আগরতলা , ৫ সেপ্টেম্বর : বনাঞ্চল ক্রমাগত ধ্বংসের ফলে বন্যপ্রাণীদের বনাঞ্চলে বসবাস করা রীতিমতো চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। খাদ্যাভাবে বন্যপ্রাণীরা বনাঞ্চল ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসতে শুরু করেছে।
বন্যপ্রাণীরা বেরিয়ে আসছে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায়। উত্তর জেলায় একমাত্র বন্যপ্রাণীদের জন্য সংরক্ষিত বনাঞ্চল রোয়া অভয়ারণ্য রয়েছে। সাধারণভাবে যেভাবে পরিবেশ রক্ষার্থে বন্যপ্রাণী উদ্ভিদ এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে যে ভারসাম্যের দরকার তা সম্পূর্ণরূপে বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই একদিকে যেমন মানুষকে সামলানো যাচ্ছে না, অকারনে বন ধ্বংস এবং বন্যপ্রাণী নিধন বন্ধ করতে, তেমনি নিজেদের জীবনরক্ষার্থে বন্যপ্রাণীরাও বেরিয়ে এসেছে জনবহুল এলাকাতে। শুধুমাত্র খাদ্যের তাগিদে নয় বাঁচার জন্য যে পরিমাণ স্থান দরকার সেই স্থান সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে তাদের ক্ষেত্রে। তাই বন্যপ্রাণীরা বাধ্য হচ্ছে নিজের জীবন রক্ষার্থে জনবহুল এলাকাতে প্রবেশে। ফলস্বরপ একদিকে যেমন মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে তেমনি বন্যপ্রাণীদের মৃত্যুর হার অত্যাধিক ভাবে বেড়ে গেছে। বিরল প্রজাতির প্রাণীরা এতদিন পর্যন্ত তাদেরকে শুধুমাত্র দর্শন পাওয়ার জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হতো এখন জনবহুল এলাকাতে যেভাবে তাদের যাতায়াত শুরু হয়েছে তাতে বিরল বলতে যে কথাটা তার কোন প্রকৃত অর্থই থাকছে না। উত্তর জেলার সদর ধর্মনগরে পদ্মপুর এলাকায় অজগর সাপ, রাধাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে লজ্জাবতী বানর, ঢ়ুবিরবন্ধ গ্রাম পঞ্চায়েতে গো সাপ এবং সর্বশেষ পানিসাগর মহকুমার রামনগর পাঁচ নং ওয়ার্ড থেকে উদ্ধার ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় হরিণ শাবক। শনিবার রাত দশটার দিকে পানিসাগর মহকুমার রামনগর এলাকার ৫ নং ওয়ার্ড থেকে এলাকাবাসীরা খবর দেয় বনদপ্তরকে যে একটি হরিণ শাবক ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বন কর্মীদের অপেক্ষা না করে এলাকাবাসীরা হরিণ শাবকটিকে ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে স্যালাইন ইনজেকশন সহ সার্বিক চিকিৎসার পর দিন অর্থাৎ রবিবার হরিণ শাবকটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে । অবশেষে ধর্মনগর এনে হরিণ শাবকের ময়নাতদন্ত হয় এবং উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ নিয়ে এই শাবকটির অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। যেভাবে বন্যপ্রাণীদের জীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে অতিবাহিত হচ্ছে তাতে পরিবেশের ভারসাম্য নিয়ে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের চিন্তা ধারায় বিশাল প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে এবং বন্যপ্রাণীদের জীবন রক্ষার্থে কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করলেও প্রকৃতপক্ষে কতটুকু তাদের জীবন সংশয় থেকে মুক্ত করা গিয়েছে তা নিয়ে সমালোচকরা প্রশ্ন তুলেছেন। শুধুমাত্র টাকা খরচের মাধ্যমে তাদের জীবন বাঁচানো সম্ভব নয় দরকার প্রকৃত মনোবৃত্তির।