মালিগাঁও, ২৭ জানুয়ারি : উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পক্ষ থেকে উপযুক্ত পদ্ধতিতে ৭৫তম প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করা হয়। মালিগাঁওয়ে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে ক্রীড়া সংস্থা কমপ্লেক্সে কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। রেলওয়ে আধিকারিক ও তাদের পরিবারবর্গের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে পতাকা উন্মোচন করেন উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার শ্রী চেতন কুমার শ্রীবাস্তব। আরপিএফ, টেরিটোরিয়াল আর্মি, সিভিল ডিফেন্স এবং ভারত স্কাউটস ও গাইডসের দ্বারা অনুষ্ঠিত মার্চ-পাস্ট পরিদর্শন করেন জেনারেল ম্যানেজার।
এছাড়াও প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পাঁচটি ডিভিশনেই যথা তিনসুকিয়া, লামডিং, রঙিয়া, আলিপুরদুয়ার ও কাটিহারে পালন করা হয়। ডিভিশনগুলিতে রেলওয়ে আধিকারিকদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা উন্মোচন করেন সংশ্লিষ্ট ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজাররা।অনুষ্ঠানে ভাষণ প্রসঙ্গে জেনারেল ম্যানেজার রেলওয়ের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে বহু প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও সম্ভাব্য সর্বোত্তম উপায়ে নিজেদের দায়িত্ব পালন করা সমস্ত আধিকারিক ও কর্মীদের অভিনন্দন জানান।এছাড়াও তিনি বিগত কয়েকমাসে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের অর্জিত কর্মদক্ষতা সম্পর্কেও সংক্ষিপ্ত আকারে আলোকপাত করেন।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে রোগীদের সুবিধার্থে মালিগাঁওয়ের কেন্দ্রীয় চিকিৎসালয়ে সম্প্রসারিত ও পুননির্মিত ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট এবং পুননির্মিত মেজর অপারেশন থিয়েটার কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার শ্রী চেতন কুমার শ্রীবাস্তব। এনএফআরডব্লিউডব্লিউও-এর প্রেসিডেন্ট শ্রীমতি শালিনী শ্রীবাস্তব মালিগাঁওয়ের কেন্দ্রীয় চিকিৎসালয়ে আয়ুষ ও আরইএলএইচএস ক্লিনিকের উদ্বোধন করেন।
জেনারেল ম্যানেজার উল্লেখ করেন যে ২১ জোড়া ট্রেনে স্থায়ীভাবে ১১৫টি অতিরিক্ত কোচ সংযুক্ত করা হয়েছে, যার ফলে ৭৮১২টি বার্থ সংযোজন হয়েছে। ৮ জোড়া ট্রেনে ৯৬৬টি কোচ অস্থায়ীভাবে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং যাত্রীদের অতিরিক্ত ভিড় হ্রাস করতে স্পেশাল ট্রেনের ৫৬৫ ট্রিপ চালানো হয়েছে। যাত্রীদের দাবি পূরণের লক্ষ্যে ২০টি স্টেশনে নতুন স্টপেজ প্রদান এবং হস্পিটালিটি খণ্ডকে চাঙ্গা করতে ১৪টি কোচ রেস্টুরেন্ট চালু করা সম্পর্কেও তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়াও তিনি উল্লেখ করেন যে ২০২২-এর ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ২৪.১৯ মিলিয়ন টনের তুলনায় ২০২৩-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৫.১২ মিলিয়ন টন পণ্যসামগ্রী আনলোড করা হয়েছে, যার বৃদ্ধি হয়েছে ৩.৮৪ শতাংশ। এছাড়া ৩২টি স্টেশনে ট্রেন ইন্ডিকেশন, কোচ ইন্ডিকেশন বোর্ড এবং প্যাসেঞ্জার ইনফর্মেশন সিস্টেম এখন চালু করা হয়েছে এবং পণ্য ট্রাফিকের পাশাপাশি অতিরিক্ত ট্রাফিক পরিচালনার জন্য ১১টি নতুন টার্মিনেল খোলা হয়েছে এবং ৩৮টি গুডস টার্মিনালে দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টা কাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান জেনারেল ম্যানেজার।
সুরক্ষা ও পরিচালনা দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে, জেনারেল ম্যানেজার আরও উল্লেখ করেন যে সময়ানুবর্তিতা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ৭২টি মেল/এক্সপ্রেস ট্রেনের গতি বাড়ানো হয়েছে। ৫৮টি স্টেশনে অটোমেটিক ফায়ার ডিটেকশন ও অ্যালার্ম সিস্টেম চালু করা হয়েছে এবং ৮২৫টি এলএইচবি কোচে, ১৪৭টি পাওয়ার কারে এবং ৬৮টি প্যান্ট্রি কারে আগুন প্রতিরোধী ব্যবস্থা প্রদান করা হয়েছে। জেনারেল ম্যানেজার আরও বলেন যে ইনট্রুশন ডিটেকশন সিস্টেমের অধীনে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের অন্তর্গত ১৪১ কিমি ব্লক সেকশন আওতাভুক্ত করা হয়েছে এবং ২০১৭ সাল থেকে ১৬৮৭টি হাতির প্রাণ রক্ষা করা হয়েছে।
নিজের ভাষণে জাতীয়/আন্তর্জাতিকস্তরে সুনাম অর্জন করা উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের ক্রীড়াবিদদের সম্পর্কে জেনারেল ম্যানেজার বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। কমনওয়েল্থ ওয়েটলিফ্টিং চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণকারী এবং সোনার পদক জয়ী উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের ক্রীড়াবিদ পপি হাজরিকা এবং নিরুপমা দেবীর কৃতিত্ব সম্পর্কে উল্লেখ করেন তিনি। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে পদকজয়ী উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের সাইক্লিস্ট, অ্যাথলেটিক্স ও সাঁতারুদের কৃতিত্ব সম্পর্কেও উল্লেখ করেন।
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে উইমেন’স ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের সদস্যরা মালিগাঁওস্থিত কেন্দ্রীয় চিকিৎসালয়ে ভর্তি থাকা রোগীদের মধ্যে প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করেন।

