বিশালগড় মহকুমায় গুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, চড়িলাম, ২৪ নভেম্বর৷৷ বৃহস্পতিবার দিনভর বিশালগড় মহকুমার অন্তর্গত কমলাসাগর ও গোলাঘাটি বিধানসভায় এলাকার মুখ্যমন্ত্রী বেশ কয়েকটি নবনির্মিত ভবন ও প্রকল্পের উদ্বোধন করেন৷ বর্তমান সরকারের লক্ষ্য একটাই সমাজের অন্তিম ব্যাক্তির কাছে পর্যন্ত সরকারি সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দেওয়া৷ সরকার সেই লক্ষ্যে কে সামনে নিয়ে কাজ করছেন৷ বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা সকাল ১১ টায় কমলাসাগর বিধানসভার গোকুলনগরে নবনির্মিত ড় শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি নামাঙ্কিত এগ্রি  মার্কেট শেড এবং স্টলের  দ্বারোদঘাটন  করেন৷ এলাকার মানুষের সুবিধার্থে ও বেকার যুবকদের রোজগার বাড়াতে এই স্টল ও শেড ঘর নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী৷
মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত অতিথিদের সঙ্গে স্টল গুলো ঘুরে দেখেন এবং স্টল প্রাপকের হাতে স্টলের চাবি  তুলে দেন৷এরপর তিনি  রাজ্য সরকারের অর্থে নির্মিত মধুপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নবনির্মিত পাকা ভবনের উদ্বোধন করেন৷   অনুষ্ঠানের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিপাহীজলা জেলা পরিষদের সভাধিপতি  সুপ্রিয়া  দাস দত্ত, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের সচিব দেবাশীষ বসু, দপ্তরের অধিকর্তা রাধা দেববর্মা, সিপাহীজলার জেলা  শাসক বিশ্বশ্রী বি৷ ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান ডাঃ প্রেমতোষ রায়, বিশালগড় পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারপার্সন ছন্দা দেববর্মা, বিশিষ্ট সমাজসেবক গৌরাঙ্গ ভৌমিক, সুবীর চৌধুরী, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য  আধিকারিক ড় রঞ্জন বিশ্বাস  প্রমূখ৷ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মধুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রতন সরকার৷
সেখানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়নে সরকার যথেষ্ট গুরুত্বসহকারে কাজ করছে৷আয়ুষ্মান কার্ডের মাধ্যমে গরীব মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছে৷ হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছে রাজ্যে সরকার৷  মহকুমা স্তরের হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার, ব্লাড ব্যাঙ্ক সহ যাবতীয় সুবিধা দিয়েছে বর্তমান সরকার৷ এরফলে উপকৃত হচ্ছেন সাধারণ জনগণ৷এরপর মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা উদ্বোধন করেন কোনাবন পশ্চিম উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের৷ দ্বিতল সুকল বাড়ি নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় তিয়াত্তর লক্ষ টাকা৷  মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও অনুষ্ঠানে  ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি ,চা উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সন্তোষ সাহা, শিক্ষা দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চক্রবর্তী, বিশিষ্ট সমাজসেবক রাজীব ভট্টাচার্য, স্থানীয় গ্রাম প্রধান রূপালী দত্ত, জেলা শিক্ষা আধিকারিক হাবুল লোধ প্রমুখ৷ দ্বিতল ভবনের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা  বলেন  বর্তমান সরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর জোর দিয়ে কাজ করছে৷একটা দেশের উন্নয়নে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়ন খুবই দরকার৷ গুণগত শিক্ষার উপর জোর দিয়েছে রাজ্য সরকার৷ শুধু পুঁথিগত শিক্ষায় শিক্ষিত হলে চলবে না৷ বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশাত্মবোধ জাগ্রত করার কাজ করতে হবে৷উক্ত অনুষ্ঠানে কমলাসাগরের কয়েকটি ভূমিহীন চা শ্রমিক পরিবারের হাতে জমির পাট্টা তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিরা৷ তাছাড়া বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হাতে ঋনের মঞ্জুরি পত্র তুলে দেওয়া হয়৷উক্ত অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট সমাজসেবক রাজীব ভট্টাচার্য বলেন  এই প্রথম চা বাগিচায় কর্মরত শ্রমিক পরিবারগুলো জমির অধিকার পেয়েছে৷ বিজেপি সরকার সমাজের অন্তিম ব্যক্তির কাছে পৌঁছে গিয়েছে৷
