আগরতলা, ২২ আগস্ট।। রক্ষক এবার ভক্ষকের ভূমিকায়। যাদের হাতে আইন রক্ষার দায়িত্ব তাদের হাতে নির্যাতনের শিকার এক গৃহবধূ। গোমতী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসাবে কর্মরত উত্তম বনিকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ। স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ওই পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে। বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনা এনে দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন তার বিরুদ্ধে তার স্ত্রী।
ঘটনার বিবরণে জানা যায় বর্তমানে গোমতী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসাবে কর্মরত উত্তম বনিকের সাথে সামাজিকভাবে বিয়ে করেন ২০১২ সালের ২ মার্চ। বিয়ের তিন মাস পর থেকে তিনি স্ত্রীর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। তারপর ২০১২ সালের ২০ আগস্ট উত্তম বনিক স্ত্রীর উপর চাপ দেন বাপের বাড়ি থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আসার জন্য। সেই দিনই উত্তম বনিকের শাশুড়ি নগদ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে যায়। তারপরও স্ত্রীর উপর নির্যাতন বন্ধ করেনি গুণধর উত্তম বনিক। এরই মধ্যে তাদের কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে তাদের কন্যা সন্তানের বয়স ১০ বছর। উত্তম বনিক কিছু দিন পূর্বে জায়গা ক্রয় করে। তারপর স্ত্রীর উপর নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি করে দেয় বাপের বাড়ি থেকে নগদ টাকা নিয়ে আসার জন্য। স্ত্রী বাপের বাড়ি থেকে নগদ টাকা নিয়ে আসতে অস্বীকার করায় স্ত্রীকে চাপ দিতে থাকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে তাদের ব্ল্যাকমিল করে টাকা নিয়ে তাকে দেওয়ার জন্য। এমনই গুরুতর অভিযোগ উত্তম বনিকের বিরুদ্ধে। স্ত্রী এই কাজ করতে অস্বীকার করার পর উত্তম বনিক স্ত্রীকে চরিত্রহীন প্রমান করতে উঠে পরে লাগে। এরই মধ্যে স্ত্রী উত্তম বনিকের মোবাইলে দেখতে পায় বিভিন্ন মহিলার সাথে উত্তম বনিকের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। এই বিষয়ে স্ত্রী জেনে যাওয়ার পর উত্তম বনিক নিজের ক্ষমতার ভয় দেখাতে থাকে স্ত্রীকে। বাধ্য হয়ে ন্যায় বিচারের দাবি জানিয়ে সোমবার উত্তম বনিকের স্ত্রী পশ্চিম মহিলা থানায় স্বামী গুণধর গোমতী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উত্তম বনিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। থানায় মামলা দায়ের করার পর নির্যাতিতা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে গোটা ঘটনার বিষয়ে তুলে ধরেন। সোমবার বিকালে উত্তম বনিকের স্ত্রী থানায় মামলা দায়ের করার পর নড়ে চড়ে বসে রাজ্য পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা। রাতারাতি উত্তম বনিককে গোমতী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের পদ থেকে বদলি করে পুলিশ সদর দপ্তরে নিয়ে আসা হয়। রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশকের নির্দেশে উত্তম বনিককে পুলিশ সদর দপ্তরে নিয়ে আসা হয়। অপরদিকে গোমতী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে বদলি করা হয়েছে সুমন মজুমদারকে। এখন দেখার আরক্ষা দপ্তর উত্তম বনিকের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে।