আগরতলা, ২১ নভেম্বর (হি. স.) : ত্রিপুরার মানুষের কল্যাণে সরকার বহুমুখী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। এই লক্ষ্যে প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযানে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প এবং পরিষেবার সুযোগ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। আজ বিশ্রামগঞ্জ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে সিপাহীজলা জেলাভিত্তিক সুশাসন মেলা ও লাভার্থী সম্মেলনের উদ্বোধন করে প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযান কর্মসূচি আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। উন্নয়ন কর্মসূচি রূপায়ণ ও সরকারি পরিষেবা প্রদানে স্বচ্ছতা ও সততা নিয়ে সরকার কাজ করছে। জেলাভিত্তিক সুশাসন মেলা ও লাভার্থী সম্মেলনের উদ্বোধনের আগে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বিশ্রামগঞ্জের নবনির্মিত জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কার্যালয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উল্লেখ্য, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কার্যালয়ের দ্বিতল ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য মাতৃশক্তিকে স্বনির্ভর করা। এই লক্ষ্য পূরণে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে কাজ করছে। সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে স্বনির্ভর দলের মাধ্যমে গ্রামীণ ও নগর এলাকার মহিলাদের আত্মনির্ভর করে তোলা।
তাঁর দাবি, ২০১৭-১৮ সালে ত্রিপুরায় স্বসহায়ক দলগুলিতে মহিলাদের সংখ্যা ছিল ৩৯ হাজার ৮২ জন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এখন পর্যন্ত স্বসহায়ক দলগুলিতে মহিলা সদস্যাদের সংখ্যা হয়েছে ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার। এটা প্রমাণ করে গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশ ও মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলার ক্ষেত্রে ত্রিপুরায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। সাথে তিনি যোগ করেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত ত্রিপুরায় স্বসহায়ক দলের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ১৫৩টি। এখন ত্রিপুরায় স্বসহায়ক দলের সংখ্যা হয়েছে ৩৮ হাজার ৬৫৭টি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে স্বসহায়ক দলগুলিকে রিভলভিং ফান্ড দেওয়া হয়েছে ৩২ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা।
তাঁর আরও দাবি, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এখন পর্যন্ত স্বসহায়ক দলগুলিকে রিভলভিং ফান্ডে ৩৪৭ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়াও স্বসহায়ক দলগুলিকে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রেও অনেক সরলীকরণ করা হয়েছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, রাজ্য সরকার দলমত নির্বিশেষে সকল অংশের মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। সরকার কাজে বিশ্বাসী। করোনা অতিমারীকে দৃঢ়তার সাথে মোকাবিলা করে সরকার রাজ্যের উন্নয়নে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে স্বসহায়ক দলের সদস্য ও সদস্যাদের সাথে মতবিনিময় করেন।
মুখ্যমন্ত্রী স্বসহায়ক দলের সদস্য সদস্যাদের মধ্যে নলছড় ব্লকের বাঘমারার স্বপ্ন পাল মজুমদার, কাঁঠালিয়া ব্লকের উত্তর পাহাড়পুরের মিঠু রাণী দাস, বক্সনগর ব্লকের দক্ষিণ কলমচৌরার রীণা সাহা সরকার, চড়িলাম ব্লকের বাঁশতলির কমল দেববর্মা, সোনামুড়া ব্লকের মধুপুরের উত্তম কুমার দত্ত, বিশ্রামগঞ্জের পুষ্পা দেবনাথ ও বিশালগড় ব্লকের গোলাঘাটির নিভা দাসের সাথে কথা বলে তাদের স্বনির্ভর হয়ে উঠার কাহিনী শোনেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সিপাহীজলা জেলার ৬৪টি স্বসহায়ক দলের সদস্যদের হাতে ১ কোটি ৩৯ লক্ষ ৭ হাজার ব্যাঙ্ক ঋণের চেক তুলে দেন। তাছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী ১ জন কৃষকের হাতে পাওয়ারটিলার তুলে দেন।

