আগরতলা, ১ মার্চ: ত্রিপুরা বিধানসভায় আজ ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের ২৭৮০৪.৬৭ টাকার বাজেট পেশ করেছেন অর্থ মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়। যা গত অর্থবছরের বাজেট থেকে ৮.৪৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অর্থবছরে বাজেটে মূলধন ব্যয় অনুমান করা হয়েছে ৬৬৩৩.৮০ কোটি টাকা, যা ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরের বাজেট তুলনায় ২৩.৮০ শতাংশ বৃদ্ধি প্রতিফলিত করে। ত্রিপুরা সরকার জনমুখী এবং আত্মনির্ভর মুখী বাজেট পেশ করেছে। আজ সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন অর্থ মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়।
এদিন তিনি বলেন, রাজ্যের বাজেট অন্তর্ভুক্তিমূলক, ভবিষ্যৎভিত্তিক এবং প্রবৃদ্ধিমুখী। নারী, ছাত্র, যুবক, ট্রান্সজেন্ডার, জনজাতি, তফশিলী জাতি, ওবিসি, সংখ্যালঘু, কর্মচারী, পেনশনভোগী এবং সামগ্রিকভাবে জনসাধারণের জন্য বাজেটে কিছু না কিছু রয়েছে। রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি অত্যন্ত উচ্চ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজস্ব কর ৩,৭৪৮ কোটি টাকা অনুমান করা হয়েছে এবং কর ব্যতীত রাজস্ব ৪৭৫ কোটি টাকা ধরা হয়েছে।
এদিন তিনি আরও বলেন, বাজেটে কৃষি খাতে ১৭২১.৯৪ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে। যা ২০২৩-২৪ সালের তুলনায় ১৯.৮৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজেট ২০২৩-২৪ সালের তুলনায় ১১.৫৪ শতাংশ বৃদ্ধি সহ শিক্ষা খাতে ৫৫০৮.৬৩ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ করেছে। স্বাস্থ্য খাতের জন্য ১৭২৬.২৩ কোটি। দুইটি নতুন কৃষি উপ-বিভাগ, একটি উত্তর ত্রিপুরার যুবরাজনগরে এবং আরেকটি পশ্চিম ত্রিপুরার পুরাতন আগরতলায় খোলা হবে।
১০.০০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজ্য কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, অরুন্ধতী নগরে একটি ‘অবশিষ্ট পরীক্ষার ল্যাব’ এবং একটি ‘জীবাণু প্লাজম সংরক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। তাছাড়া, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের মধ্যে ২৩.৭১ টাকা ব্যয়ে আটটি নতুন কৃষি উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।
২১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে। উদয়পুরে বেসরকারি উদ্যোগে মাতা ত্রিপুরাসুন্দরী উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। আইজিএম এবং জিবি হাসপাতাল কমপ্লেক্স দুইশো শয্যা বিশিষ্ট মাল্টি কেয়ার হেলথ ইউনিট তৈরি করা হবে। ৪০০জন তপশিলি জাতি ছাত্রদের প্রতি ছাত্র প্রতি ১ লক্ষ টাকা এককালীন আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। তার জন্য ব্যয় হবে ৮.০০ কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী জন বিকাশ কার্যক্রমের অধীনে বিভিন্ন সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রামে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে এবং তার জন্য বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে ৩৫ কোটি টাকা। ৭৭টি নতুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
৫০টি আসনের এসটি গার্লস হোস্টেল এবং ৫০টি আসনের এসটি বয়েজ হোস্টেল নির্মাণ করা হবে। রাজ্য সরকার টিটিএএডিসি কে মোট ৬৯৮.৬৮ কোটি টাকা দেওয়া হবে। এছাড়াও, রাজ্য সরকার জনজাতি ভাই ও বোনদের কল্যাণে মোট উন্নয়ন বরাদ্দের ৩৯.৯৩ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়েছে। ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে রাজ্য সরকার সমস্ত বিডিও-কে নতুন যানবাহন সরবরাহ করবে । রাজ্য সরকার স্যানিটেশনের উপর জোর দিচ্ছে। নারী ও শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত পাবলিক বিশ্রামাগার তৈরির জন্য বিভিন্ন শহরের বিভিন্ন স্থানে ৮৫টি গোলাপী টয়লেট নির্মাণ করা হবে বলে জানান তিনি।