BRAKING NEWS

দেশ শর্টকাট চায় না, গুজরাটের ঐতিহাসিক জয়ের পর বললেন প্রধানমন্ত্রী

নয়াদিল্লি, ৮ ডিসেম্বর (হি.স.): “দেশ শর্টকাট চায় না। দেশ জানে শর্টকাট রাজনীতির কত বড় দাম চুকোতে হতে হবে দেশকে। দেশ সমৃদ্ধ হলে সবাই সমৃদ্ধ হবে।” গুজরাটে রেকর্ড জয়ের পর নয়াদিল্লিতে বিজেপির পার্টি অফিসে দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের উপচে পড়া ভিড়ে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । তিনি বলেন, গুজরাটের ফলাফল প্রমাণ করেছে যে উন্নত ভারতের জন্য সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষা কতটা প্রবল। এই ফলাফলের স্পষ্ট বার্তা, দেশের সামনে যখনই কোনও চ্যালেঞ্জ আসে, লোকেরা বিজেপিকে বিশ্বাস করে।

রেকর্ড গড়ে গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে এবারও জয়ী বিজেপি। আড়াই দশকেরও বেশি সময় পর আজও সেই রাজ্যে অব্যাহত মোদী ম্যাজিকই। ১৮২ আসন বিশিষ্ট গুজরাটে ১৫৬টি আসন দখল করেছে বিজেপি। অন্যদিকে খুব সামান্য ভোটের ব্যবধানে হাত ছাড়া হয়েছে হিমাচল প্রদেশ। এদিন গুজরাটে বিপুল জয়ের পর সন্ধে ৭টা ১০ মিনিট নাগাদ মঞ্চে বক্তৃতা শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুরুতেই দলের তরফে আমজনতার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা, মঞ্চে উপস্থিত রাজনাথ সিং, অমিত শাহদেরও ধন্যবাদ জানান তিনি। দলের সর্বস্তরের কর্মীরা যেভাবে কাজ চালিয়ে গিয়েছেন, তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান মোদী।

জাতীয় নির্বাচন কমিশনকেও ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। বললেন, “একটিও পোলিং বুথেও রিপোলিং করার প্রয়োজন আসেনি। শান্তিপূর্ণ উপায়ে গণতান্ত্রিক উপায়ে ভোটাররা গণতন্ত্রের উৎসবে সামিল হয়েছেন। এর জন্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ধন্যবাদ প্রাপ্য।”

নরেন্দ্র মোদী বলেন, “হিমাচলের নির্বাচনে ১ শতাংশেরও কম ব্যবধানে হার-জিতের ফয়সলা হয়েছে। এত কম ব্যবধানে আগে কখনও হার-জিত হয়নি। আগে ৫-৬-৭ শতাংশ ব্যবধান থাকত। কিন্তু এবার এক শতাংশেরও কম। অর্থাৎ, হিমাচলের মানুষ এবারও বিজেপিকে জয়ী করার চেষ্টা করেছে।”

হিমাচল প্রদেশের মানুষদের কাছেও তাঁর আশ্বাস, নির্বাচনে জয়ী না হলেও আগামী দিনে বিজেপি হিমাচলের জন্য কাজ চালিয়ে যাবে। কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা করা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বললেন, “গুজরাট এবার চমৎকার করে দেখিয়েছে।” সঙ্গে সঙ্গে ভিড়ের থেকে উড়ে এল, “মোদী হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়।” তিনি বলেন, যুব সমাজ আমাদের সমর্থন করেছে। অর্থাৎ, যুব সমাজ বিজেপির বিকাশবাদী নীতির সঙ্গে রয়েছে। তাঁরা কোনও পরিবারতন্ত্র চান না।

বিজেপির সদর কার্যালয়ের বাইরে মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী বললেন, বিকশিত গুজরাট থেকে বিকশিত ভারতের নির্মাণের ডাক দেওয়া হয়েছিল। গুজরাটের মানুষ প্রমাণ করে দিয়েছেন, তাঁরা বিকাশ চান। “দেশ যখন কোনও সঙ্কটের মধ্যে পড়ে, তখন দেশবাসীর ভরসা বিজেপি।”

প্রধানমন্ত্রী বললেন, “আমি এবার গুজরাটবাসীকে বলেছিলাম, এবার নরেন্দ্রর রেকর্ড যেন ভেঙে যায়। আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, এবার নরেন্দ্র কঠোর পরিশ্রম করবে, যাতে ভূপেন্দ্র নরেন্দ্রর রেকর্ড ভাঙতে পারে। গুজরাট এবার সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। গুজরাটের ইতিহাসে বিজেপির সবথেকে বড় জয়। দেশ সবার আগে। আমাদের ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ ভাবনাকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে হবে।”

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বললেন, “গুজরাটের আদিবাসী এলাকাতেও অভূতপূর্ব ফল করেছে বিজেপি। আজ আদিবাসীরা বিজেপিকে নিজেদের আওয়াজ হিসেবে মানছেন। এই পরিবর্তন গোটা দেশে দেখা যাচ্ছে। কারণ, অতীতে দীর্ঘদিন ধরে আদিবাসীদের আশা পূরণ করা হয়নি। কিন্তু এখন বিজেপি তাঁদের আশা পূরণ করে চলেছে। বিজেপিই প্রথম দেশকে আদিবাসী রাষ্ট্রপতি দিয়েছে।”

“মহিলাদের জন্য বিজেপি যা করেছে, তা অতীতে কোনও রাজনৈতিক দল করেনি। তাই এখন দেশের যেখানেই ভোট হয়, সেখানেই মা-বোনেরা বিজেপিকে আশীর্বাদ করেন। মহিলাদের জন্য কাজ, বিজেপির ভোটের রণনীতি নয়। মহিলাদের জন্য কাজ করা, বিজেপির প্রতিশ্রুতি।” বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

মোদী বললেন, “এবার অত্যাচার বাড়তে চলেছে। আমার উপরেও বাড়বে, আপনাদের উপরেও বাড়বে। কারণ, ওরা এসব সহ্য করতে পারবে না। তাই আমাদের আরও সহনশীল হতে হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *