আগরতলা, ২১ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : ত্রিপুরার তপশিলি জাতিভুক্ত মানুষের সামনে উন্নয়নের পথ এখন প্রশস্ত হয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের প্রকল্প ও পরিষেবার সুযোগ গ্রহণ করে এই সম্প্রদায়ের মানুষদের উন্নয়নের শিখরে পৌঁছতে সচেষ্ট হতে হবে। আজ আগরতলা টাউনহলে তপশিলি জাতি সমবায় উন্নয়ন নিগম লিমিটেডের উদ্যোগে আয়োজিত মেগা ঋণ বিতরণ শিবিরের উদ্বোধন করে একথা বলেন তপশিলি জাতি কল্যাণমন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস।
এদিন শিবিরে ৩৯৬ জনকে মাছ, ৬২ জনকে শুকনো মাছ, ৬ জনকে অটোরিক্সা এবং ২ জনকে ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য মোট ৮৬ লক্ষ ৪ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়। সুবিধাভোগীদের তাদের ঋণের টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে অতিথিগণ প্রতীকি হিসেবে কয়েকজন ঋণ প্রাপকের হাতে চেক তুলে দেন। ত্রিপুরার তপশিলি জাতিভুক্ত সুবিধাভোগীরা মেগা ঋণ বিতরণ শিবিরে অংশগ্রহণ করেন।
আজ তপশিলি জাতি কল্যাণমন্ত্রী ভগবান চন্দ্র দাস আরও বলেন, ত্রিপুরায় ৩৪টি তপশিলি জাতিভুক্ত সম্প্রদায় রয়েছে। বিগত সরকারগুলির আমলে তাদের অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ করে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল। যার ফলে এই সমাজের মানুষ প্রায় সকল ক্ষেত্রে আজও অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকার নতুন দিশা ও মানসিকতা নিয়ে এই সমাজের বিকাশে কাজ করে চলেছে।
তাঁর দাবি, তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তর থেকে এই অংশের মানুষের উন্নয়নে কি কি সুবিধা রয়েছে তা জানানোর জন্য লিফলেট, হ্যান্ডবিল ইত্যাদির মাধ্যমে সচেতন করা হচ্ছে যাতে মানুষ তাদের সুযোগ সুবিধা এবং অধিকার সম্পর্কে সজাগ হতে পারে। এই সম্প্রদায়ের মানুষের উন্নয়নে দপ্তর শিক্ষাক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। এখন দপ্তর থেকে প্রাথমিক থেকে পেশাদারি শিক্ষা লাভের জন্য সর্বোচ্চ ৪ লক্ষ টাকা শিক্ষা ঋণ দেওয়া হয়। বৃত্তি পাওয়া থেকে কেউ যাতে বাদ না পড়ে তারজন্য অনলাইন ব্যবস্থা করা হয়েছে। হোস্টেলের সংস্কার করার পাশাপাশি আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে। ফলে ছাত্রছাত্রীরা হোস্টেলে থেকে উন্নত শিক্ষা গ্রহণে উৎসাহী হচ্ছে।সাথে তিনি যোগ করেন, এই সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীদের আগরতলাতেই ইউপিএসসি পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোচিং করানোর প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য দপ্তর উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি তপশিলি জাতিভুক্তদের উন্নয়নে দপ্তর কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বলেন, ১২টি বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে রাজ্যের তপশিলি জাতিভুক্ত মানুষের কল্যাণে পরিকল্পনা নেওয়ার জন্য দপ্তর থেকে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।
তাঁর কথায়, ত্রিপুরায় ৬ হাজার মাছ ও শুকনো মাছ বিক্রেতাকে ভর্তুকিতে ১০ হাজার টাকা ঋণ, কর্মসংস্থানের জন্য ৬ হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে ১০ হাজার টাকা অফেরৎযোগ্য সহায়তা, মহিলাদের সেলাই মেশিন, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ওজন পরিমাপ যন্ত্র, হকারদের বাইসাইকেল দেওয়া হবে। এছাড়াও তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের বরাদ্দকৃত অর্থে প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন তপশিলি জাতি অধ্যুষিত গ্রামে নির্দিষ্ট সংখ্যক মহিলাদের ৫০টি করে হাঁস দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, আগামীদিনে রাজ্যে একটি আম্বেদকর নলেজ সেন্টার, বি আর আম্বেদকরের মূর্তি বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।