নয়াদিল্লি, ৪ নভেম্বর (হি.স.): দিল্লিতে বায়ুদূষণ অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট কমিশন জাতীয় রাজধানী এবং সংলগ্ন অঞ্চলে চার চাকার ডিজেল চালিত হালকা যানবাহনের চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। তবে বিএস-ভিএই এবং জরুরী পরিষেবার গাড়িগুলি এই আদেশের বাইরে থাকবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ট্রাক চলাচলে লাগাম পরিয়েছে দিল্লি সরকার। এক মাত্র জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ট্রাকই চলবে রাজধানীর রাস্তায়।
পরিবহন দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পণ্যবাহী ট্রাক যাতে শহরে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য দিল্লিতে ঢোকার সব ক’টি রাস্তায় ১২০টি পর্যবেক্ষক দল মোতায়েন থাকবে। এদিকে, মাত্রাছাড়া দূষণের কারণেই নয়ডার সব স্কুল বন্ধ করা হয়েছে। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ভাবে ক্লাস হবে অনলাইনে। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদেরও অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার উপরেই জোর দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছেন গৌতম বুদ্ধ নগরের ডিস্ট্রিক্ট ইনস্পেক্টর অব স্কুল ধর্মবীর সিং। দিল্লিতে শনিবার থেকে বন্ধ থাকছে সমস্ত প্রাথমিক স্কুল।
দিল্লি-এনসিআর-এ বায়ুর গুণমান খারাপ হওয়ার প্রেক্ষিতে চার স্তরীয় ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ‘দ্য কমিশন অফ এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট’। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, দিল্লি-এনসিআর-এ নিষিদ্ধ করা হচ্ছে পুরনো ইঞ্জিনের ডিজেল গাড়ির ব্যবহার। শুধু মাত্র বিএস-৬ ইঞ্জিন যুক্ত এবং জরুরি পরিষেবাতে থাকা যানবাহন এই নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় পাবে। প্রশাসনের তরফে বৈদ্যুতিক এবং সিএনজি চালিত ট্রাক ছাড়া অন্য ট্রাকের দিল্লিতে প্রবেশ করার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে এই নিয়ম থেকে ছাড় দেওয়া হবে ওষুধের মতো অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বহনকারী ট্রাকগুলিকে। দিল্লি-এনসিআর হাইওয়ে, উড়ালপুল, ওভারব্রিজ, পাইপলাইন নির্মাণ এবং ধ্বংসের কাজও আপাতত স্থগিত রাখা হবে। একই সঙ্গে বিশুদ্ধ জ্বালানি নিয়ে কাজ করছে না এ রকম কলকারাখানাগুলিকেও কাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র দুধ বা দুগ্ধজাত দ্রব্যের শিল্প এবং জীবনদায়ী চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক কারখানাগুলি এই বিধিনিষেধ থেকে ছাড় পাবে। দিল্লিতে এক দিন অন্তর জোড়-বিজোড় নম্বর প্লেটযুক্ত গাড়ির রাস্তায় নামার যে নিয়ম চালু ছিল তা আরও কড়া ভাবে মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার সকাল ৬টায় দিল্লিতে বায়ুর গুণমান সূচক (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স)-এর মাত্রা ৪৫৩। এই মাত্রা ৩০০-র বেশি হলে তা বিপজ্জনক বলে ধরা হয়। সেখানে দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরীতে এই সূচকের মাত্রা ৪৮৫। বিমানবন্দরের আশপাশে এই সূচক ৪৫৩। নয়ডাতে এই সূচকের মাত্রা ৫৬২ আর গুরুগ্রামে ৫৩৯।