দুর্গাপুর, ২৪ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : গুনগত মান ভাল, চাহিদা প্রচুর। লক্ষ্য মুনাফা বৃদ্ধি। আর তাই উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত কোল ইন্ডিয়ার লাভজনক প্রজেক্ট ইসিএলের শোনপুরবাজারি প্রজেক্টের সম্প্রসারন শুরু হল। এই প্রজেক্টে বছরে ১৫ মিলিয়ন টন কয়লা উৎপাদন হবে বলে দাবী কয়লা উত্তোলক সংস্থার। তেমনই সম্প্রসারণের ফলে আগামী দশ বছরে অস্তিত্ব সঙ্কটে আশঙ্কায় খনি অঞ্চলের দুই ঐতিহ্যবাহী গ্রাম্য বাজার।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৬ সালে পান্ডবেশ্বরের শোনপুর বাজারি প্রজেক্টের কাজ শুরু হয়। মুলত খোলামুখ কয়লাখনি শোনপুর বাজারী প্রজেক্ট। ওইসময় পাঞ্জাবী ডাঙ্গা হাঁসত্ডিহা, শোনপুর সহ ১০ টি গ্রামের জমহ অধিগ্রহণ হয়। ইসিএলের সব থেকে লাভজনক প্রজেক্ট শোনপুরবাজারি। ১৯৯০-৯১ সালে ওই প্রজেক্টের কয়লা উত্তোলন শুরু হয়। ১৯৯৫ সালে যার উৎপাদন ক্ষমতা ৩.৪ মিলিয়ন টন। পরবর্তী কালে ২০১২ সালে আগষ্ট মাসে ৪ মিলিয়ন টন উৎপাদন ক্ষমতার ছাড়পত্র পায়। শোনপুবাজারি প্রজেক্টের কয়লা এনটিপিসি ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তাপবিদ্যুত কেন্দ্রে জোগান হয়। এখানে উন্নতমানে জি-ফোর গ্রেডের কয়লা উৎপাদন হয়। যার গুনগতমান খুবই ভাল। তাই প্রজেক্টের উৎপাদন ভাল হওয়ায় লাভজনক। ২০২১ সালে প্রজেক্টের বছরে ১২ মিলিয়ন টন কয়লা উৎপাদনের ছাড়পত্র পায়। এখন পর্যন্ত ওই প্রজেক্টের দরুন ২০৬৯ পরিবার পুনরবাসিত হয়েছে ও ক্ষতিপূরণ পেয়েছে। সেইমত কয়লা উত্তোলন শুরু হয়। গত অর্থ বছরে ওই প্রজেক্টে ২৪৫০ কোটি টাকা মুনাফা দিয়েছে। আর তাই উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সম্প্রসারণ কাজ শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি বছরে ১৫ মিলিয়ন টন কয়লা উৎপাদনের জন্য পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্র চাওয়া হয়েছে। শোনপুর বাজারি মোট জমির প্রয়োজন ৪৬৮১ হেক্টর জমি। তার মধ্যে ২৮৩৪.৩১ হেক্টর জমি অধিগ্রহন হয়েছে। বাকি রয়েছে ১৮৪৭ হেক্টর। জানা গেছে, শোনপুর আগামী ২০২৫ সাল পর্যন্ত ভাটমুড়া, মধুডাঙা, বাজারী গ্রাম সহ ১০ গ্রাম অধিগ্রহণের কাজ চলছে। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ১৫৪৬ টি পরিবার। আগামী ২০২৯ সাল পর্যন্ত অন্ডাল উখড়া রেলপার সফিক নগর থেকে পান্ডবেশ্বর হরিপুর পর্যন্ত জমি অধিগ্রহণ হবে। তার দরুন নবগ্রাম, শঙ্করপুর, শীতলপুর, বনবহাল পাহাড়ীগ্রাম অধিগ্রহণ হবে। তার ফলে ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাজার উখড়া ও হরিপুর বাজার অস্তিত্ব সঙ্কটে আশঙ্কায় রয়েছে এলাকাবাসী। খোলামুখ খনি তৈরীর ফলে সেখানের উত্তোলন করা মাটি পাথরের পাহড় তৈরী হবে একেবারে বাজার লাগোয়া। বন্ধ হতে পারে একাধিক সড়ক। শোনপুরবাজারী প্রজেক্টের জিএম আনন্দমোহন জানান,” গুনগত মান ভাল, তাই চাহিদা প্রচুর। লাভজনক প্রজেক্ট। তাই সম্প্রসারণ জরুরী। কয়লা মজুত যা রয়েছে, তাতে এখনও ৩০ বছর পর্যন্ত কয়লা উত্তোলন করা যাবে। গত অর্থবছরে ৭১.৭২ কিউবিক মিটারে ১২ মিলিয়ন টন কয়লা উৎপাদন হয়েছে। আধুনিকমানের মেশিনের ব্যাবহার হয়। সম্প্রতি ১৫ মিলিয়ন টন উত্তোলনের লক্ষ্যে পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্র চাওয়া হয়েছে। ছাড়পত্র পাওয়া গেলে কয়লা উত্তোলন শুরু হবে।”