রাজ্যের তৈরি কমিটি জাতীয় শিক্ষানীতিকে কার্যকর করার কৌশল, অভিযোগ আবুটা-র

কলকাতা ২০ এপ্রিল (হি. স.) : রাজ্য সরকারের তৈরি সাম্প্রতিক কমিটি জাতীয় শিক্ষানীতিকে কার্যকর করার জন্য কৌশল রচনা করেছেন মাত্র। শুক্রবার এই অভিযোগ তুলল সারা বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (আবুটা)।

জাতীয় শিক্ষানীতি (২০২০) অনুসারী স্নাতক স্তরে চার বছরের ডিগ্রি কোর্স কার্যকর করার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছিল রাজ্য। আবুটা-র সাধারণ সম্পাদক গৌতম মাইতি বলেন, “সরকারের ইচ্ছে অনুযায়ী এই কমিটির কাজই ছিল এই শিক্ষানীতি কার্যকর করার জন্য অজুহাত তৈরি করা। কমিটি যে তিনটি প্রশ্ন তৈরী করে উপচার্যদের কাছ থেকে চটজলদি উত্তর চেয়েছিল তা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল শিক্ষার নীতিগত বিষয় নিয়ে চর্চা করার কোনও এক্তিয়ার তাঁদের নেই। তাঁদের রিপোর্ট (সংবাদ মাধ্যমে যা প্রকাশিত হয়েছে) থেকে পরিষ্কার হয়ে গেল যে তাঁরা

কিন্তু এর ফলে উচ্চ শিক্ষায় যে আমূল পরিবর্তন হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সময় দিয়ে পর্যালোচনা করার সুযোগ না দিয়ে কমিটি যেভাবে আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকে একে কার্যকর করার সুপারিশ করেছেন তার পেছনে কি কোনো একাডেমিক যুক্তি আছে? কমিটিতে যুক্ত শিক্ষাবিদরা এর উত্তর দিতে পারবেন? কমিটি কেন এ বিষয়ে শিক্ষাবিদ, শিক্ষক, ছাত্রদের মতামত জানতে চাইলনা?

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক বডিগুলির সভায় এ বিষয়ে ভিন্নমত উঠে এসেছে। কিছু ক্ষেত্রে নোট অফ ডিসেন্টও জমা পড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ইসি ও কোর্টের সভায় সিদ্ধান্ত না নিয়েই এতে সম্মতি জানিয়ে দিয়েছে।

আমাদের প্রশ্ন কমিটির এই শিক্ষাবিদরা কেন বিশ্ববিদ্যালয় গুলির মতামত নেওয়ার আগে রাজ্য সরকারের মতামত ও অবস্থান জানার চেষ্টা করলেননা? এক্ষেত্রে আইনগত ও পরিকাঠামো সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক জড়িত আছে। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ব্যাপক পরিবর্তন করতে হবে। যা রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়।
কমিটির সদস্যরা উপাচার্য হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থ দেখলেননা। শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করেনা, এটা দেখাতে তাঁরা নিজেরাই অতিসক্রিয় হয়ে একে চালু করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জোড়াতাপ্পি দেওয়া মতামতকে প্রতিষ্ঠা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও তার শিক্ষার সমূহ সর্বনাশের পথ প্রশস্ত করে দিয়ে গেলেন!
আবুটার দাবি রাজ্য সরকার নিত্য নতুন কমিটি না বসিয়ে এ বিষয়ে তার নীতিগত অবস্থান স্পষ্ট করুক। তারপর কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি মতামত নিক। কমিটি এই শিক্ষানীতির একাডেমিক যৌক্তিকতা স্পষ্ট করে বলুক।”