মুর্শিদাবাদ, ৩১ আগস্ট (হি. স.) : প্রায় আড়াই বছর আগে ৬ মে বাড়ির উঠোনে বসে হাহাকার করেছিলেন এক প্রবীণ…”ওকে ফাঁসি দিন” ২০২৩ সালে ৩১ আগস্ট, বহরমপুর গার্লস কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুতপা চৌধুরী। সুতপা চৌধুরী হত্যাকাণ্ডে ফাঁসির সাজা দেওয়া হল দোষী সাব্যস্ত সুশান্ত চৌধুরীকে। বৃহস্পতিবার বহরমপুরের তৃতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের অতিরিক্ত দায়রা ও জেলা বিচারক সন্তোষ কুমার পাঠক এই রায় ঘোষণা করেন। চোখে জল সুতপার বাবার।
২০২১ সালে ৫ মে, বহরমপুরের গোরাবাজার এলাকায় সন্ধে নাগাদ শহিদ সূর্য সেন রোড দিয়ে মেসে ফিরছিলেন সুতপা। সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে, তাঁকে অনুসরণ করছে সুশান্ত! তার পর, সুযোগ বুঝে মেসের দরজার সামনেই তরুণীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সে। এক হাতে খেলনা পিস্তল উজিয়ে ওই ছাত্রীকে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে খুন করে তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক সুকান্ত চৌধুরী। ‘বাবাগো, মেরে ফেললো গো’ বাঁচার জন্য কাতর আর্তনাদ করেও সাহায্য পাননি সুতপা। সুশান্তর হাতের খেলনা পিস্তলটিকে আসল ভেবেই ভয়ে সাহায্যে এগিয়ে আসেনি কেউ।
একাধিক কোপ দেওয়ার পর সুতপার মৃত্যু নিশ্চিত জেনেই সেখান থেকে পালিয়ে যায় সুশান্ত। অভিযুক্তকে জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছিল, খুন করে পালানোর পথ আগেই তৈরি করে রেখেছিল সুশান্ত। এলাকার একটি বাড়ির পাঁচিলে লাগানো পেরেক বাঁকিয়ে রেখেছিল সে। খুনের পর ওই জায়গা দিয়েই পাঁচিল টপকে পালায় সুশান্ত। এরপরেই কার্যত তোলপাড় ফেলে দেয় ছাত্রীখুনের হাড় হিম করা হত্যাকাণ্ড।
এই হাড়হিমকরা ঘটনা রীতিমতো চমকে দিয়েছিল গোটা রাজ্যকে। জানা যায়, সুশান্তর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখতে চাননি সুকান্ত। আর তা মেনে নিতে পারেনি এই যুবক। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বহরমপুর আদালতে বৈদ্যুতিন তথ্য প্রমাণ, ভিডিও ফুটেজের সূত্রে দোষী সাব্যস্ত হয় প্রাক্তন প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরী। ‘বিরলতম অপরাধ’, মৃত্যুদণ্ড দিয়ে এদিন এমনটাই জানিয়েছিল ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট।