার উন্নয়নের জন্য ৯৪০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে এইমস এবং ১১টি মেডিকেল কলেজ তৈরি করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার ১১ কোটি বাড়িতে জল সংযোগ দিয়েছেন, যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ৬১ লক্ষ নতুন জল সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

শ্রী নাড্ডা বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মা, মাটি, মানুষের কথা বলে ক্ষমতায় এসেছিলেন, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে মহিলারাই নিরাপদ নয়। সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতন হলেও মমতা ব্যানার্জি শাহজাহান শেখকে রক্ষা করেছেন, সেজন্যই মা-এর সাথে মমতার কোন সম্পর্ক নেই। তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা গরিবদের জমি দখল করে নিয়েছে আর এটাই মাটির প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আনুগত্যর পরিচয়। এটা আসলে পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। পশ্চিমবঙ্গে কমিশন ছাড়া কোনো কাজ হয় না এবং এখানে চরম তোলাবাজি। তৃণমূলের বন্ধু কংগ্রেস জনগণের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের পক্ষ নেয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশ থেকে নির্যাতিত হিন্দু ও খ্রিস্টান উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিরোধিতা করেন, কিন্তু অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের প্রতি সহানুভূতি দেখান। কংগ্রেস এসসি, এসটি এবং ওবিসি-র সংরক্ষণ কমিয়ে ধর্মের ভিত্তিতে একটি বিশেষ শ্রেণিকে সংরক্ষণ দিয়ে তাদের ভোটব্যাঙ্ককে খুশি করতে চায়। কংগ্রেস, টিএমসি এবং সিপিএম সবাই সমান। এই তিন দল দেশকে দুর্বল করার সব চেষ্টা করে। শ্রী জগৎ প্রকাশ নাড্ডা টিএমসি এবং কংগ্রেসকে সবক শিখিয়ে স্থানীয় বিজেপি প্রার্থীদের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে বিজয়ী করে আবার মোদী সরকার গঠনের আবেদন জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *