হাফলং (অসম), ৬ জানুয়ারি (হি.স.) : উত্তর কাছাড় পার্বত্য (উকাপা) স্বশাসিত পরিষদের নির্বাচনের মুখে সেমখর আসনের নির্দল প্রার্থী হিরোজিৎ জিডুংয়ের সক্ৰিয় কর্মী থাওপ্রি হাফলংবারকে শুক্রবার রাতে কতিপয় দুষ্কৃতী অপহরণ করেছে। মাইবাঙে নিজের বাড়ি থেকে শুক্রবার রাত প্ৰায় ১২টা নাগাদ থাওপ্রি হাফলংবারকে তুলে নিয়ে গেছে ডিমা হাসাও পুলিশের দল।
থাওপ্রি হাফলংবারের স্ত্রী আজ শনিবার সংবাদ মাধ্যমকে এ ব্যাপারে জানিয়েছেন, গতকাল রাত প্রায় ১২টা নাগাদ তাঁদের বড়ির গেট ভেঙে প্রবেশ করে পুলিশের পোশাকধারী কতিপয় দুষ্কৃতী। এর পর তারা ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে বন্দুকের নলের মুখে তুলে নিয়ে যায়। ঘর থেকে জোর করে থাওপ্রিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ তার মা ও স্ত্রীর সঙ্গে অভব্য আচরণ করে বলেও সাংবাদ মাধ্যমকে জানান তিনি।
হাফলংবারের স্ত্রী বলেন, তার স্বামীকে যখন উগ্রপন্থী দলের মতো বন্দুকের নলের মুখে পুলিশ তুলে নিয়ে যায় তখন তিনি তাদের জিজ্ঞেস করেন তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে? তখন তারা নাকি জানায়, ডিমা হাসাও জেলার পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মাইবাং থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
তার পর রাতেই থাওপ্রি হাফলংবারের স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যরা মাইবাং থানায় যান। পুলিশ তাদের থানায় ঢুকতে না দিয়ে বলেন থাওপ্রি মাইবাং থানায় নেই। তাকে হাফলং নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশের ওই বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে থাওপ্রির স্ত্রী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আজ থেকে দু-তিনদিন আগে তাদের বাড়িতে গিয়ে কতিপয় দুষ্কৃতী শাঁসিয়ে আসে, থাওপ্রি হাফলংবার যাতে সেমখর আসনের নির্দল প্রার্থী হিরোজিৎ জিডুংয়ের হয়ে কাজ না করে। না-হলে ২০২১ সালে হারাঙ্গাজাওয়ের সন্তোষ হোজাইয়ের সঙ্গে যে ঘটনা সংগঠিত হয়েছিল, থাওপ্রি হাফলংবারের সঙ্গে একই ঘটনা ঘটতে পারে।
থাওপ্রির স্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত তার স্বামীর কোনও খবর নেই। তবে তার স্বামীর সঙ্গে যদি কোনও অঘটন ঘটে তা-হলে এর জন্য দায়ী থাকবেন ডিমা হাসাও জেলাপ পুলিশ সুপার।
এদিকে সেমখর আসনের নির্দল প্রার্থী হিরোজিৎ জিডুং বলেন, আগামী ৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের আগে সেমখরে আশান্তির সৃষ্টি করতে চাইছে কিছু দুষ্কৃতকারী। তাঁর অভিযোগ, সরকারি প্রশাসন যন্ত্রকে ব্যবহার করে দুষ্কৃতকারীরা সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাইছে। এভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ভোটে জিততে চাইছে বিজেপি।
এই অভিযোগ তুলে হিরোজিৎ জিডুং বলেন, পুলিশ সেমখর গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষকে মারপিট করছে, গুলি চালাচ্ছে, এমন-কি তাঁর কর্মীদের জোর করে পুলিশ তুলে নিয়ে যাচ্ছে। তাঁর ইলেকশন এজেন্ট ও পোলিং এজেন্টদের সেমখরে ঢুকতে পর্যন্ত দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করে বলেন, পরিষদের সেমখর আসনে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করাতে তিনি জেলা প্রশাসন সহ রাজ্যের নির্বাচন কমিশনকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ এভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বিজেপি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিতে চাইছে বলে অভিযোগ করেন সেমখর আসনের নির্দল প্রার্থী হিরোজিৎ জিডুং।