কলকাতা, ৩১ আগস্ট (হি. স.) : মিশায়েল গর্বাচেভ মঙ্গলবার রাতে মস্কোর একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। বুধবার তাঁর সঙ্গে তোলা ছবি-সহ নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন লিখলেন “হে বন্ধু বিদায়!“ এই সঙ্গে, বিতর্কে তসলিমা সওয়াল করলেন গর্বাচেভের হয়ে।
তাস ও আরআইএ নোভোস্তি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, গর্বাচেভ দীর্ঘ দিন ধরে রোগে ভুগছিলেন। মস্কোর নোভোদেভিচি সমাধিক্ষেত্রে তাঁর স্ত্রী রাইসার পাশে তাঁকে সমাহিত করা হচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যমে ঢাকার মুশফিকার রহমান রুদ্র লিখেছেন, “একজন সর্বোচ্চ নেতা যে কতটা চরম বিশ্বাসঘাতক হতে পারে আর শত্রুর চর হয়ে কাজ করে সারা বিশ্বের সর্বনাশ করতে পারে – গর্ভাচেভ তার প্রকৃষ্ট প্রতিমূর্তি। এরকম মানুষ পৃথিবীতে আর যেন না জন্মায়…”।
পাল্টা তসলিমা লিখেছেন, “এসব কী বলছো? তিনি দীর্ঘ বছরের ঠান্ডা যুদ্ধের সমাপ্তি টেনেছিলেন। ওই ঠাণ্ডা যুদ্ধটি পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যেতে পারতো। ওই আশঙ্কা কিন্তু ছিল। সোভিয়েতের মানুষ আর চাইছিল না স্বাধীনতাহীনতায় বেঁচে থাকা, তারা বদ্ধ ঘর থেকে খোলা হাওয়ায় যাওয়ার জন্য ছটফট করছিল। সাধারণ মানুষের স্বচ্ছলতা ছিল না, ভ্রমণের অধিকার ছিল না, বাক স্বাধীনতা বলতে কিছু ছিল না, এর মধ্যে ছিল মুখ খুললেই, মাথা তুললেই, কেজিবির অত্যাচার, গুলাগের মতো ভয়ঙ্কর শাস্তি। সমাজতন্ত্রের আদর্শ চমৎকার। কিন্তু সেটি সমাজে কাজে লাগানো দুরূহ, কারণ সব মানুষ এক নয়, সব মানুষ নিজের উপার্জনে অন্যের ভাগ বসানো চায় না, সবাই উদার হতে পারে না। অধিকাংশ মানুষ তাদের শ্রমের জন্য, বুদ্ধিমত্তার জন্য রিওয়ার্ড চায়। কেউ কিছুই করবে না, বসে বসে ভাতা খাবে, এও আর মেনে নিতে পারছিল না সমাজতান্ত্রিক দেশের জনগণ। যে দেয়াল নড়বড় করছিল, ঘুণে ধরেছিল যে দেয়ালে, যে দেয়ালটি আজ না হোক কাল ভাঙত, সেই দেয়ালটিকে তিনি অফিসিয়ালি ভেঙেছিলেন। এই যা।”