BRAKING NEWS

কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার রাজ্যের জনজাতি অংশের মানুষের সার্বিক উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণ করছে ঃ মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ মে৷৷ কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার রাজ্যের জনজাতি অংশের মানুষের সার্বিক উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণ করছে৷ প্রকল্পগুলি সম্পর্কে জনজাতিদের আরও সচেতন করতে হবে৷ তবেই জনগণ এসব প্রকল্পের সুুযোগ সঠিকভাবে গ্রহণ করতে পারবে৷ আজ সচিবালয়ে ২ নং সভাকক্ষে জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন৷ তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের জনজাতিদের সার্বিক বিকাশে খুবই আন্তরিক৷ রাজ্যের বর্তমান সরকারও জনজাতি এবং জনজাতি এলাকার উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণ করছে৷ সেই কর্মসূচিগুলিকে সাধারণ মানুষের গোচরে আনার জন্য প্রচারের উপর গুরুত্ব দিতে হবে৷ এজন্য তথ্য ও সংস্ক’তি দপ্তরের সাথে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে প্রচারের বিষয়ে জোর দেওয়ার জন্য বলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, যত বেশি সাধারণ মানুষ সরকারের জনকল্যাণমুখী প্রকল্প সম্পর্কে অবগত হবেন তত বেশী প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়ণ হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী দপ্তরের আধিকারিকদের এই বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দেন৷ পর্যালোচনা সভায় মুখ্যসচিব জে কে সিনহা দপ্তরের আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পগুলি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে কিনা সেই বিষয়ে আধিকারিকদের খোজঁ খবর রাখতে হবে৷ প্রত্যেকটি  দপ্তরের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করতে হবে, পাশাপাশি ক্ষেত্রপর্যায়ে গিয়ে নিয়মিত পর্যবেক্ষন করার উপরও বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে৷
পর্যালোচনা সভায় জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা এস প্রভু সচিত্র প্রতিবেদনের মাধ্যমে দপ্তরের বিভিন্ন কর্মসূচির উপর আলোকপাত করেন৷ তিনি জানান, জনজাতিদের শিক্ষার মান উন্নয়নে গত পাঁচ বছরে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে৷ বোর্ডিং হাউজ স্টাইপেড বৃদ্ধি করে প্রতি জনজাতি ছাত্রছাত্রী পিছু প্রতিদিন ৮০ টাকা করা হয়েছে৷ বর্তমানে ৩৬৫টি অনুমোদিত জনজাতি হোস্টেলে ২৯ হাজার ৯৯১ জন জনজাতি ছাত্রছাত্রীকে বোর্ডিং স্টাইপেণ্ড দেওয়া হচ্ছে৷ গত পাঁচ বছরে এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রি এবং পোস্টমেট্রিক স্কলারশীপ ২ লক্ষ ৯৩ হাজার ৯৫২ জন ছাত্রছাত্রীকে দেওয়া হয়েছে৷ এই প্রকল্পের মাধ্যমে এককালীন আর্থিক সহায়তা, মেধা পুরস্কার, বিনামূল্যে পাঠ্যবই সরবরাহ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ১ লক্ষ ৯২ হাজার ১৬২ জন ছাত্রছাত্রী উপক’ত হয়েছে৷ তিনি জানান, ইতিমধ্যেই সাপ্লিমেন্টারি এডুকেশন ফর এলিমেন্টারি ক্লাসেস- ২০২২ প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে৷ এই প্রকল্পের আওতায় সারা রাজ্যের ৪০৪ টি সেন্টারের মাধ্যমে ৯ হাজার ৭৮৫ জন জনজাতি ছাত্রছাত্রীকে কোচিং দেওয়া হচ্ছে৷ এছাড়াও দপ্তরের উদ্যোগে এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৪৫ হাজার ২৭ জন জনজাতি ছাত্রছাত্রীকে ইংরেজি, অংক এবং বি’ান বিষয়ের উপর বিশেষ কোচিং দেওয়া হয়েছে৷ পর্যালোচনা সভায় দপ্তরের অধিকর্তা জানান, জনজাতি হোস্টেলগুলির আধুনিকিকরণ এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে দপ্তর বায়োমেট্রিক এটেনডেন্স ডিভাইস, কম্পিউটার, ইলেকট্রিক ইনভার্টার, পোর্টেবল সোলার ল্যাম্প, সেনিটারি প্যাড, জলের ফিল্টার, সুকল ব্যাগ ইত্যাদি জনজাতি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে দেওয়া হয়েছে৷ ৪৪ জন জনজাতি ছাত্রীকে শহিদ ভগৎ সিং হোস্টেলে সফটওয়ারের উপর বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে৷ পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন কর্মসংস্থান সৃষ্টিমূলক প্রকল্প নিয়ে প্রত্যেকটি জেলায় সচেতনতা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে৷
পর্যালোচনা সভায় অধিকর্তা আরও জানান, গত পাচঁ বছরে ক’ষি সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আয় সৃষ্টিকারি প্রকল্পে ৭ হাজার ২৫৭ জন জনজাতি সুুবিধাভোগী উপক’ত হয়েছে৷ ১ হাজার ৩০৭ জন জনজাতি যুবক-যুবতীকে দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে৷ ৩২টি বনধন বিকাশ কেন্দ্র ক্লাস্টার রাজ্যে চালু রয়েছে৷ আরও ২৫টি বনধন বিকাশ কেন্দ্র ক্লাস্টার ইতিমধ্যেই চালু করার অনুমোদন পাওয়া গেছে৷ মুখ্যমন্ত্রী রাবার মিশন প্রকল্পে ১২ হাজার ৫১৩ জন জনজাতি সুুবিধাভোগী উপক’ত হয়েছে৷ অধিকর্তা জানান, পরিকাঠামো উন্নয়নেও দপ্তর উদ্যোগী রয়েছে৷ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য ১৫টি জনজাতি ছাত্রাবাস নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে৷ আগরতলা মহিলা মহাবিদ্যালয়, ফটিকরায়ের আম্বেদকর মহাবিদ্যালয় এবং গণ্ডা তুইসার সরকারি মহাবিদ্যালয়ের জন্য নতুন তিনটি এসটি কলেজ হোস্টেল নির্মাণ করা হয়েছে৷ এছাড়াও সারা রাজ্যে এন এল এফ টি (এস ডি) প্যাকেজের অধিনে মার্কেট স্টল, হোস্টেল, উন্মক্ত মার্কেট শেড, অ্যাডিশনাল ক্লাশরুম ইত্যাদি নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে৷ তিনি জানান, রাজ্যে ৬টি একলব্য মডেল রেসিডেনশিয়াল সুকল চালু রয়েছে৷ আরও ১১টি মডেল রেসিডেনসিয়াল সুকল নির্মাণের কাজ চলছে৷ তাছাড়াও অধিকর্তা দপ্তরের আগামী পাঁচ বছরের প্রস্তাবিত বিভিন্ন কর্ম পরিকল্পনা এবং বিশ্ব ব্যাংকের অর্থানুকূল্যে জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েও বিস্তারিত আলোচলা করেন৷ পর্যালোচনা সভায় জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের সচিব এল টি ডার্লং সহ দপ্তরের বিভিন্ন আধিকারিগণ উপস্থিত ছিলেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *