সব লড়াই শেষ, না ফেরার দেশে চলে গেলেন ঐন্দ্রিলা শর্মা

হাওড়া, ২০ নভেম্বর (হি.স.) : শেষমেশ জীবনযুদ্ধে হাার মানলেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। একবার নয় দু-দু’বার মারণ রোগ থাবা বসিয়েছিল তাঁর শরীরে। দু’বারই ক্যানসারকে নকআউট করে দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্রেন স্ট্রোক আর হার্ট অ্যাটাকের ছোবলের সঙ্গে বিপুল লড়েও শেষমেশ জেতা হল না অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা বাংলা।

মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হওয়ার পর আত্মীয় ও অনুরাগীদের আশা জন্মাচ্ছিল, হয়তো এই বার চেতনা ফিরবে তাঁর। কিন্তু তারপরই আবার হার্ট অ্যাটাক। একবার নয়, বারবার। হাজার চেষ্টা করেও কোমা থেকে আর কোনওভাবেই ফেরানো গেল না তাঁকে। না ফেরার দেশে চলে গেলেন বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী।

কালার্স বাংলার ‘ঝুমুর’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে বাংলা টেলিভিশনের জগতে নিজের অভিনয় সফর শুরু করেন ঐন্দ্রিলা। স্টার জলসার ‘জীবন জ্যোতি’ ধারাবাহিকেও মুখ্য চরিত্রে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সান বাংলার ‘জিয়ন কাঠি’ ধারাবাহিকে অভিনয় করেন তুলির ভূমিকায়। বহুদিন ধরেই ক্যানসারের সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। একবার নয় দু-দু’বার মারণ রোগ থাবা বসিয়েছে তাঁর শরীরে। দু’বারই ক্যানসারকে হার মানিয়েছেন অভিনেত্রী।

সুস্থ হয়ে ফের কাজ শুরু করেছিলেন ঐন্দ্রিলা। সব্যসাচী ও তাঁর বেশ সুন্দর সময় কাটছিল। কিন্তু ফের ব্রেন স্ট্রোক আবারও সমস্ত হিসেব ওলটপালট করে দিল। পয়লা নভেম্বরের রাতে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন ঐন্দ্রিলা। অভিনেত্রীকে ভরতি করা হয় হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতালে। রাতেই হয় অস্ত্রোপচার। তারপর থেকে ভেন্টিলেশনে ছিলেন অভিনেত্রী। শনিবার রাতে অন্তত ১০ বার হৃদরোগে আক্রান্ত হন। শরীরে লড়াইয়ের আর কোনও শক্তিই যেন অবশিষ্ট ছিল না। মৃত্যুর সঙ্গে তীব্র পাঞ্জা লড়ে চিরবিদায় নিলেন তিনি।

ঐন্দ্রিলার অবস্থা সংকটজনক দেখেও আশায় বুক বেঁধেছিল পরিবার, প্রেমিক। গোটা এই সময়টায় ঐন্দ্রিলার ছায়াসঙ্গী হয়েছিলেন সব্যসাচী চৌধুরী। সেই আশায় ভর করেই সব্যসাচী লিখেছিলেন, ‘নিজের হাতে করে নিয়ে এসেছিলাম, নিজের হাতে ওকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাব। এর অন্যথা কিছু হবে না।’ কিন্তু এই পোস্ট লেখার ১০ দিনের মাথাতেই কি সব্য়সাচী বুঝতে পেরেছিলেন, অন্যথা হতে পারে তাঁর দৃঢ় প্রতিজ্ঞার? প্রথমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভালবাসার মানুষের স্বাস্থ্যের কোনও খবর দেননি, জানাননি কেমন আছে। গতকাল সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সমস্ত পোস্ট মুছে ফেলেন সব্যসাচী। কেবল লিখেছিলেন প্রার্থনা করতে। প্রার্থনা মৃত্যুকে জয় করতে পারে… এই বিশ্বাস ছিল সব্যসাচীর। তা আর হল না। তরুণ অভিনেত্রীর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ টলিউড। কেউ অভিনেত্রীর সঙ্গে কাজ করেছেন, কেউ তাঁকে ছোটপর্দায় দেখেছেন। প্রত্যেকেই শোকাতুর। ঐন্দ্রিলার এভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন না তাঁর অনুরাগীরাও

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *