থানে, ১ আগস্ট (হি.স.): মহারাষ্ট্রের থানে-তে এক্সপ্রেসওয়ে তৈরিতে ব্যবহৃত গার্ডার মেশিন ভেঙে ঘটে গেল মর্মান্তিক ও ভয়াবহ দুর্ঘটনা। নির্মাণস্থলে কর্মীদের ওপর ভেঙে পড়ে গার্ডার মেশিন, নীচে চাপা পড়ে অন্তত ১৭ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বেশ কয়েকজন শ্রমিক গুরুতর আহতও হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোররাতে থানের একটি নির্মাণস্থলে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। ধ্বংসাবশেষের নীচে এখনও কেউ কেউ আটকে রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ড্যান্ট সারাং কুরভে জানিয়েছেন, ভোররাত ১.৩০ মিনিট নাগাদ এই ঘটনা সম্পর্কে আমরা জানতে পারি এবং আমাদের প্রথম টিম সকাল ৫.৩০ মিনিট নাগাদ উদ্ধারকাজ শুরু করে। উদ্ধারকাজ চলছে, স্নিফার ডগের সাহায্যেও চলছে উদ্ধারকাজ। মর্মান্তিক এই ঘটনায় মর্মাহত মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে। মহারাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে অর্থ সাহায্যের ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডে বলেছেন, মৃতদের পরিজনকে ৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। সুইজারল্যান্ডের একটি কোম্পানি সেখানে কাজ করছিল। এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, থানে-র সাহাপুর এলাকায় সম্রুদ্ধি এক্সপ্রেসওয়েতে নির্মাণের কাজ চলছিল। মঙ্গলবার ভোররাতে সেখানেই কাজ করছিলেন এক দল কর্মী। আচমকা উপর থেকে তাঁদের মাথায় গার্ডার মেশিন ভেঙে পড়ে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্রুদ্ধি এক্সপ্রেসওয়েতে কাজ চলাকালীন রাতে কর্মীরা একটি বিশেষ ধরনের ক্রেন মেশিন চালাচ্ছিলেন। এই ক্রেনের নাম ‘গার্ডার লঞ্চিং মেশিন’। এই ক্রেন সাধারণত রেল সেতু, সড়ক নির্মাণের কাজে ব্যবহৃত হয়। বড় বড় বহুতলের নীচে ভিত গঠনেও কাজে লাগে এই যন্ত্র। বিশাল আকৃতির ইস্পাতখণ্ড এক দিক থেকে অন্য দিকে নিয়ে যাওয়া এই যন্ত্রের কাজ। সম্রুদ্ধি এক্সপ্রেসওয়ের তৃতীয় পর্যায়ের কাজ ভোর রাতে শুরু করেছিলেন কর্মীরা। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই সেখানে পৌঁছে যায় পুলিশ এবং দমকল। জোরকদমে তারা উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে।
সম্রুদ্ধি এক্সপ্রেসওয়ের আর এক নাম মুম্বই-নাগপুর এক্সপ্রেসওয়ে। ৭০১ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তা মুম্বই এবং নাগপুরকে যুক্ত করে। দুই শহরের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য রাস্তাটি গুরুত্বপূর্ণ। রাস্তা নির্মাণের কাজ চালাচ্ছে মহারাষ্ট্র সরকারের সড়ক উন্নয়ন কর্পোরেশন। গত ডিসেম্বরে এই রাস্তার প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধন করে গিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।