আগরতলা, ২৬ সেপ্টেম্বর :
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন, ভোক্তাবিষয়ক ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি বলেছেন, গত ৬ বছরে ত্রিপুরায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন হয়েছে। উন্নয়নে বিশেষ গতি লাভ করেছে। আজ আগরতলায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী একথা বলেন| দুদিনের রাজ্য সফরে এসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আজ রাজ্য গ্রামোন্নয়ন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তরের বিভিন্ন কাজকর্ম ও প্রকল্প এর অগ্রগতি নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন দফতরের পদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করেন| ওই বৈঠকে অন্যান্নদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য গ্রামোন্নয়ন সচিব ড. সন্দীপ রাঠোর, পশ্চিম জেলার জেলা শাসক ও সমাহর্তা দেবপ্রিয় বর্ধন প্রমুখ|
পর্যালোচনা বৈঠকের পর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ২০০৬ থেকে ২০১৩-১৪ পর্যন্ত রেগায় ত্রিপুরা পেয়েছিল ৪,৫৫৮ কোটি টাকা।নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এম এন রেগায় ত্রিপুরার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৮,৩৫১ কোটি টাকা। বর্তমান সময়ে এম এন রেগায় ত্রিপুরায় ৯০ শতাংশের বেশি টাকা খরচ হচ্ছে| তিনি বলেন, ২০০৭ -২০১৪ পর্যন্ত ত্রিপুরায় আগেকার ইন্দিরা আবাস যোজনায় ৫৯৯ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়| বর্তমানে, ২০১৪ থেকে এখন পর্যন্ত পি এম আবাস যোজনায় ৪০০০ কোটি টাকার অধিক খরচ হয়| ২০০৬ থেকে ১৪ সাল পর্যন্ত তৎকালীন ইন্দিরা আবাস যোজনায় ত্রিপুরায় ১ লক্ষ ৪ হাজার ৯৭০টি আবাস নির্মাণ করা হয়েছিল। গত ৯ বছরে নির্মাণ করা হয়েছে ২ লক্ষ ৯৪ হাজার ৯১১টি আবাস। প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদির শাসনকালের গত ৯ বছরে ত্রিপুরায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ও এম.জি.এন রেগা সহ বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দ বৃদ্ধি সহ সাফল্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন|
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গরিব পরিবারদের জন্য শুধু আবাস যোজনায় পাকা ঘর দেবার সাথে শৌচালয়, এক দেশ এক রেশন কার্ড, জন ধন ব্যাঙ্ক কার্ড, রান্নার গ্যাস সংযোগ, স্বাস্থ্য বিমার আয়ুষ্মান কার্ডের ব্যবস্থা করেছেন।এই স্কিমগুলো রূপায়নের মাধ্যমে গরিব পরিবারগুলো আজ দারিদ্র সীমার ওপরে আসছে তিনি মন্তব্য করেন| তিনি বলেন, যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে জন ধন যোজনায় ব্যাঙ্ক একাউন্ট করাবার মাধ্যমে| এর সুফল সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে করোনাকালে – যখন কেন্দ্র থেকে সরাসরি অর্থ সাহায্য গরিব পরিবারের লোকেরা তাঁদের জন ধন একাউন্টে পেয়ে যান| ওই সময়ে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ যোজনায় বিনামূল্যে রেশন সরবরাহ এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ| তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় ১ম ও ২য পর্যায়ের প্রকল্পে গ্রামীন সড়ক নির্মানের কাজও উচ্চ গতিতে রূপায়িত হচ্ছে|
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের উপর বিশেষ নজর দিয়েছেন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা বিভিন্ন প্রকল্পের রূপায়নের পর্যালোচনা করতে এই অঞ্চলের প্রত্যেক রাজ্য নিয়মিতভাবে সফর করছেন| প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদি স্বয়ং ৫০ বারের বেশি উত্তর পূর্ব সফরে এসেছেন| তিনি নারী সংরক্ষণ বিল পাশ হওয়াকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেন|
স্বচ্ছতার প্রতি দেশবাসীর মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এই বৈঠকের আগে তিনি, মোহনপুর মহকুমার রাঙ্গাছড়ায় একটি অমৃত সরোবরের উদ্বোধন করেন| সেখানে বিভিন্ন স্ব-উদ্যোগী ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের সাথে মত বিনিময় করেন| তিনি বলেন, সারা দেশে বর্তমানে ৯ কোটি ৫০ লক্ষ মহিলা স্ব-নির্ভর গোষ্ঠির সাথে যুক্ত আছেন, যেখানে ২০১৪ তে মোদি সরকার আসার আগে দুই কোটি মহিলা এসএইচজি –র সাথে যুক্ত ছিলেন| তিনি বলেন, কেন্দ্র সরকার স্বনির্ভর গোষ্ঠির মহিলারা যাতে স্বল্প সুদে ঋণ পান তাঁর ব্যবস্থা করেছে| শ্রীমতি নিরঞ্জন বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বে ও তাঁর দিকনির্দেশে সরকার পিএম বিশ্বকর্মা যোজনা চালু করেছে, যার মধ্য দিয়ে কারুশিল্পী, কারিগর ও পারম্পরিক পেশার শিল্পী ও মিস্ত্রিরা সহজ শর্তে উচ্চ্ মানের প্রশিক্ষণ ও ঋণ পাবেন এবং নিজেদেরকে স্বনির্ভর করতে সমর্থ হবেন| কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এদিন মোহনপুরে একটি ন্যায্য মূল্যের দোকান এবং নন্দননগরে এফ সি আই এর খাদ্যগুদাম পরিদর্শন করেন এবং আধিকারিকদের সাথে কথা বলে খাদ্য মজুত এর অবস্থা নিয়ে পর্যালোচনা করেন।