শান্তিনিকেতন, ৫ ডিসেম্বর (হি. স.) পৌষমেলার দাবিতে বিক্ষোভ বাংলা সংস্কতি মঞ্চ ও ব্যবসায়ী সমিতির৷ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনের বলাকা গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে চলে বিক্ষোভ। যদিও, কার্যালয়ে ছিলেন না ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সহ কর্মসচিব। প্রসঙ্গত, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট যৌথ ভাবে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিল এবারও হচ্ছে না ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা।
সোমবারই কর্মসমিতির বৈঠকের পর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট জানিয়ে দেয় ইচ্ছা থাকলেও এ বছরও পৌষমেলার আয়োজন করা যাচ্ছে না। কারণ হিসাবে দেখানো হয় সময়ের অভাব এবং অনলাইন সংক্রান্ত কাজের জটিলতাকে। তার আগে পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে ছোট করে পৌষমেলার আয়োজন হবে বলে জানিয়েছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যা নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সকলে৷
মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করার চেষ্টা চলে। গেটের সামনে বিক্ষোভ চলছিল। বিক্ষোভকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে কথা বলতে চান। কিন্তু তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।তাতে আরো ও উত্তেজিত হয়ে ওঠে আন্দোলনকারীরা। বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে শান্তিনিকেতন এলাকা। বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ, বোলপুরের ব্যবসায়ী সমিতি এবং হস্তশিল্প সমিতির সদস্যদের লাগাতার বিক্ষোভে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় ।বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যাওয়ার বলাকা গেটে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারী দের ধস্তাধস্তি করতে দেখা যায় । সেন্ট্রাল অফিসের সামনেও লাগাতার বিক্ষোভ চলে।নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে তর্কাতর্কির মধ্যে শুরু হয় গেটের তালা ভাঙা। দুপুরে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের গেটের তালা ভেঙে জোর করে প্রবেশ করলেন বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি, কবিগুরু হস্তশিল্প মার্কেটের লোকজন তথা স্থানীয়রা। ‘পৌষমেলা বাঁচাও কমিটি’ লেখা হোর্ডিং নিয়ে তাঁরা বিক্ষোভ করেন।স্লোগান ওঠে শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লির মাঠেই পৌষমেলা করতে হবে।পুরো ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চর পক্ষ থেকে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “পৌষমেলা করতে হবে৷ কেন বন্ধ করা হল মেলা৷ আমাদের সঙ্গে কেন উপাচার্য কথা বলছেন না। এই মেলা আমাদের সবার আবেগ। ইচ্ছাকৃত ভাবে বন্ধ করা হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা।”
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে শেষ বার শান্তিনিকেতনে হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা। ২০২০ সালে কোভিড পরিস্থিতির জন্য বন্ধ ছিল মেলা৷ কিন্তু, পরবর্তীতে, অর্থাৎ ২০২১ ও ২২ সালে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী পৌষমেলা বন্ধ করে দেয়৷ যা নিয়ে বিক্ষোভ হয় শান্তিনিকেতন জুড়ে৷ ৮ নভেম্বর উপাচার্য হিসাবে মেয়াদ শেষ হয়েছে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। নতুন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হয়েছেন সঞ্জয় কুমার মল্লিক।
তাই এবার বোলপুর-শান্তিনিকেতনবাসী আশা করেছিল এবার হয়তো পৌষমেলা হবে৷ কিন্তু, দেখা গেল মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বৈঠক করে যৌথ প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মেলা বাতিল করে দেয়।