আগরতলা, ২৩ নভেম্বর (হি. স.) : ত্রিপুরায় পুলিশ ইন্সপেক্টর সহ পাঁচজনকে নৃশংসভাবে খুন করার অপরাধে আজ আদালত এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করেছে।
এ-বিষয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর বিকাশ দেব জানিয়েছেন, ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর রাতে খোয়াই জেলায় লালটিলা শেওড়াতলি এলাকায় প্রদীপ দেব রায় নিজের দুই কন্যা সন্তান, তার ভাই, একজন পথচারী এবং পুলিশ ইন্সপেক্টর সত্যজিত মল্লিককে নৃশংসভাবে খুন করেছিলেন। বিকাশ বাবু বলেন, পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে প্রদীপ স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করেন এবং উত্তেজিত হয়ে প্রথমে ছোট মেয়ে অদিতি দেবরায় তারপর বড় মেয়ে মন্দিরা দেবরায়কে কুপিয়ে খুন করেন। তাকে আটকাতে গিয়ে খুন হন প্রদীপের বড় ভাই অমলেশ দেবরায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ছুটে এসে তাকে আটক করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার অতর্কিত আক্রমণে পুলিশ ইন্সপেক্টর সত্যজিত মল্লিক নিহত হন। ঘটনাস্থলে এক পথচারীকেও প্রদীপ কুপিয়ে খুন করেছেন। এরপর সেখান থেকে পালাতে চেষ্টা করলেও পুলিশ তাকে আটক করতে সক্ষম হয়।
বিকাশ বাবু জানিয়েছেন, খোয়াই থানার সাব ইন্সপেক্টর এল টি ডার্লং ও এসডিপিও রাজীব সুত্রধর মামলার তদন্ত শুরু করেন এবং তদন্ত শেষে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রদীপের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধি ৩০২ এবং ৩০৭ ধারায় চার্জশিট জমা দেন। এরপর থেকে শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। বিকাশ দেব বলেন, ওই মামলায় মোট ২৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ খোয়াই জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক শঙ্করী দাস পাঁচ জনকে খুনের মামলায় অভিযুক্ত প্রদীপ দেবরায়কে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং ভারতীয় ফৌজদারি দন্ডবিধি ৩০২ ধারায় মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন।এছাড়া ভারতীয় ফৌজদারী দন্ডবিধি ৩০৭ ধারায় তাকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানার রায় দেন বিচারক। পিপি বিকাশ দেব বলেন, তদন্ত চলাকালীন অভিযুক্ত প্রদীপ পাগলের অভিনয় করেছিল। কিন্তু, চিকিত্সকদের সহায়তায় তার অভিনয় ধরা পরে যায়। তাই, বিচার প্রক্রিয়ায় কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে, এক বছরের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হওয়ার জন্য তিনি সকলকে ধন্যবাদ দিয়েছেন।