 একসময় তথাকথিত গরীব দরদী শ্রমিক দরদী সরকার ছিল৷ কিন্তু এই চা শ্রমিকদের জন্য কোন কাজ করেনি৷ চা উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান সন্তোষ সাহা বলেন  চা শ্রমিকদের আর্থসামাজিক মানোন্নয়ন ঘটেছে৷ শ্রমিকদের মজুরি বেড়েছে৷চা শ্রমিকদের আত্মসামাজিক অবস্থার মানোন্নয়নে এ সরকার বদ্ধপরিকর৷ মুখ্যমন্ত্রীর বৃহস্পতিবারের সর্বশেষ  কার্যক্রম ছিল গোলাঘাটি গ্রাম পঞ্চায়েতে পোস্ট হারভেস্ট ম্যানেজমেন্ট সেন্টার এবং রুরাল কালেকশন সেন্টার এর শুভ উদ্বোধন৷ মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা এবং কৃষি দপ্তরের মন্ত্রী প্রনজিৎ সিংহ রায়ের হাতে উদ্বোধন হল গোলাঘাটি গ্রাম পঞ্চায়েতে পোস্ট হারভেস্ট ম্যানেজমেন্ট সেন্টার এবং রুরাল কালেকশন সেন্টার৷এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক বীরেন্দ্র কিশোর দেববর্মা, জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত, কৃষি দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, জেলা শাসক বিশ্বশ্রী বি, উদ্যান দপ্তরের অধিকর্তা ডঃ ফনি ভূষণ জামাতিয়া, সমাজ সেবক গৌরাঙ্গ ভৌমিক, পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারপার্সন ছন্দা দেববর্মা, জেলা কৃষি দপ্তরের অধিকর্তা কৃষ্ণেন্দু সাহা৷ যে সকল চাষীরা উৎপাদিত সামগ্রী বাজারে নিয়ে গিয়ে সঠিক মূল্য না পেয়ে বিক্রি করতে পারবেনা তারা তাদের উৎপাদিত ফসল শীততাপ নিয়ন্ত্রিত রুরাল কালেকশন সেন্টারে রাখতে পারবেন৷  এতে ব্যয় হয়েছে   প্রায় পঁচিশ লক্ষ টাকা৷  উক্ত অনুষ্ঠানে  মুখ্যমন্ত্রী বলেন এই সরকার  আপনাদের পরামর্শ নিয়ে সরকার চলবে৷তাই ’আমার সরকার’ পোর্টাল চালু করা হয়েছে৷  জনতার দরবারে সরকার পৌঁছে গিয়েছে৷ ঘরে ঘরে সুশাসন কার্যক্রমে রাজ্যের কয়েক লক্ষ মানুষ উপকৃত হয়েছে৷  
দুই বছর আমাদের করোনা মহামানীর সঙ্গে লড়াই  করতে হয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজি আমাদেরকে করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে খাদ্য এবং ভ্যাকসিন প্রদান করে বাঁচিয়েছেন৷ কোভিড মোকাবেলায় ত্রিপুরা সুনাম অর্জন করেছে৷ সরকার স্বাস্থ্য কৃষি শিক্ষা ক্ষেত্রে অধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে৷ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কৃষিমন্ত্রী প্রণজিৎ  সিংহ রায় বলেন এই সাড়ে চার বছরে সরকার কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করতে পেরেছে৷ রাজ্যের কৃষি পণ্য  বিদেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে৷   কৃষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পে বছরে ৬০০০ টাকা প্রদান করা হচ্ছে৷  সরকার এই প্রথম কৃষকদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কিনছে৷ বীজ সার কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদান করছে সরকার৷ স্বল্প সুদে  কেসিসি লোন দেয়া হচ্ছে৷ কৃষিমন্ত্রী বলেন রাজ্যের জাতি জনজাতি হিন্দু মুসলমান সকল নাগরিকের সার্বিক কল্যাণে কাজ করছে সরকার৷ কিন্তু মানুষের এই উন্নয়ন অনেকের সহ্য হচ্ছে না৷ বর্তমান সরকার সুশাসন দিবসের কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের কাছে সমস্ত সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দিয়েছে৷ সবশেষে গোলাঘাটি বিধানসভা এলাকার কৃষকদের কৃষি কাজ করার সুবিধার্থে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করেন অতিথিরা৷ এছাড়াও এস সি,এস টি,ও বি সি, সার্টিফিকেটের জন্য আবেদনকারী প্রার্থী দের মধ্যে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *