করিমগঞ্জ (অসম), ৫ ডিসেম্বর (হি.স.) : করিমগঞ্জ জেলার নিলামবাজারের পার্শ্ববর্তী গ্রাম বিদ্যানগরে ৬ আষাঢ় ১৩৮০ বঙ্গাব্দে (২১ জুন ১৯৭৪ ইং) দেবাদিদেব মহাদেবের আশীর্বাদে শিববাড়ি প্রতিষ্ঠিত হয়। সে বছরেরই পৌষ সংক্রান্তিতে অধিবাস ও ১লা মাঘ(১৬ জানুয়ারি ১৯৭৪ ইং) তারিখে মহাপ্রভুর কৃপায় ও ভক্তদের ঐকান্তিক ইচ্ছায় শ্রীনামযজ্ঞ শিববাড়িতে অনুষ্ঠিত হয়। তখন থেকেই প্রতিবছর ১লা মাঘ শ্রীনামযজ্ঞ অবিরত ভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এবং এবার ৫০তম বর্ষে উপনীত হচ্ছে। মহাপ্রভুর আশীর্বাদ ও যুবক-তরুণ-বৃদ্ধ সবার নিরলস প্রয়াসের কারনেই সুদীর্ঘ এই যাত্রাপথ অতিক্রম করতে পেরেছেন। মহাপ্রভুর পথ অনুসরন করেই প্রতিবছর উৎসবের দুমাস আগে থেকে গ্রামে-গ্রামে বেরিয়ে পড়েন নামযজ্ঞ নিমন্ত্রণ দিতে এবং ভিক্ষা করতে। এবার ও তার ব্যতিক্রম নেই।
এবারের ৫০তম নামযজ্ঞ উপলক্ষ্যে দীর্ঘ ১৫ দিন ব্যাপী বিভিন্ন ধর্মানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। পক্ষকালীন এই উৎসবের সূচনা হবে ১৭ পৌষ (২জানুয়ারী ২০২৩ইং) সোমবার দেবাদিদেব মহাদেবের পূজার্চনার মাধ্যমে। তারপর এক এক করে থাকবে শিব-বন্দনা, সুবর্ণবর্ষ স্মৃতিফটক উদ্বোধন, পদাবলী কীর্তন, বাবাহরের সেবা ও ত্রিনাথের কীর্তন, সুবর্ণবর্ষ প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও মহিলা মিলোনৎসব। ২২ পৌষ থেকে ২৯ পৌষ পর্যন্ত চলবে শ্রীমদ্ভাগবত মহাযজ্ঞ। পরিচালনায় থাকবেন সুদূর শ্রীধাম বৃন্দাবন থেকে আগত শ্রীল ১০৮ রামদাস বেদান্ত শাস্ত্রজী (সপ্ততীর্থ) এবং শ্রীমুরলীধর শাস্ত্রীজী (ব্যাকরণ আচার্য্য) সঙ্গে থাকবেন অন্যান্য পারিষদগন ও কীর্তনীয়াগন। প্রত্যহ সকাল ৭টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত শ্রীমদ্ভাগবতের মূল শ্লোক পাঠ করা হবে। ওই শ্লোকের ই বাংলা রসবর্ষিণী ব্যাখ্যা হবে বিকাল ৪টা থেকে রাত্রি ১০টা পর্যন্ত। প্রতিদিন থাকবে ব্যাখ্যা অন্তে আরতি ও আনুকূল্য প্রসাদ বিতরন। ৩০ পৌষ থাকবে শ্রীনামযজ্ঞের শুভ অধিবাস। ১ মাঘ হবে অষ্টপ্রহর নামযজ্ঞ ও মধ্যাহ্ণকালীন মহাপ্রসাদ বিতরন। ২ মাঘ থাকবে নগর পরিক্রমা, দধিভাণ্ড ভঞ্জন, মোহান্ত বিদায় ও মহাপ্রসাদ বিতরন। শ্রীনামযজ্ঞে অংশগ্রহণ করবেন বরাক উপত্যকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কীর্তনীয়াগন।
সুদীর্ঘ এই মহা উৎসব সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সর্ব সম্মতিতে শ্রী দেবাশীষ দাস (ভ্রমর সাধু) কে সভাপতি করে ৪৮ জন সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিচালন সমিতি গঠন করা হয়েছে। সমিতির মুখ্য উপদেষ্টা শ্রী ঋতু বিজয় দাস (ঋতুসাধু)। উপদেষ্টা মণ্ডলীতে আছেন সর্বশ্রী রজত কান্তি দাস, নিখিলের রায়, দীনেশ চক্রবর্তী, কানাই রায়, বিপ্রজিত দাস, প্রজেশ দাস, শঙ্কর দাস, অমলেন্দু দাস, সুরজিৎ চক্রবর্তী প্রমুখ। শ্রী প্রদ্যুৎ দাস ও ননীগোপাল দেবনাথকে সহ-সভাপতির দায়িত্ব অর্পন করা হয়। শ্রীমানস রায় ও অরূপ দাস যথাক্রমে কার্যকরি সভাপতি ও কার্যকরি সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। শ্রী দীপঙ্কর দাসকে সম্পাদক ও সর্বশ্রী প্রিয়তোষ দাস, সমরজিত রায়, অর্জুন দেবনাথ, তরুন সেনের উপর সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয়। এছাড়াও কার্যকরি সদস্যের দায়িত্বে থাকবেন সর্বশ্রী বিষনলাল দাস,রূপম দাস, জনাঙ্কুর দাস, দেবরাজ দাস, রামেন্দু দাস, ঝিন্টু দাস, ঝন্টু সাহা, হারাধন শর্মা, প্রসেনজিৎ দাস, সুধন্য দাস, প্রিয়ব্রত দাস, দীপ্তেন্দু দাস, রিংকু দাস, সতু দাস, বিমল দাস, পার্থ দাস প্রমুখ। শ্রী হীরক দাস ও স্বরূপ দাস যথাক্রমে কোষাধ্যক্ষ ও সহ-কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করবেন ।