নয়া যানবাহন সংক্রান্ত আইনের বিরুদ্ধে ট্রাক চালকদের বিক্ষোভ উদয়পুরে, উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে মোতায়েন করা হয় সিআরপিএফ জওয়ান

নিজস্ব প্রতিনিধি, উদয়পুর, ৪ জানুয়ারি : কেন্দ্রীয় সরকার এবং ভারতীয় মজদুর সংঘ আশ্বস্ত করা সত্ত্বেও ধর্মঘট এখনো প্রত্যাহার করেনি যানবাহনের চালকরা। বিষয়টি নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। দেশজুড়ে ধর্মঘট তুলে নেওয়া হলেও আন্দোলন থেকে পিছু হটছে না গাড়ি চালকরা। গোটা দেশের সাথে রাজ্যেও দিকে দিকে শুরু হয়েছে এই আন্দোলন। এর নেপথ্যে রয়েছে ভারতীয় দন্ড সংহিতার নয়া আইন।

ব্রিটিশ আমলে তৈরি ইন্ডিয়ান পেনাল কোড বাতিল করে কার্যকর করা চেষ্টা হয়েছিল দন্ড সংহিতা। পথ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে নতুন সাজার ব্যবস্থা করা হয়েছে সেখানে। এতে বলা হয়েছে দুর্ঘটনায় কারোর মৃত্যু পর যদি গাড়ি চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় তাহলে সাত থেকে ১০ বছর সাজা হবে তার। সাত লক্ষ টাকা জরিমানাও গুনতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে না জানালেও এ সাজার মুখে পড়বে গাড়ি চালকরা।

অথচ আগে হিট অ্যান্ড রানের ঘটনায় আলাদা করে কোন শাস্তির উল্লেখ ছিল না। পথ দুর্ঘটনার কারণে কারোর মৃত্যু হলে দোষীর সর্বোচ্চ ২ বছরের জেলের সাজা হতো। জরিমানার শাস্তিও অনেক ক্ষেত্রে দেওয়া হতো। কিন্তু নতুন দন্ড সংহিতার হিট অ্যান্ড রাণ আইনে চালকদের ভিলেন বানানো হয়েছে বলে দাবি তুলে এই আন্দোলন মুখী হচ্ছে যান চালকরা।

বৃহস্পতিবার উদয়পুরে অল ড্রাইভার ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ফ্ল্যাগ নিয়ে পুলিশের অনুমতি ছাড়া মাতাবাড়ি থেকে ট্রাক চালকেরা হঠাৎ এক মিছিল বের করে। লক্ষ্য ছিল এই মিছিল টেপানিয়াতে গিয়ে শেষ হবে। এর মধ্যে মিছিলে থাকা একটি অটোরিকশা চালক আক্তার হোসেনকে আক্রমণ করে বলে অভিযোগ। এ নিয়ে মিছিলে আসা ট্রাক চালকদের মধ্যে দেখা দেয় উত্তেজনা।
 এর মধ্যে পুলিশ মিছিলটিকে আটকানোর জন্য চেষ্টা করে। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়াতে ডাকা হয় সিআরপিএফ ও টিএসআর জওয়ানদের। তারা এসে উদয়পুর – সাব্রুম জাতীয় সড়কে‌র পাশে রাজর্ষি কলাক্ষেত্রের সামনে মিছিলটি আটকে দেয়। সেখানে চলে বিক্ষোভ।

বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে নন্দন‌ দাশ‌‌ নামে এক পরিবহন শ্রমিক বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের এই কালো আইন গাড়ি চালকরা মানবে না।কেন্দ্রের নয়া আইনের অধীনে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে হিট অ্যন্ড রান সংক্রান্ত মামলায়। দশ‌ বছর পর্যন্ত জেল এবং সাত লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে। এর প্রতিবাদেই এই বিক্ষোভ কর্মসূচি।

 তাদের আরো বক্তব্য দুর্ঘটনার পর গাড়ির চালকরা সুরক্ষিত থাকে না। তাদের এসে স্থানীয়রা মারধর করে। আগুন লাগিয়ে গাড়ি পুড়ে দেয়। তাই গাড়ির চালকদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করতে হবে সরকারকে। এবং গৃহীত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে বলে দাবি জানান গাড়ি চালকরা। এদিকে আহত অটোরিকশা চালক আক্তার হোসেনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।