হায়দরাবাদ, ৩ ডিসেম্বর (হি. স.) : ভোটের গণনা চলার মধ্যেই আদর্শ আচরণ বিধি লঙ্ঘনের জন্য তেলঙ্গানা পুলিশের ডিজি, অঞ্জনি কুমারকে বরখাস্ত করল ভারতের নির্বাচন কমিশন। গণনা চলাকালীনই তেলঙ্গানা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যে কংগ্রেসের প্রধান মুখ্যমন্ত্রী মুখ, রেবন্ত রেড্ডির সঙ্গে সাক্ষাত করেছিলেন অঞ্জনি কুমার। তাঁকে জয়ের অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। আর সেই কারণেই তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ডিজিপি অঞ্জনি কুমার অবশ্য একা নন, রাজ্যের সম্ভাব্য পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্য পুলিশের আরও দুই বড় কর্তা – অতিরিক্ত ডিজি মহেশ ভাগবত এবং অতিরিক্ত ডিজি (আইন শৃঙ্খলা) সঞ্জয় কুমার জৈন। ডিজিপিকে সাসপেন্ড করার পাশাপাশি বাকি দুই পুলিশ কর্তাকে শোকজ করেছে কমিশন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, তেলঙ্গানায় কংগ্রেস ৬৩টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। আর ক্ষমতাসীন বিআরএস এগিয়ে ৪০টিতে। এছাড়া, বিজেপি ৮টিতে এবং সিপিআই একটিতে এগিয়ে রয়েছে। অর্থাৎ, রাজ্যে পালাবদল ঘটতে চলেছে। বিআরএস-কে সরিয়ে ক্ষমতায় আসছে কংগ্রেস, এটা একরকম স্পষ্ট। বস্তুত গণনার শুরু থেকেই তেলঙ্গানায় বিআরএস-কে পিছনে ফেলেছিল কংগ্রেস। এদিন দুপুরে দণনার প্রাথমিক প্রবণতায় কংগ্রেস এগিয়ে যেতেই তাঁকে অভিনন্দন জানাতে অন্য দুই পুলিশ কর্তাকে সঙ্গে নিয়ে রেবন্ত রেড্ডির বাড়িতে পৌঁছন অঞ্জনি কুমার। সূত্রের খবর, তাঁর বদলে রাজীব রতন কুমার রাজ্যের নতুন ডিজিপি হচ্ছেন। রেবন্ত রেড্ডির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনিই উপস্থিত থাকবেন রাজ্য পুলিশের ডিজি হিসেব।
মজার বিষয় হল, আজ যে রেবন্ত রেড্ডির প্রতি অযাচিত সমর্থন প্রকাশ করে সাসপেন্ড হলেন অঞ্জনি কুমার, সেই রেবন্ত রেড্ডিই গত অক্টোবর মাসে অঞ্জনি কুমার এবং তেলঙ্গানা পুলিশকে বিআরএসের ব্যক্তিগত সেনাবাহিনী বলে নিন্দা করেছিলেন। সেই সময় রাজ্যে নির্বাচনের প্রচার চলছিল। প্রচারের সময় অঞ্জনি কুমার এবং রাজ্য পুলিশ বাহিনী বিরোধীদের বিভিন্নভাবে হেনস্থা করছে বলে অভিযোগ করেছিলেন রেবন্ত কুমার। নির্বাচন কমিশনকে লিখিত অভিযোগে রেবন্ত কুমার বলেছিলেন, অঞ্জনি কুমার অন্ধ্র প্রদেশ ক্যাডারের আইপিএস অফিসার। বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও-এর আশীর্বাদেই তিনি রাজ্য পুলিশের শীর্ষ পদ পেয়েছেন। সেই কৃতজ্ঞতা ফিরিয়ে দিতেই তিনি বিরোধীদের দমন করার জন্য বাহিনীকে ব্যবহার করছেন। এদিন পাশা পাল্টানোর ইঙ্গিত মিলতেই, অঞ্জনি কুমার রেবন্ত রেড্ডির ঘনিষ্ট হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু, তাঁর ডানা ছেঁটে দিল নির্বাচন কমিশন।