অশোক সেনগুপ্ত
কলকাতা, ৭ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বুধবার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় একই সঙ্গে তাঁর কাছে এদিন এক্সটেনশন ও রিএমপ্লয়মেন্ট বন্ধের দাবি করল ওয়েস্ট বেঙ্গল গভর্ণমেন্ট পেনশনার্স অ্যান্ড সিনিয়র সিটিজেন্স ফোরাম।
এদিন এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সমীর রঞ্জন মজুমদার লেটারহেড প্যাডে মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো আবেদনে লেখেন, “অত্যন্ত ক্ষোভ ও পরিতাপের বিষয় এই যে দীর্ঘদিন যাবত আমরা লক্ষ্য করছি রাজ্য কর্মচারীদের একটা অংশ এবং আমলারা অবসর গ্রহণের পরেও প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে রিএমপ্লয়মেন্ট ও এক্সটেনশন নিয়ে বছরের পর বছর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কোটি কোটি বেকারের রাজত্বে অপরিহার্যের অজুহাতে এক শ্রেণীর কর্মচারী ও অফিসারদের পাইয়ে দেওয়ার যে বন্দোবস্ত আছে তা এককথায় রীতি বিরুদ্ধ ও অনৈতিক বলেই আমরা মনে করি।“
এই রিএমপ্লয়মেন্ট ও এক্সটেনশন অবিলম্বে বন্ধ করার পাশাপাশি রাজ্য প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে কয়েক লক্ষ শূন্য পদ অবিলম্বে পূরণ করার দাবি জানাচ্ছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আমরা আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।“
রাজ্য কোঅর্ডিনেশন কমিটির সম্পাদক বিজয় কুমার সিংহ এই প্রতিবেদককে বলেন, “১১ বছর ধরে উনি (মুখ্যমন্ত্রী) এ সব বোঝেননি? অযোগ্য, অনুত্তীর্ণরা শিক্ষককতা করছেন। আর পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা দিনের পর দিন সুবিচারের আশায় ধর্ণা দিচ্ছেন। উনি সব জানতেন। তদন্ত-হইচই হওয়ায় এখন উনি ফাঁপড়ে পড়েছেন। হঠাৎ বুঝি বোধোদয় হয়েছে! সব আইওয়াশ!“
অপর একটি সরকারি কর্মী সংগঠনের এক নেতা বলেন, “উনি নিজেই তো ইচ্ছেমত নিয়োগ করেন। অন্তত দু’ডজন আমলা আছেন, যাঁরা অবসরের পর বছরের পর বছর সরকারে কাজ করে যাচ্ছেন। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহাল রেখেছেন, কোন আবশ্যিকতায়? অনেক অভাবী ঘরের অসহায়রা চাজের জন্য মাথা কুটে মরছেন। অথচ, আলাপনের অতি মধ্য মেধার ভ্রাতৃবধূকে উচ্চ পদে, মোটা বেতনের সরকারি কাজ পাইয়ে দেওয়া হল। গত ক’বছরে মাননীয়ার খেয়ালখুশিমত কাজ পেয়েছেন, সেই তালিকা অতি দীর্ঘ। কেবল মুখে ভাষণ। আর সেগুলোর প্রচারে ব্যস্ত সংবাদমাধ্যমের একটা অংশ।“
প্রসঙ্গত, রাজ্যের শিক্ষা দফতর-সহ একাধিক ক্ষেত্রে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। সেই আবহে এবার মন্ত্রীদের সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার নবান্ন সভাঘরে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে এই বার্তা দেন তিনি।