বাজারিছড়া (অসম), ১৫ নভেম্বর (হি.স.) : পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করিমগঞ্জ জেলান্তর্গত লোয়াইরপোয়া ব্লকের এক হাইস্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে শারীরিক নিগ্রহের শিকার হয়েছেন জনৈক সংবাদকর্মী। বিষয়টি থানা পর্যন্ত গড়িয়েছে। ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে পাথারকান্দি শিক্ষা খণ্ডের অন্তর্গত ঝেরঝেরি ক্লাস্টারের হুসাইনিয়া উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে।
অভিযোগ, বিগত তিন বছর ধরে ওই বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন লাটে উঠেছে। পাঠদানের পাশাপাশি সমস্ত সরকারি মঞ্জুরিকৃত তহবিলের চলছে পুকুরচুরি। বছরের পর বছর ধরে স্কুল ইউনিফর্ম বণ্টনের নামেও চলছে দেদার দুর্নীতি। মিড-ডে মিলের চাল এবং টাকাও আত্মসাত চলছে সমান্তরালভাবে।
এছাড়া, নিয়মিতভাবে দু-একজন শিক্ষক ছাড়া অন্যা শিক্ষকরা স্কুলে পা মাড়ান না বলে বিস্তর অভিযোগ স্থানীয়দের। এমন-কি ছাত্রছাত্রীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার নামে সাড়ে ৫০০ টাকা করে আদায় করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া বিল্ডিং নির্মাণ ও বার্ষিক উন্নয়নের অনুদানের টাকায়ও চলছে হরির লুট। যাবতীয় অভিযোগের মূলে প্রধানশিক্ষক হাবিবুর রহমান। এ সব নিয়ে স্থানীয়রা একাধিকবার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ মায় প্রধানশিক্ষককে নালিশ জানালেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
সমূহ অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার বৈদ্যুতিন ও ছাপা মাধ্যমের পাথারকান্দির সংবাদ প্রতিনিধি জুবায়ের আহমেদ স্কুলে উপস্থিত হয়ে দেখেন একজন শিক্ষক ও চৌকিদার স্কুলের ভিতরে অবস্থান করছেন। এনিয়ে তিনি ছাত্রছাত্রীদের কিছু প্রশ্ন করলে পড়ুয়ারা সত্য কথাই জানিয়ে দেয় সংবাদকর্মীর ক্যামেরার সামনে। ততক্ষণে বিষয়টি চৌকিদার ফোন করে প্রধানশিক্ষককে জানিয়ে দেন। খবর পেয়ে আরও কয়েকজন শিক্ষককে ডেকে নিয়ে সকাল দশটার পর প্রধানশিক্ষক স্কুলে উপস্থিত হয়ে হম্বিতম্বি করে সংবাদ কর্মীকে অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে তাঁর মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে স্কুলের দুর্নীতি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করায় শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করেন বলে অভিযোগ।
এমন-কি তাঁর স্কুলের নামে কোনও সংবাদ ছাপা বা বৈদ্যুতিন মাধ্যমে সম্প্রচারিত হলে তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়। তবে অন্য্ শিক্ষক ও স্কুল পরিচালন সমিতির কর্মকর্তাদের কথায় সংবাদকর্মীর মোবাইল ফোনটি ফেরত দেন প্রধানশিক্ষক।
এ বিষয়ে এদিন বিকালে বাজারিছড়া থানায় সুবিচার চেয়ে লিখিত নালিশ করেন নিগৃহীত সংবাদকর্মী জুবের। পাশাপাশি তিনি বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে অবগত করেছেন প্রেস ক্লাব করিমগঞ্জ সহ পাথারকান্দি বৃহত্তর কর্মরত সাংবাদিক সংস্থার কর্মকর্তাদের।
সংগঠিত ঘটনার তীব্র নিন্দা সহ এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে শাস্তির দাবি জানান জেলার কর্তব্যটরত সংবাদ কর্মীরা। পাশাপাশি তাঁরা স্কুলে সংঘটিত সমূহ দুর্নীতির প্রশাসনিক তদন্তের দাবিও জানান। এদিকে এ ঘটনায় পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা গ্রহণ করলেও এই খবর লেখা পর্যন্ত তদন্তে নামার কোনও খবর পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত স্কুলের প্রধানশিক্ষকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই তাঁর প্রতিক্রিয়াও জানা যায়নি।